অযোধ্যা মামলায় মধ্যস্থতাকারীদের থেকে রিপোর্ট তলব সুপ্রিম কোর্টের

অযোধ্যা মামলায় মধ্যস্থতাকারীদের থেকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট তলব করল সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতাকারীদের কাজ শেষ হয়েছে বলে যদি তাঁরা দাবি করে তবে আগামী ২৫ জুলাই ফের শুনানি শীর্ষ আদালতে। এর আগে অযোধ্যা সমস্যার সমাধানের জন্যে একটি মধ্যস্থতা প্যানেল নিয়োগ করে সুপ্রিম কোর্ট। যাঁদের শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয় অযোধ্যা সংক্রান্ত গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে আলোচনার মাধ্যমে জট কাটানোর চেষ্টা করার জন্যে। এবার সেই মধ্যস্থতাকারীদেরই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিল অযোধ্যার জমি জট কাটানোর জন্যে তাঁরা কতদূর কি এগিয়েছেন সে সম্বন্ধে বিস্তারিত রিপোর্ট আগামী সপ্তাহের মধ্যে আদালতের কাছে জমা দিতে। আর যদি দেখা যায়, এ ব্যাপারে তাঁদের কাজ শেষ হয়েছে বলে জানায় মধ্যস্থতাকারী প্যানেল, তবে আগামী ২৫ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
“আমরা ওই মধ্যস্থতাকারী কমিটির প্রধানকে এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি।আগামী সপ্তাহে ওই রিপোর্ট হাতে এলেই আমরা পরবর্তী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।পাশাপাশি আমাদের এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে যে মধ্যস্থতাকারীদের কাজ শেষ হয়েছে কিনা। যদি তা হয় তাহলে আগামী ২৫ জুলাই আমরা অযোধ্যা জমি সংক্রান্ত মামলার শুনানি শুরু করব”,বলেন সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষ থেকে জানান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এফএম কালিফুল্লার নেতৃত্বে ওই মধ্যস্থতা কমিটিকে অযোধ্যা জমি সংক্রান্ত জট কাটাতে নিয়োগ করে শীর্ষ আদালত।সুপ্রিম কোর্টকে এর আগে ওই মধ্যস্থতাকমিটি জানায় এ নিয়ে দলগুলির মধ্যে যথেষ্ট ঐক্যমতের অভাব রয়েছে।
ষষ্ঠদশ শতকের তৈরি বাবরি মসজিদটিকে ১৯৯২ সালে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন কিছু হিন্দুত্ববাদীরা যাঁরা বিশ্বাস করেন যে ওই অঞ্চলে ভগবান রামের জন্মস্থানকে চিহ্নিত করে আগে একটি প্রাচীন মন্দির ছিল যা ধ্বংস করেই সেখানে মসজিদটি তৈরি হয়।তবে বাবরি মসজিদ ভেঙে দেওয়ার পরেই দেশজুড়ে প্রবল ধর্মীয় হিংসা দানা বাঁধে, মৃত্যু হয় প্রায় হাজার দুয়েক মানুষের।
২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ১৪ টি আবেদন জমা পড়ে। এর আগে এলাহাবাদ হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় যে , অযোধ্যার ২.৭৭ একর জমি তিনটি দল সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহি আখড়া ও রাম লাল্লার মধ্যে সমানভাবে ভাগ করা হবে।
উত্তর প্রদেশ সরকারের মতো আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে আপত্তি সত্ত্বেও এই জমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে মধ্যস্থতাকারী প্যানেল নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড আর নির্মোহী আখারা ছাড়া আর সকলেই এই মধ্যস্থতার বিরুদ্ধে মত দেয়। কিন্তু বিচারকরা জানান যে তাঁরা মনে করছেন যে এই মধ্যস্থতা “সম্পর্ক নিরাময়”-এ সাহায্য করতে পারে।
“এটা শুধু সম্পত্তি বা জমি সংক্রান্ত বিবাদ নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মানুষের আবেগ, হৃদয় ও ভাল থাকাও”,বলে শীর্ষ আদালত।

No comments

Powered by Blogger.