রেমিটেন্স ১৬শ’ কোটি ডলার ছাড়ালো

বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এক সপ্তাহ বাকি থাকতেই রেমিটেন্স ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার (১৬ বিলিয়ন) ছাড়িয়েছে। দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনোই এক অর্থবছরে ১৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স আসেনি। এর আগে ২০১৪-১৫  অর্থবছরে ১৫.৩২ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। যা ছিল এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, বিদায়ী অর্থবছরের শেষ মাস জুনের ২১ দিনের রেমিটেন্সের তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, এই ২১ দিনে ৯৭ কোটি ২৯ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে বাংলাদেশে। অর্থবছরের ১১ মাসে অর্থাৎ জুলাই-মে সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৫০৫ কোটি ৯০ লাখ (১৫.০৫ বিলিয়ন) ডলার। সবমিলিয়ে ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১১ মাস ২১ দিনে ১ হাজার ৬০৩ কোটি ২০ লাখ ডলার (১৬.০৩ বিলিয়ন) রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
অর্থবছরের বাকি এক সপ্তাহে আরও ২৫ থেকে ৩০ কোটি ডলার রেমিটেন্স আসবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আর তাতে এবার রেমিটেন্স ১৬.৩০ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকবে। রোজা ও ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা দেশে বেশি অর্থ পাঠানোয় মে মাসে ১৭৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে বাংলাদেশে; যা ছিল মাসের হিসাবে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) রেমিটেন্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০.৭৫ শতাংশ। অর্থবছর শেষেও প্রবৃদ্ধি এমনটাই থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ১৭ লাখ (১৪.৯৮ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা। ওই অঙ্ক ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে ১৭.৩২ শতাংশ বেশি ছিল।
বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হল বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্স। বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। জিডিপিতে তাদের পাঠানো অর্থের অবদান ১২ শতাংশের মত।
রেমিটেন্স বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়নও (রিজার্ভ) সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। গত রোববার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২.০২ বিলিয়ন ডলার।
গত ৭ই মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের ১২৪ কোটি ১০ লাখ ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে আসে। তা ফের ৩২ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করেছে মূলত রেমিটেন্স বাড়ার কারণে। স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

No comments

Powered by Blogger.