আলোয় আলোয় পর্যটন

২০০৬ সালে আমার একটি পর্যটনবিষয়ক বই ছাপা হয়েছিল, যার শিরোনাম ছিল আলো-আঁধারে বাংলাদেশের পর্যটন। সে সময় বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রীসহ অন্যরা বইটির ব্যাপক প্রশংসার পাশাপাশি আশা প্রকাশ করেছিলেন যে একদিন পর্যটনের এই অমানিশা কেটে আলোয় ভরে উঠবে দেশের পর্যটনশিল্প এবং তখন আমার পরবর্তী বইয়ের শিরোনাম হবে আলোয় আলোয় বাংলাদেশের পর্যটন। কথাগুলো বলছি এ কারণে যে দুই-তিন মাস ধরে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা ধরনের কথাবার্তা উচ্চারিত হচ্ছে। কি টিভি টক শো, কি সরকাির বিভিন্ন পর্যটন-সংক্রান্ত সভা, কি পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি—সর্বত্রই এখন পর্যটনশিল্পের জয়জয়কার। স্বাধীনতার পর গত ৪৩ বছরে যে পর্যটনশিল্প ছিল সব সরকারের প্রায়োরিটি লিস্টের নিচে, তা হঠাৎ এত গুরুত্ব পেল—এ সত্যিই আনন্দের। বিশেষ করে আমরা—যারা এ শিল্পের মাঠপর্যায়ের নির্মাণশ্রমিক—তাদের তো আনন্দ হওয়ারই কথা। আমরা বারবার শুনে এসেছি যে বিগত কোনো সরকারই পর্যটনশিল্পের ব্যাপারে আগ্রহী ছিল না। কিংবা অন্যভাবে বলা যায়, পর্যটনশিল্পের ব্যাপারে তাদের ধারণাটাই ছিল নেতিবাচক। ১৯৯২ সালে বিএনপি সরকারের আমলে প্রথম পর্যটন নীতিমালা প্রণীত হয়েছিল, এরই আলোকে একটি ন্যাশনাল টুরিজম কাউন্সিল হয়েছিল, যার প্রধান হচ্ছেন স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এর প্রায় নয় বছর পর ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এই কাউন্সিলের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরও প্রায় নয় বছর পর ২০১০ সালে এই কাউন্সিলের দ্বিতীয় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সে বিবেচনায় ২০১৯ সালে তৃতীয় সভাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
সুতরাং সরকারের সূিচতে পর্যটনশিল্পের কোথায় অবস্থান। কিন্তু হঠাৎই এ বছরের শুরুতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পর্যটনবিষয়ক বিভিন্ন সরকাির সংস্থার আমন্ত্রণে সভায় যোগদানের ডাক পড়ে। সেখানেই প্রথম জানতে পারি, বর্তমান সরকার এবারের অর্থবছরে পর্যটনশিল্পকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এবারের জাতীয় বাজেটে অর্থমন্ত্রী পর্যটনশিল্পের ওপর একটি বিশেষ পরিপত্র উপস্থাপন করবেন। এর জন্য পর্যটন-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পর্যটন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের এসব জরুির বৈঠক। এর মধ্যে সবচেয়ে চমকপ্রদ খবর হচ্ছে, ৮ মে প্রধানমন্ত্রী বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে অফিস এবং সভা করে দেশের পর্যটনশিল্পকে গতিশীল করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া ১০ মে এফবিসিসিআই ও এনটিভির যৌথ উদ্যোগে সরাসরি অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবারও এ বছরের বাজেটে পর্যটনশিল্পের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া এবং বাজেট বরাদ্দের ঘোষণা দেন। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, পর্যটনশিল্পের ওপরে সরকারের নজর পড়েছে। আমরা, বেসরকারি পর্যটন সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়, পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরে আমাদের প্রস্তাবগুলো পেশ করেছি। পাঠকদের সুবিধার্থে দু-তিনটি প্রস্তাব উল্লেখ করতে চাই: প্রথমত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক (নথি নং জারাবো/আঃ অঃ বি/কর-৭/০২/২০১১(অংশ-১/১৫০) ২৮/০৭/২০১১ তারিখের আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ৫২(Q) ধারার আদেশটি বাংলাদেশের বিকাশমান পর্যটনশিল্পের উন্নয়ন এবং বিকাশের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক বিধায় তা রহিত করার জন্য অনুরোধ করছি। কারণ, একজন টুর অপারেটর কোনো ভ্রমণ পরিচালনার জন্য

No comments

Powered by Blogger.