ব্যালটই যায়নি ১২ প্রদেশে

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গতকাল সরকারবিরোধী
একজন বিক্ষোভকারী প্রতিপক্ষের বিক্ষোভকারীদের
(ছবিতে নেই) দিকে পিস্তল তাক করে
এভাবে অবস্থান নেন। ছবি: এএফপি
থাইল্যান্ডে আজ রোববার নির্বাচন। বিতর্কিত এই নির্বাচন সামনে রেখে রাজধানী ব্যাংককে সরকারবিরোধী ও সরকারপন্থীদের মধ্যে গতকাল শনিবার সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। নির্বাচন ভন্ডুল করতে বিরোধীরা গতকাল থেকে ‘চূড়ান্ত’ বিক্ষোভ শুরু করেছেন। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে রাজধানী ব্যাংককের বেশ কয়েকটি এলাকা ছাড়াও কয়েকটি প্রদেশে ব্যালট পেপার পাঠানো সম্ভব হয়নি।
রাজধানীতে ব্যালট পেপার মজুদ ছিল—বিরোধীরা গতকাল এমন কয়েকটি ভবন ঘেরাও করলে সরকারপন্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার নেতৃত্বাধীন পুয়ে থাই পার্টির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রাজধানীর লক্ষ্মী এলাকায় গতকাল ঘটে গুলির ঘটনা। তবে কারা গুলি চালিয়েছে ও কতজন আহত হয়েছেন—এ সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কিছু জানা যায়নি। প্রধান বিরোধী ডেমোক্র্যাট পার্টি এই নির্বাচন বর্জন করেছে। নির্বাচন বানচালের চূড়ান্ত চেষ্টা চালাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কা সত্ত্বেও সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অনড় রয়েছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংস্কারের স্বার্থে ইংলাকের পদত্যাগের দাবিতে চলা এই গণ-আন্দোলনের নেতা সুথেপ থাগসুবান শান্তিপূর্ণ উপায়ে সড়ক অবরোধের প্রতিশ্রুতি দেন। ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা না দিতে অনুসারীদের প্রতি আহ্বান জানান। তবে গত রোববার আগাম ভোট গ্রহণের আগে সুথেপ একই ধরনের আহ্বান জানালেও তাঁর অনুসারীরা আমলে নেননি। বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে ব্যাংককের ৫০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। শুক্রবার রাতে সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী সুথেপ থাগসুবান বলেন, ‘জনগণ ভোট কেন্দ্র বন্ধ করে দেবে না। তারা শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় রাস্তায় এ নির্বাচন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করবে।
কোনো সহিংসতা নয়, আমরা এমন কিছু করব না, যাতে লোকজন তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন।’ এর পরদিনই ইংলাকপন্থীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল। নির্বাচন কমিশনের সচিব পুছং নাত্রায়ং বলেন, মধ্য, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি প্রায় শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। তবে রাজধানীর কিছু অংশ ও দক্ষিণ থাইল্যান্ডের ১২টি প্রদেশে ব্যালট পেপার পাঠানো সম্ভব হয়নি। কারণ, বিক্ষোভকারীরা এসব এলাকায় ব্যালট পেপার সরবরাহে বাধা দিচ্ছেন। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে ভোট স্থগিতের সব ধরনের প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে কমিশন। কমিশনের সচিব বলেন, ‘আমরা চাই না নির্বাচন ঘিরে রক্তপাত হোক। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণের জন্য সব বাহিনী সহায়তা দেবে। এর পরও সহিংসতা দেখা দিলে, রক্তপাত হলে কী করব?’ তিনি বলেন, ‘আমি প্রার্থনা করি, কাল (আজ) কোনো হানাহানি না হোক, কোনো অভ্যুত্থান না ঘটুক।’ থাইল্যান্ডে বর্তমানে মধ্যবিত্ত ও রাজতন্ত্রের সমর্থক জনগোষ্ঠী এবং ইংলাক ও তাঁর বড় ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার সমর্থক দরিদ্র ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠী মুখোমুখি অবস্থানে। আজকের ভোটকে কেন্দ্র করে আরও সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিবিসি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.