জেনেভা সম্মেলন থেকে খালি হাতে ফিরল উভয় পক্ষ

খালি হাতে ফিরতে হয়েছে সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহীদের। সহিংসতা বন্ধের পথ খুঁজতে আয়োজিত জেনেভা শান্তি সম্মেলন বলার মতো কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে দুই পক্ষ সরাসরি আলোচনায় বসে চলমান সংকট সমাধানের যে প্রত্যাশা জাগিয়েছে, তাকেই একধরনের অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন জাতিসংঘের সিরিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত লাখদার ব্রাহিমি। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে দামেস্ককে চাপ দিতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগে জেনেভায় আলোচনায় বসেন সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহীদের প্রতিনিধিরা। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা আলোচনা গত শুক্রবার শেষ হয়। কিন্তু বলার মতো অগ্রগতি হয়নি। এ জন্য দুই পক্ষই পরস্পরের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। লাখদার ব্রাহিমি গত শুক্রবার জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, জেনেভা আলোচনায় তিনি বেশ কিছু ইতিবাচক দিক দেখছেন। দুই পক্ষই অন্তত ১০টি বিষয়ে আগের চেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে এসেছে। ব্রাহিমি জানান, সিরিয়ার সরকারবিরোধী পক্ষ আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি আবারও আলোচনায় ফিরে আসার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। তবে সরকারি প্রতিনিধিরা দামেস্কের সঙ্গে কথা বলার পর আলোচনায় ফেরার বিষয়ে তাঁদের অবস্থানের কথা জানাতে চেয়েছেন। ব্রাহিমি বলেন, আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। তবে দুই পক্ষই ইতিবাচক মানসিকতা দেখিয়েছে।
ব্রাহিমি দুই পক্ষের কাছাকাছি আসার বিষয়টি উল্লেখ করলেও মূল বিষয়ে কেউ এক ইঞ্চিও ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়নি। সেটি হলো, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ভবিষ্যৎ। জেনেভায় সরকারের প্রতিনিধিরা বারবার বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাশার সাংবিধানিকভাবে তাঁর ক্ষমতার মেয়াদ পূরণ করবেন। আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। আর বিরোধীরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা ছাড়া সিরিয়ার চলমান সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। এমনকি আলোচনায় কোন কোন বিষয় অগ্রাধিকার পাবে, তা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের এক ফাঁকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসের প্রক্রিয়ার ধীরগতির কথা তোলেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে জানানো হয়, সিরিয়ার রাসায়নিক উপাদান দ্রুত লাতাকিয়া বন্দরে পৌঁছে দিতে দামেস্ককে চাপ দিতে লাভরভের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জন কেরি। লাতাকিয়া বন্দর থেকে রাসায়নিক উপাদানগুলো জার্মানিতে নিয়ে ধ্বংস করার কথা। রুশ-মার্কিন মতৈক্যে প্রণীত রূপরেখা অনুযায়ী আগামী ৩০ জুনের মধ্যেই সিরিয়ার সব রাসায়নিক অস্ত্র ও উপাদান দেশটি থেকে নিয়ে ধ্বংস করার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সিরিয়া পর্যাপ্ত গতিতে কাজ করছে না। এ পর্যন্ত সিরিয়ার ঘোষিত রাসায়নিক অস্ত্রের মাত্র চার শতাংশ সরিয়ে নেওয়া বা ধ্বংস করা হয়েছে বলে করেছে ওয়াশিংটন। বিবিসি ও আল-জাজিরা।

No comments

Powered by Blogger.