গণঅভ্যুত্থান দিবসে আলোচনা ॥ বঙ্গবন্ধু তখন তৃতীয় শ্রেণীর নেতা ছিলেন ॥ by এবিএম মূসা

 নানান আয়োজনে পালিত হলো উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান দিবসটি। বাঙালীর স্বাধীনতার প্রথম মাইলফলক হিসেবে পরিচিত এ দিনটিকে ঘিরে আলোচনাসভা, সেমিনার, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়।
গণঅভ্যুত্থানের আলোচনায় প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের জন্ম দেয়া ছাত্রলীগের এখনকার জীর্ণ ও ভয়াবহ দশা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। এখনকার ছাত্রলীগের কর্মকা-ে সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিব্রত হন। বর্তমান ছাত্র সংগঠনগুলোর শাখা এখন গণভবন থেকে তৈরি করে দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান দিবসে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ শেষ হয়ে গেছে। আমরাও তো একসময় ছাত্রলীগ করতাম। এ থেকে উত্তরণ খুবই জরুরী। প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা প্রতিবাদ করুন। আপনারা বলুন- ছাত্রলীগের নামটাকে তোমরা কলঙ্কিত করও না। প্রয়োজনে তোমরা একে ‘হাসিনালীগ’-‘বামলীগ’ নাম দাও।
এবিএম মূসা বলেন, ঐতিহাসিক ৬ দফা ছাত্রদের সূচনা। আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ কর্তৃক সৃষ্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন তৃতীয় শ্রেণীর নেতা ছিলেন। নিজগুণে তিনি এগিয়ে এলেন এবং ছাত্রদের চেষ্টাতেই তিনি প্রথম শ্রেণীর নেতা হলেন। বঙ্গবন্ধু যতটা না উর্বর মস্তিষ্কের নেতা ছিলেন, তার চেয়েও বড় ছিল তাঁর উপর জনতার বিশাল আস্থা।
তিনি বলেন, ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণই হচ্ছে- প্রকৃত স্বাধীনতা দিবস। সত্যিকারের স্বাধীনতা তিনি সে দিনই ঘোষণা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু জনগণের পালস (নাড়িস্পন্দন) বুঝতে পারতেন।
পাঠ্যপুস্তক থেকে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাম বাদ দেয়ার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের প্রাপ্তি হিসেবে আমরা পেয়েছি, ইতিহাস থেকে আমাদের নাম মুছে ফেলা আর নিজের অবহেলা।
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এখনও ১ বছর সময় আছে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশুন। তাদের আকাক্সক্ষার প্রতি দৃষ্টি দিন। তাদের উপলব্ধি করতে শিখুন।
তিনি ছাত্রলীগের অতীত ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে প্রাক্তন-বর্তমান ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক নুরে আলম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, আমার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ বোঝানো যাবে না। যে ছাত্রলীগ দেশের উন্মেষে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে, সে ছাত্রলীগের এখনকার কর্মকা- দেখে বিস্মিত হই। আব্দুর রাজ্জাকরা মরে গিয়ে বেঁচে গেছেন। আমরাও মরতে পারলে বাঁচি।
তিনি সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, বিশ্বজিৎসহ সাম্প্রতিক সময়ে সংগঠিত হত্যাকা-ের দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে ট্রাইব্যুনাল গঠন করুন। আলোচনাসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- গণঅভ্যুত্থানের নেতা মোস্তফা জামাল হায়দার ও খালেদ মোহাম্মদ আলী।

No comments

Powered by Blogger.