ইডেন ছাত্রীকে এসিড নিক্ষেপকারী মনির রাঙামাটিতে গ্রেপ্তার

রাজধানীর ইডেন কলেজের ছাত্রী আঁখিকে এসিড ছুড়ে মারার ঘটনার প্রধান আসামি মনির উদ্দিনকে রাঙামাটির বরকল উপজেলার দুর্গম কুরকুটিছড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আনসার সদস্যরা রাঙামাটির বরকল উপজেলার কুরকুটিছড়া এলাকা থেকে তাকে আটক করে পুলিশে দেন। তবে তাকে গ্রেপ্তারে ঢাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ দল সেখানে গিয়ে দুই দিন ধরে তৎপরতা চালাচ্ছিল বলে জানা যায়। পুলিশ মনিরকে নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মোখলেসুর রহমান গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করে বলেন, 'দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে সব কিছু বলা যাচ্ছে না।'
আনসারের জেলা কমান্ডার এস এম লাভলু রহমান বলেন, 'র‌্যাব ও ডিবির একটি বিশেষ দল কয়েক দিন ধরে ওই এলাকায় অভিযান চালাচ্ছিল কোনো একটি তথ্যের ভিত্তিতে। তারা আমাদেরও সহযোগিতা চায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় কুসুমছড়ি আনসার ক্যাম্পের সদস্যরা কুরকুটিছড়ার রঙ্গু মিয়া চৌধুরীর বাড়ি থেকে মনিরকে আটক করে বরকল থানার এসআই সেলিম রেজার কাছে সোপর্দ করেন।'
বরকল উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুসুমছড়ি আনসার ব্যাটালিয়নের এক সদস্য বলেন, 'গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, অপরিচিত এক ব্যক্তি কুরকুটিছড়ার রঙ্গু মিয়া চৌধুরীর বাড়িতে অবস্থান করছে। ওই ব্যক্তির চেহারার বর্ণনা ও হাতে-পায়ে এসিডে পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন থাকারও খবর পাই। এর ভিত্তিতে আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে আনসার সদস্যের একটি দল কুরকুটিছড়ার এক পাহাড়ের ওই বাড়িতে গিয়ে মনিরকে গ্রেপ্তার করে।'
গত ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর চানখাঁরপুলে কাজী অফিসে এসিড-সন্ত্রাসের শিকার হন ইডেন কলেজের ছাত্রী শারমিন আক্তার আঁখি। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় মনির ও তার বন্ধু মাসুম মিলে আঁখিকে ছুরিকাঘাত করে এবং এসিডে ঝলসে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। আঁখির মুখ ও ডান হাত এসিডে ঝলসে গেছে। তাঁর হাত, পা ও পিঠে ছুরিকাঘাতের মোট পাঁচটি চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ।
মনির উদ্দিনকে গ্রেপ্তারে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার ও র‌্যাবের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
আটককৃত মনির উদ্দিন একটি ওষুধ কম্পানিতে রিপ্রেজেন্টেটিভ পদে চাকরি করে। তার বাবার নাম মৃত আবু তাহের। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরের বুড়ির চর এলাকায় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।
এ বিষয়ে এডিসি মোখলেসুর রহমান বলেন, 'ডিবির দুটি টিম চার দিন ধরে কাজ করেছে মনিরকে গ্রেপ্তারের জন্য। দুর্গম এলাকায় তাকে খুঁজে পাওয়াটাও বেশ কষ্টের ছিল। অবশেষে আমরা সফল হয়েছি।'

No comments

Powered by Blogger.