বরিশালে আনন্দমেলার নামে হাউজিসহ অশ্লীল অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা

জেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসীর প্রবল বিরোধিতাসহ এসএসসি পরীার্থীদের অসুবিধা উপো করে বরিশাল নগরীর উপকণ্ঠে গড়িয়ারপাড় এলাকায় আনন্দ মেলার নামে আয়োজিত হাউজিসহ অশ্লীল ফুর্তি অনুষ্ঠানসহ অপরাপর অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় নাগরিক কাজী রফিকুল ইসলামের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহম্মেদের সমম্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গত মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। সেতু বন্ধন কাবের নামে গড়িয়ারপাড়ে ওই আনন্দ মেলার আয়োজন করা হয়। গত ১০ ডিসেম্বর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো: শামসুদ্দিন ওই মেলার উদ্বোধন করেন। মেলা আয়োজনের শুরু থেকেই বিসিসি কাউন্সিলরসহ স্থানীয় মুসল্লিসহ সাধারণ জনগণ ও  সরকারি দলের লোকজন এর বিরোধিতা করে আসছিলেন। মেলা বন্ধের দাবিতে মেলা শুরুর আগে দুইবার ও মেলা শুরুর পর একবার মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এমনকি সম্প্রতি জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও বিষয়টি নিয়ে খোদ জেলা প্রশাসকও ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেন।

তবে বিএমপির বিমানবন্দর থানার ওসি উচ্চ আদালতের আদেশের কোনো কপি এখন পর্যন্ত হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন। মেলার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক কাজী আবদুল্লাহ আল রাসেল উচ্চ আদালতের ওই আদেশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেছেন, আনন্দ মেলায় কোনো প্রকার অনৈতিক ও অশ্লীলতা প্রদর্শিত হচ্ছে না।

কাজী রফিকুল ইসলাম জানান, জনস্বার্থে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে তিনিসহ চারজন উচ্চ আদালতে ওই রিট আবেদনটি করেছিলেন। অ্যাডভোকেট গোলাম মোহম্মাদ চৌধুরী আলাল ও অ্যাডভোকেট এস এম আতিকুর রহমান আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। হাইকোর্টের আইনজীবীদের সূত্র জানায়, আদালত ওই আনন্দ মেলার যাত্রা, নাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, র‌্যাফল ড্র, ও হাউজিসহ যেসব অনুষ্ঠান চলছে তাতে কোনো ধরনের অশ্লীল ও অনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ড চালানো যাবে না বলে আদেশ দিয়েছেন। ওই আদেশ যাতে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হয় সে জন্য বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার ও মেলার আয়োজকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ দিকে ওই মেলায় চলমান যাত্রানুষ্ঠানের নৃত্যশিল্পীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিকের টাকা দেয়নি আয়োজকেরা। নৃত্যশিল্পীরা মঙ্গলবার বিকেলে কোতোয়ালি থানায় ওই অভিযোগ জানালে পুলিশের হস্তক্ষেপে মেলার আয়োজক কমিটির সাথে সমঝোতা করে তাদের গাড়িভাড়া দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বৃষ্টি নামক এক নৃত্যশিল্পী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন তাদের যে চুক্তিতে আনা হয়েছিল সে চুক্তির প্রাপ্য টাকা পরিশোধ না করে তাদের বরিশাল নগরীর একটি হোটেলে জিম্মি করে রেখে প্রাপ্য টাকা পরিশোধ করা হচ্ছিল না। তবে এ ব্যাপারে আনন্দ মেলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী রাসেল বলেছেন, গত দুই দিন যাত্রাপালায় দর্শক কম হওয়ায় নৃত্যানুষ্ঠান হয়নি। এ কারণে ওই দুই দিন তাদের পারিশ্রমিক দেয়া হয়নি। তবে থাকা খাওয়ার ব্যয় বহন করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, নর্তকীদের অভিযোগ পাওয়ার পর মেলার আয়োজক কমিটির সাথে যোগাযোগ করা হয়। তারা যাতায়াত ভাড়া দিতে রাজি হলে নর্তকীরা নিজ নিজ গন্তব্যে চলে গেছে।

No comments

Powered by Blogger.