মুন্সীগঞ্জে একই দিনে ৭টি লাশ উদ্ধার

মুন্সীগঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার সাতটি লাশ উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে সিরাজদিখান উপজেলা থেকে তিনটি, শ্রীনগর ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলা থেকে দু’টি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তিনটি খুনের ঘটনা হলেও দু’টি আত্মহত্যা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্মকর্তারা। সিরাজদিখান থানা পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় সিরাজদিখান উপজেলার রশুনিয়া ব্রিজের নিচ থেকে ইব্রাহীম (২০) নামে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর কিছু দূরে এক ধানক্ষেত থেকে আরো এক অজ্ঞাত (৪০) যুবকের লাশ উদ্ধার করে। নিহত ইব্রাহীম শ্রীনগর উপজেলার নওপাড়া গ্রামের মো: খোরশেদ আলমের ছেলে। অন্যজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। কে বা কারা এ যুবকদ্বয়কে হত্যা করেছে তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। জানা গেছে, ইব্রাহীম ঢাকার জুরাইনে দারোগা বাড়ি রোডে তার মামা সালাউদ্দিন মিয়ার বাড়িতে থাকতেন। তিনি গ্রিলের কাজ করেন। সিরাজদিখান থানার ওসি মো: মাহাবুবুর রহমান জানান, সকালে রসুনিয়া থেকে দুই যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। তাদের একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম ইব্রাহীম (২০)। সে ঢাকার কদমতলীতে গত ৩১ ডিসেম্বর সংঘটিত আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল হত্যা মামলার আসামি। তবে অপর গুলিবিদ্ধ লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে সে একই মামলার আসামি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ দিকে সিরাজদিখানের শিয়ালদি গ্রামে নিজ বাড়ির সামনে লিচুগাছ থেকে বৃহস্পতিবার সকালে দুই সন্তানের জনক আলামিনের (৩৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বাবার সাথে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। তার বাবার নাম মোকলেছ চকিদার।

অপর দিকে শ্রীনগরের বাড়ৈখালীতে রাস্তার পাশে আরো এক অজ্ঞাত (২৭) যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে শ্রীনগর পুলিশ। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এলাকাবাসী লাশটি দেখে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

শ্রীনগর থানার ওসি মো: মিজানুর রহমান জানান, উপজেলার হাষাড়া-বাড়ৈখালী সড়কের শ্রীধরপুর কড়ইতলায় রাস্তার পাশ থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, একই দিনে সিরাজদিখানে দু’টি গুলিবিদ্ধ লাশ ও শ্রীনগরে একটি গুলিবিদ্ধ লাশ একই ঘাতক গ্রুপের কাজ বলে মনে হচ্ছে।

অপর দিকে একই দিন সকালে গৃহবধূর লাশ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় স্বামী। গৃহবধূর নাম শিরিন আক্তার। বয়স ২০। জানা যায়, টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দীঘিরপাড় ইউনিয়নের সরিষাবন গ্রামের মৃত ফজল মিয়ার ছেলে নূর আলমের স্ত্রী শিরিন আক্তারের বিয়ে হয়। তার বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার নওপাড়া গ্রামে। পারিবারিক কলহের জের ধরে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শিরিন আক্তার নামে এক গৃহবধূ গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। এতে স্বামী নূর আলম ও প্রতিবেশীরা তাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে জরুরি বিভাগের মিনহাজ মিয়া জানান, মৃত ঘোষণার পর শিরিন আক্তারের লাশ হাসপাতালে ফেলে রেখেই তার স্বামী পালিয়ে যায়। তবে তার কয়েকজন প্রতিবেশী হাসপাতালে অবস্থান করছেন।

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার েেতরপাড় গ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হয়ে মো: সাকিল (২৬) নামে এক কৃষক মৃত্যুবরণ করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কৃষক সাকিল উপজেলার েেতরপাড় গ্রামে জালাল শিকদারের ছেলে বলে জানা গেছে।

গ্রামবাসী জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১১ হাজার ভোল্টের লাইন ছিঁড়ে পড়ে ছিল। েেত ধান লাগাতে গিয়ে সাকিল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। লৌহজং থানার পরিদর্শক আবুল কালাম বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শাকিল মারা যাওয়ার কথা শুনেছেন বলে জানিয়েছেন।

বিদেশ যেতে না পেরে অভিমান করে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার হুগলী গ্রামের সোহাগ মোল্লা (৩০) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজ বাড়ির আলুর গোডাউনে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

জানা গেছে, উপজেলার গুগলী গ্রামের মান্নান মোল্লার ছেলে সোহাগ মোল্লা বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিলেও মেডিক্যাল পরীায় অসুস্থতা ধরা পড়লে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এতে অভিমান করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। লৌহজং থানার পরিদর্শক আবুল কালাম যুবকের আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
       

No comments

Powered by Blogger.