গোলটেবিল বৈঠক- নারীর প্রতি সহিংসতা এখনই প্রতিরোধ করুন

১৯ জানুয়ারি ২০১৩, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা এখনই প্রতিরোধ করুন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।
যাঁরা অংশ নিলেন
মেহের আফরোজ চুমকি
সাংসদ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি
আসাদুজ্জামান নূর, সাংসদ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব
সুলতানা কামাল, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
রাশেদা কে চৌধূরী
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
সালমা খান
নারীনেত্রী ও সাবেক চেয়ারম্যান, জাতিসংঘ সিডও কমিটি
আয়শা খানম, সভাপতি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ
এ কে এম নূর-উন-নবী
অধ্যাপক, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মালেকা বেগম
নারীনেত্রী, অধ্যাপক, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
সামন্তলাল সেন
বার্ন ইউনিট প্রধান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ
সারা যাকের, নাট্যব্যক্তিত্ব
ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি
ইউ এম হাবিবুন নেসা, সভানেত্রী, নারীপক্ষ
মনিরা রহমান
নির্বাহী পরিচালক, এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন
বিপাশা হায়াত, নাট্যব্যক্তিত্ব
সঞ্চালক
আব্দুল কাইয়ুম
সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো

আলোচনা
আব্দুল কাইয়ুম: সম্প্রতি নারী নির্যাতন, অ্যাসিড-সন্ত্রাস, অপহরণ, হত্যা অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিনিয়ত সহিংসতা মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে। এভাবে চলতে পারে না। সবার প্রচেষ্টায় একটি সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে না পারলে, বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এখন এ বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করবেন মেহের আফরোজ চুমকি।
মেহের আফরোজ চুমকি: একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনায় সমাজ চিন্তিত। পত্রপত্রিকায় প্রায়ই সহিংসতার খবর দেখা যায়। এটি আমাদের আতঙ্কিত করে তুলছে। সব সময় দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকি, কখন যে কাছের মানুষটিকে হারাতে হয়। আজকে অনেকে উপস্থিত আছেন, যাঁরা এ ব্যাপারে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। কোথায় যেন একটি সমস্যা থেকে যাচ্ছে। গণমাধ্যমের সহায়তায় কিছু সহিংসতার ঘটনা জানতে পারছি। অন্ধকারে থেকে যাচ্ছে আরও অসংখ্য ঘটনা। কেউ আমরা এ অবস্থা মেনে নিতে পারি না। খুব অল্পসংখ্যক মানুষ এ ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে জড়িত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অল্প বয়সী কিছু তরুণ এ জঘন্য অপরাধ করছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নাগরিক সমাজ—সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। অনেক বড় বড় সমস্যা মোকাবিলার ইতিহাস আমাদের আছে। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় নারীর প্রতি সহিংসতাও মোকাবিলা করব।
সালমা খান: প্রতিনিয়ত কী হারে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, সেটা সবাই জানি। তার পরও একটি পরিসংখ্যান দিচ্ছি, গত ১৪ তারিখে প্রথম আলোয় এক দিনে দেশে সাতটি ধর্ষণের খবর এসেছে। এ আলোচনা শুধু গোলটেবিলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। এখন সবাইকে ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। আজকে থেকে সেই সূচনা হতে হবে। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বিশ্বে নতুন কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু ভয়াবহতা হলো, সমাজে এটি মেনে নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হচ্ছে। আমরা ন্যূনতম সহিংসতাকে ঘৃণা করি। তার ওপর এখন শুরু হয়েছে ভয়ংকর সব সহিংসতা। যেমন মেয়েরা গণধর্ষণের শিকার হচ্ছে। অপহূত হচ্ছে। হত্যা করা হচ্ছে। এ সমস্যার গভীরে যেতে হবে। এটা শুধু আইনের ব্যাপার নয়। কোনো সাংসদ কি সংসদে এ বিষয়ে কোনো কথা বলেছেন? নির্যাতন বন্ধ করার কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন? এখানে সমাজ বিকারগ্রস্ত হয়ে গেছে। নীতি-নৈতিকতা লোপ পাচ্ছে। কেউ কোনো দায় নিচ্ছে না। জাতীয় সংসদে অবশ্যই এটা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক নেতাদের এসবের বিরুদ্ধে নিজ এলাকায় গিয়ে কথা বলতে হয়। প্রতিবাদ করতে হয়। মানুষকে বোঝাতে হয়। সংগঠিত করতে হয়। আমাদের দেশের সাংসদেরা কি তা করেন? একটি অন্যায় দিনের পর দিন চলছে তো চলছেই। জানি না, এর শেষ কোথায়। কিন্তু এখনই শেষ হওয়াটা জরুরি।
এ কে এম নূর-উন-নবী: আমি কিছুটা বিপদের মধ্যে আছি। কেননা পুরুষেরাই নির্যাতনগুলো করে। পুরুষ হিসেবে খুবই লজ্জিত। এ লজ্জা থেকে মুক্তি চাই। মালেকা বেগম বলছিলেন, ‘৯৯ শতাংশ পুরুষ স্ত্রীদের বলে থাকেন, টাকা কোথা থেকে আসে, তা তো তুমি জানো না।’ নারীর রোজগার নেই। ক্ষমতায়ন নেই। সে জন্য এ অন্যায় কথা শুনতে হয়। প্রথমে মানুষের আচরণের স্খলন হয়। তারপর এটি অপরাধের দিকে যায়। দেশে আইনের শাসন না থাকলে এগুলো হতে থাকে। অপরাধীরা কোনো না-কোনো পরিবারের সদস্য। পরিবারগুলোতে নৈতিকতার ধস নেমেছে। পরিবারে গণতান্ত্রিক আচরণের চর্চা করতে হবে। রাষ্ট্রে আইনের শাসন দুর্বল হওয়ার কারণে জেল থেকে বেরিয়ে আবার মানুষ হত্যা করছে। ইডেন কলেজের মেয়েটিকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে। ইডেনের মেয়েরাই মানববন্ধন করে যাচ্ছে। অপরাধটি করেছে পুরুষ। নারীর প্রতি সহিংসতার যাবতীয় প্রতিবাদ পুরুষকে করতে হবে। কারণ অপকর্মটি করে পুরুষ। তাই এসব ক্ষেত্রে পুরুষকে সম্পৃক্ত হতে হবে।
আয়শা খানম: এ সময়ের নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলো আমাদের শঙ্কিত করে তুলছে। ১৯৮৪ সালে চার বছরের সোনিয়ার জন্য সবাই আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এখনো বদলায়নি। টক শোগুলোতে মাঝেমধ্যে নারীকে নিয়ে আলোচনা হয়। তখন কোনো কোনো আলোচক বলেন, নিশ্চয়ই ছেলেটির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল। কাপড়ে শালীনতা ছিল না। ধরে নিলাম, ছেলেটির সঙ্গে সম্পর্ক আছে। সম্পর্ক তো থাকবে। সম্পর্ক থাকলে অসুবিধা কোথায়? সম্পর্কের জন্য তাকে ধর্ষণ করতে হবে? হত্যা করতে হবে? মেয়েটি যে কাপড় পরছে, এটি তার কাছে শালীন। এ বিষয়ে অন্যের মন্তব্যটাই অশালীন। এসব সস্তা আলোচনায় মানুষের মধ্যে আরও বিভ্রান্তি তৈরি হয়। যে ব্যক্তি একটি মেয়ের পোশাক নিয়ে আলোচনা করছে, সে মেয়েটির ব্যক্তিগত জীবনে প্রবেশ করছে। এটি একটি জঘন্য অপরাধ। কেন এ রকম ঘটনা ঘটছে? এ বিষয় নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার। আমাদের ছোটবেলায় এ রকম নোংরা রাজনৈতিক কালচার ছিল না। গ্যাং কালচার ছিল না। এটা একটা বর্বরতা। একটি মেয়ে কীভাবে কাপড় পরবে, কীভাবে চলবে, এটা তার নিজস্ব ব্যাপার। সরকারের দায়িত্ব হলো তাকে নিরাপত্তা দেওয়া।
সামন্তলাল সেন: ১৯৮৬ সাল থেকে অ্যাসিডের ভয়াবহতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। দিনের পর দিন দেখে আসছি। একের পর এক ঘটনা ঘটছে। অবস্থার যে খুব বেশি উন্নতি হচ্ছে, সে রকম কিছু দেখতে পাচ্ছি না। এখানে অনেক প্রশ্ন চলে আসে। যেমন অ্যাসিড কোথায় পায়? কীভাবে সঙ্গে নিয়ে ঘোরে? অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ আইন কী করছে ইত্যাদি অনেক কথা বলা যাবে। কিন্তু এসব কথায় কি সমাজের কোনো পরিবর্তন আসবে? কিছু ঘটনায় শিউরে উঠতে হয়। ইডেনের অ্যাসিডদগ্ধ মেয়েটির কথাই বলি। দেখা গেল, মাথার অর্ধেক ও মুখের এক পাশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁকে কোনো ছোট কৌটা দিয়ে অ্যাসিড মারা হয়নি। বড় পাত্রে অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া যে কেউ দোকান থেকে পেথিডিন ইনজেকশন কিনতে পারি না। অ্যাসিডের ক্ষেত্রেও এমন কিছু করা দরকার যে ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কেউ অ্যাসিড কিনতে পারবে না।
মালেকা বেগম: নারী প্রতিনিয়ত সহিংসতার কবলে পড়ছে। নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। অপরিণত বয়সে শেষ হচ্ছে অনেক মেয়ের স্বপ্ন। নারীর প্রতি নির্মম অত্যাচারের অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যাবে। অথচ দেশে প্রায়ই শুনে থাকি, নারী এগিয়েছে, নারী শিক্ষিত হচ্ছে, নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। কোথায় এসব? আর তা-ই যদি হয়, তাহলে কেন মেয়েরা অ্যাসিডদগ্ধ হচ্ছে? গ্যাং (দলগত) ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। নারী নির্যাতনের ঘটনা শুধু দরিদ্র ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যন্ত নারীর প্রতি সহিংসতা হচ্ছে। এসব ঘটনা আমাদের বিচলিত করে, উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত করে। সরকারকে এখনই এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী—সবাই গণমাধ্যমে এ বিষয়ে বিবৃতি দেবেন। কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করবেন। আগে এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে গ্রাম-মহল্লায় পাড়া কমিটি ছিল। এখন আবার সবাইকে নিয়ে এ রকম কমিটি করতে হবে। একটি মেয়ে গ্যাং রেপড হলো। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। সবকিছু দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। কিন্তু চিকিৎসক সাহেব লিখছেন, ‘মে বি রেপড (ধর্ষিত হতে পারে)।’ সবকিছু জানার পরও চিকিৎসকেরা কেন এমন লেখেন। কারণ, আইনজ্ঞরা বলেছেন, প্রমাণিত হওয়ার আগে রেপড বলা যাবে না। এমনকি আসামির নামও বলা যাবে না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর চাপ থাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এগুলো অনেক পুরোনো সমস্যা। আজ বোধ হয় বসে থাকার সময় নেই।
আসাদুজ্জামান নূর: কয়েক দিন আগে নির্বাচনী এলাকায় গিয়েছি। ১০ বছরের একটি মেয়ে। বিয়েবাড়িতে গিয়েছিল। রাতের বেলা বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে। ১৮-১৯ বছরের দুটি ছেলে তার মুখ বেঁধে ধর্ষণ করেছে। আমি তার মাথায় হাত রাখলাম। মেয়েটি আতঙ্কিত হয়ে উঠছে। ভাবতে পারছি না, এই ছোট ছেলেরা কীভাবে ভয়ানক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এখন দেশে প্রায় ১০০টির মতো চ্যানেল (টেলিভিশন) আছে। নানা ধরনের অপসংস্কৃতি দেখছে। সিডি, ভিসিডি থেকে হিংসাত্মক ছবি দেখছে। এসব কি প্রভাবিত করছে? বিষয়টি নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা প্রয়োজন। আবার পুলিশ কাউকে ধরলে ছেড়ে দেওয়ার চাপ আসে। নেতারা এদের বিভিন্ন অপকর্মে ব্যবহার করেন। এভাবে সমাজের একটি বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে। এগুলো দেখে দেখে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। আমরা সাংসদেরা সংসদে আলোচনা করলাম। আইনও হলো। কিন্তু আইনের প্রয়োগ কি হবে? প্রয়োগের জায়গাটিতে এসে সব সময় সংশয় থেকে যাচ্ছে—সঠিক প্রয়োগ যদি না করতে পারি, জবাবদিহি যদি না থাকে। আসামিরা যদি ধরা না পড়ে, যদি শাস্তি না হয়। তাহলে আমাদের কোনো আলোচনাই কাজে আসবে না। প্রত্যেককেই আয়নার সামনে দাঁড়াতে হবে। নিজেকে নিজের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
রাশেদা কে চৌধূরী: অ্যাসিড মারা হচ্ছে। মুহূর্তে হারিয়ে যাচ্ছে একটি সুন্দর মুখের প্রতিচ্ছবি, অবসান হচ্ছে একটি স্বপ্নের। পুড়ছে বাংলাদেশের অন্তর। পুড়ছি আমরা। এই বর্বরতার কি কোনো শেষ নেই? বা শেষ কোথায়? আমরা কেউ জানি না। কেউ কেউ বলেছেন, সমাজ নীরব। কাদের সমাজ বলছি? গ্রামগঞ্জের মানুষ এখনো তথাকথিত সমাজের কাছে পৌঁছাতে পারে না। ভাষা থেকে শুরু হয়েছে নারীকে আঘাত করা। বাংলা ভাষায় অপয়া, কলঙ্কিনীর মতো শব্দ আছে। এ শব্দগুলোর কোনো পুংলিঙ্গ নেই। একমাত্র নারী হচ্ছে এসব শব্দ ব্যবহারের উপযুক্ত ক্ষেত্র। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নারী নির্যাতনের আরেকটি বড় কারণ হতে পারে দারিদ্র্য। দারিদ্র্যের কারণে একশ্রেণীর নারী নিজেকে রক্ষা করার মতো শক্তি-সাহস অর্জন করতে পারছে না। ফলে তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্যাতিত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে সবাইকে আরেকবার যুদ্ধ করতে হবে। অ্যাসিড-সন্ত্রাসীদের ৯০ দিনের মধ্যে বিচার হওয়ার কথা। অথচ ধরতেই পারছে না। এ ক্ষেত্রে অনেকের ভূমিকা রয়েছে। যেমন: ডাক্তার, ডাক্তারের ফরেনসিক প্রতিবেদন, পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শুধু যে দলীয় লোক বলে পার পায় তা না, এখানে বড় রকমের টাকা-পয়সার লেনদেন হয়। দেশের মানুষ হয়তো শিক্ষিত হচ্ছে, কিন্তু সুশিক্ষিত হচ্ছে না। আলোকিত মানুষ হচ্ছে না।
বিপাশা হায়াত: সমাজের সব ক্ষেত্রে রুচিবোধের চরম অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। চারপাশ অশ্লীলতায় ভরে গেছে। ভীষণভাবে পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। এখন টিভিতে পারিবারিকভাবে অনেক কিছু দেখা যায় না, অনেক পরিবেশে যাওয়া যায় না। প্রায় সব শ্রেণীর মানুষের দিক থেকে বিশ্বাসের জায়গাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অধিকাংশ নারী খুব কাছের মানুষের কাছ থেকে সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। চাচাতো, খালাতো, মামাতো, ফুফাতো ভাই, দুলাভাই—এসব জায়গা থেকে প্রথম নির্যাতনের শিকার হন। তরপর প্রেমসহ অন্যান্য কারণ রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইন্টারনেট, মোবাইল তরুণদের জীবনকে ধ্বংস করছে। অনেক তরুণ তার মোবাইলে খারাপ ছবি ধারণ করে দেখছে। শুনেছি, এরা পড়ালেখা করে না। রাত জেগে ইন্টারনেটে ও মোবাইলে খারাপ ছবি দেখে। একটি সামাজিক উদ্যোগ ছাড়া এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব বলে মনে হয় না।
মনিরা রহমান: অ্যাসিড-সন্ত্রাস নিয়ে কাজ করছি। ২০০৩ সাল থেকে অ্যাসিড-সন্ত্রাস কমে আসছে। ২০১২ সালে ৯৮ জন এ সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে। শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে কোনো একটি ক্ষেত্রে সফলতা আসবে না। নারীর ওপর সবদিক থেকে সহিংসতা বন্ধ হতে হবে। তখন অ্যাসিড-সন্ত্রাস শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। নারায়ণগঞ্জের হাসিনাকে অ্যাসিড নিক্ষেপের তিন বছর পরও আসামি ধরা হয়নি। সে প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করল, ‘কেন পুলিশ আসামিকে ধরে না তা বুঝতে পারি না।’ আইজি (পুলিশের মহাপরিদর্শক) এটি দেখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিকে ধরার নির্দেশ দেন। ঠিকই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি ধরা হয়। ৩০ দিনের মধ্যে তার বিচার হয় এবং শাস্তি হয়। সেই হাসিনা বলেছিল, ‘আপনারাই সেই পুলিশ, যাঁরা তিন বছর আসামিকে ধরতে পারেন না, আবার ২৪ ঘণ্টায় ধরেন।’
ইউ এম হাবিবুন নেসা: ২৫ বছর আগে এ আন্দোলন শুরু করেছিলাম। আজ যদি হিসাব করি, কী পেলাম? হিসাবের খাতা শূন্য। ২৫ বছর পরও খাতা শূন্য, এটিই হলো দুঃখ। এখানে দৃষ্টিভঙ্গি ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর দুর্বলতার কথা আলোচনা হয়েছে। এটাই আমাদের যুদ্ধক্ষেত্র। আমি নারী, সারা পৃথিবী আমার যুদ্ধক্ষেত্র। পুলিশ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০১-২ সালে তিন হাজার ১৭৮টি, ২০০৩ সালে চার হাজার ৪৪২টি, ২০১১ সালে তিন হাজার ৬৩৮টি ও ২০১২-এর জুন পর্যন্ত এক হাজার ৮৬৯টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এটি শুধু ধর্ষণের পরিসংখ্যান। খুনের পরিসংখ্যান আলাদা। এখানে অভিভাবকের কথা আসছে। সন্ত্রাসীদের অভিভাবক কারা এবং আমাদের অভিভাবক কারা? আমাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে আমরা কী শিখছি? আমাদের অভিভাবকেরা যা করেন, তারই প্রভাব সমাজে দেখি। নারী সব সময় ঝুঁকির মধ্যে থাকে। এ ধরনের অভিভাবকেরা সে ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেন। সব ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক তদন্ত ও বিচার খুব জরুরি। জামিনের মানে অবাধ ঘুরে বেড়ানো নয়। জামিন অর্থ শর্তসাপেক্ষ মুক্তি। জামিনের পর পুলিশ তাকে পর্যবেক্ষণ করবে। জজ সাহেব নিয়মিত হাজিরার আদেশ দিতে পারেন। এ কাজগুলো হয় না বলেই জামিন থেকে বেরিয়ে আসামি মানুষ হত্যা করে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা একসঙ্গে কাজ না করলে কোনো সফলতা আসবে না।
সারা যাকের: নারীর প্রতি সহিংসতার কথা শুনলে ধরে নিই কেউ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। শুধু ধর্ষণই নয়, বিভিন্নভাবে নারী সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এর সমাধান চাই। এখন নারীও সংঘবদ্ধ হয়েছে। পৃথিবীর সব দেশের নারীরা সমানতালে এগিয়েছে। আমরাও সে পথের যাত্রী। নারীর দেহ ঢেকে রাখার বিষয়টি সামনে আনলে চলবে না। নারীকে সহিংসতার দায় নিতে হয়। দায় পড়া উচিত পুরুষের ওপর। বিশ্বব্যাপী এক গবেষণা হয়েছে। গবেষণার ৩৫ শতাংশ পুরুষ ধরা না পড়লে ও নাম প্রকাশ না হলে জোরপূর্বক সম্পর্ক করতে চায়। এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ এ রকম ঘৃণ্য মানুষ তৈরি করছে। অর্থাৎ নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়িয়ে তুলছে। আবার দেখা গেছে যে সমাজে শাস্তি হয়েছে, সেখানে সহিংসতা কমেছে। নারীকে ঢেকে রেখে সহিংসতা থেকে রক্ষা করা যাবে না। কারণ, আমরা দেখেছি, পোশাকে ঢাকা নারীরাও সহিংসতার শিকার হয়।
সুলতানা কামাল: নারীর প্রতি নির্যাতন যতটা না নির্যাতনের বিষয়, তার থেকে বেশি হলো সম্ভ্রমের বিষয়। এর সঙ্গে জড়িত আছে নারীর সম্মান। পরিবারের সম্মান। সমাজের সম্মান—নানা কিছু। আর এখান থেকেই মূল দ্বন্দ্বটা শুরু হয়। পুুরুষতান্ত্রিক সমাজের চিন্তাধারা এ রকম। কিছুদিন আগে আমিসহ চারজন একটি টক শোতে ছিলাম। আইনজীবী সমিতির একজন পদস্থ ব্যক্তি বলতে শুরু করলেন, ‘আমার মেয়েদের, মায়েদের বলব যে তাঁরা যেন সাবধান থাকেন। তাঁরা জানেন, বিপদ হওয়ার আশঙ্কা আছে। তার পরও কেন যাবেন। নিজেদের কেন রক্ষা করবেন না।’ এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও বলেলেন, ‘মেয়েরা পরিবেশটা তৈরি করে দেয়।’ তাঁর কথা শুনে মনে হলো, সব দায়িত্ব কি নারীর? সে যেতে পারবে না। নিজেকে রক্ষা করবে। সে পরিবেশ তৈরি করে দেয়—এসব কী কথা? সাবধানবাণীর আঙুলটা কেন পার্পিট্রেইটরদের (দুষ্কৃতকারী বা সন্ত্রাসী) দিকে যায় না। কেন তারা আইনের আওতায় আসে না? কেন তাদের শাস্তি হয় না? এ ধরনের কথার জন্য একজন মানুষের স্বাধীনতা খর্ব হয়। দুুষ্কৃতকারীরা, অপরাধ ও অন্যায়কারীরা উৎসাহিত হয়।
কেন সহিংসতা বেড়ে যাচ্ছে? কারণ, পুরুষতান্ত্রিক ধারণা এমনভাবে গেঁথে আছে যে এ থেকে মুক্তি অসম্ভব। এ জায়গায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক ধারণা বদলানো না গেলে কখনোই নারীর মুক্তি আসবে না। এদিকে টকশোতে অংশ নেওয়া পুলিশ কমিশনার বলছেন, ‘আপনারা বলেন, মামলা নেয় না।’ তিনি ক্রিমিনালদের (অপরাধী) বকা দিচ্ছেন। ক্রিমিনালদের বকা দিয়ে লাভ নেই। প্রকৃতপক্ষে, যারা মামলা না হওয়ার পক্ষে কথা বলে, তাদের বকা দেওয়া উচিত।
ক্রিমিনাল অ্যাক্টে (অপরাধ আইন) আছে, ‘তুমি যদি তোমার দায়িত্ব পালন না করো, এটা হয় অপরাধ, না হয় দুর্নীতি।’ তাঁর কথার একপর্যায়ে বললাম, ‘আপনি এত ডিফেনসিভ (রক্ষণাত্মক) হচ্ছেন কেন? তিনি বললেন, ‘কোথায় রক্ষণাত্মক? আমি খুবই অফেনসিভ (আক্রমণাত্মক)। তিনি ভেবেছেন আমার কথায় তাঁকে আক্রমণাত্মক হতে হবে। জোরে জোরে বলছেন, এত ধর্ষণ হচ্ছে না। পুলিশ ঠিকই কাজ করছে। এত মানুষের জন্য কতজন পুলিশ? সবকিছুতে একটা ডিনাইয়ের (অস্বীকার) প্রবণতা। অথচ তিনি যত সময় অনুষ্ঠান করলেন, দুই থানার ওসিসহ মোট চারজন তাঁকে স্যালুট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠান। তিনি আসার আগে তাঁরা এসেছেন। অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। তাঁকে স্যালুট করার পর বিদায় নিয়েছেন। তারপর এ চারজন গিয়েছেন। এটা একটা দুর্নীতি না? কর্তব্যে অবহেলা না?
যা-ই হোক, পরিবার এগোয়নি। সমাজ এগোয়নি। সরকারের লোকজন এগোয়নি। কিন্তু নারী ঠিকই এগিয়ে যাবে।
ইফতেখারুজ্জামান: দুর্নীতির ধারণায় শুধু ঘুষের আদান-প্রদানই দুর্নীতি নয়। ক্ষমতার অপব্যবহারও বড় দুর্নীতি। যে একজন নারীর প্রতি সহিংসতা করল, সে কিন্তু ওই নারীর চেয়ে ক্ষমতাবান। যারা তাকে রক্ষা করছে, তারা আরও ক্ষমতাবান। ক্ষমতার অপব্যবহারই দুর্নীতির জন্ম দেয়। এরা সবাই দুর্নীতি করছে। এভাবেই দুর্নীতি সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করছে।
দেশে কয়েক কোটি তরুণ, সবাই কি অপরাধ করছে? করছে না। এই তরুণ সমাজ কিন্তু বিরাট একটা প্রত্যাশার জায়গা। পৃথিবীর সব দেশে অপরাধ আছে। কিন্তু সব দেশেই অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা আছে। ৪০ বছরের সবচেয়ে বড় অর্জন নারীর অধিকার। সে জায়গায় বারবার আঘাত আসছে। এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। দেশে কিছু উদাহরণ তৈরি করার সুযোগ আছে।
দুই নেত্রীর মধ্যে বিরোধ আছে থাকুক। দ্বিমত আছে থাকুক। রাজনীতিতে বিরোধ-দ্বিমত থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। একে অপরের সঙ্গে দেখা হলেও কথা বলেন না। না বলুক। কিন্তু দুজনে একটা অবস্থান নিয়ে বলতে পারেন, ‘আমরা নারীর প্রতি সহিংসতা দেখতে চাই না।’ তাহলে দ্রুত অবস্থার পরিবর্তন হবে। ধারণা করা হচ্ছে, শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধীদলীয় নেত্রী সংসদে যোগ দেবেন। আমরা আশা করি, দুজনে একসঙ্গে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন প্রতিরোধের বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন এবং একসঙ্গে একটি বিবৃতি দেবেন। তাহলে এটা যে একটি জঘন্য অপরাধ, সে রকম একটি বার্তা বিচারব্যবস্থা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, প্রশাসনসহ সবার কাছে যাবে। এ বার্তা দেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ।
রাজনৈতিক প্রভাব একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবন্ধকতা। বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দুই দলে বিভক্ত। রাজনৈতিক প্রভাবে প্রভাবান্বিত। যে কারণে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সত্যিকার অর্থে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা থাকতে হবে। তা না হলো আমাদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।
মেহের আফরোজ চুমকি: আজ এখানে ১৪ জন কথা বলছি। ১৪ জন থেকে একদিন ১৪ কোটি মানুষ এ বিষয়ে কথা বলবে। দেশের সব মানুষ রুখে দাঁড়াবে। জেগে উঠবে। সেদিনই সঠিক সমাধান পাব। একদিন এমন ছিল, মেয়েরা জানালা দিয়ে সমুদ্র দেখত। তারপর তীরে দাঁড়িয়ে। এখন ঝাঁপ দিয়ে সমুদ্রকে জয় করছে। হিমালয়সহ পৃথিবীর দুর্গম শৃঙ্গ জয় করছে। একশ্রেণীর মানুষের হাতে পড়ে বিজ্ঞান এখন অভিশাপ হচ্ছে। কিছু প্রযুক্তির বাজে ব্যবহার করে যুবসমাজের একটি অংশ ধ্বংস হচ্ছে। তবে আমরা বসে নেই। কাজ করে যাচ্ছি। কারণ, কোনো ঘটনা ঘটলে সরকারও বিব্রত হয়।
সরকারের কার্যকর উদ্যোগের জন্য ইভ টিজিং কমে গেছে। নারীর প্রতি নির্যাতন বন্ধ করতে হলে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। সংসদে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলের নারী সদস্যদের একটি ককাস (মতৈক্য) তৈরি করতে যাচ্ছি। যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে সরকারি ও বিরোধী দলের নারী সদস্যরা একমত হবেন। এটাও সংসদে পুরুষদের ভোটে পাস করাতে হবে। সরকারের সদিচ্ছা আছে বলেই আমরা এ সুযোগ পাব। অনেক সময় পত্রপত্রিকায় দেখি জনপ্রতিনিধিরাও অভিযুক্ত। সমাজের কোথায় যেন একটা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। মনে হয়, মাদক একটা বড় সমস্যা তৈরি করেছে। কারণ, মাদকাসক্ত ব্যক্তিরাই এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে বেশি জড়িত। মাদকের ব্যাপারে আমাদের সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে।
পশ্চিমা বিশ্বে যেকোনো ধরনের পোশাক পরে মেয়েরা চলাফেরা করছে। কেউ কারও দিকে তাকাচ্ছে না। আমাদের মানসিকতা সেভাবে গড়তে হবে। এ আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যক্তি উপস্থিত আছেন। তাঁরা বহু বছর ধরে নারী নির্যাতন ও সহিংসতার বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছেন। সবাই কিছু অভিযোগ করেছেন। আবার সুপারিশ, পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ একটি আলোচনা হয়েছে। আমরা এসব বিষয়ে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতে আরও করব।
আব্দুল কাইয়ুম: নারীর প্রতি সহিংসতা বিষয়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আলোচনা থেকে কিছু অভিযোগ, পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা এসেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এগুলো বিবেচনায় নিলে নারীর প্রতি সহিংসতা কমে আসবে বলে মনে করি। অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও সময় দিয়েছেন, এ জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

No comments

Powered by Blogger.