ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব

ছোট্ট ছেলেমেয়েরা দল বেঁধে দেখতে এসেছে সিনেমা। তাদের চোখে রাজ্যের বিস্ময়। পর্দায় মানুষ কিভাবে ঘুরে বেড়ায়। রহস্যটা কি? চোখে মুখে বিস্ময় আর ভাল লাগার অনুভূতি নিয়ে প্রতিদিন পাবলিক লাইব্রেরীতে আসছে শত শত সিনেমাপ্রেমী শিশু।
গত ১৯ জানুয়ারী থেকে রাজধানীসহ সব বিভাগীয় শহরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। চলবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। উৎসব উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পুরো পাবলিক লাইব্রেরী। এ যেন এক নতুন জায়গা । ১৯ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরী চত্বরে পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে উৎসব উদ্বোধন করেন উৎসব উপদেষ্টা মুস্তাফা মনোয়ার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন প্যাসকেল ভিলেনিউভ, কানাডিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা ন্যান্সি ট্রিটস বটকিন, চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ এর সভাপতি মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং উৎসব পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম। ছায়ানটের ক্ষুদে সঙ্গীত শিল্পীদের ‘আলো আমার আলো ওগো আলোয় ভুবন ভরা’ গানটি পরিবেশনায় দারুণ আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী দিনে প্রদর্শিত হয় স্পেনের একটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলাদেশী চলচ্চিত্র ‘্ওয়াটার ফর লাইফ’, সুইজারল্যান্ডের ‘দি উইনডো’, রাশিয়ার ‘অ্যামবিশাস’ এবং নেদারল্যান্ডের সিনেমা ‘টনি টেন’। এবারের উৎসবে সারাদেশে মোট ২২টি ভেন্যুতে ৪২টি দেশের দুই শতাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। শিশুদের জন্য উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে বাংলাদেশের শিশুদের নির্মিত চলচ্চিত্রের প্রতিযোগিতা বিভাগটি। এই বিভাগে প্রদর্শনের জন্য ৬০টি সিনেমা মনোনীত হয়েছে। এর মধ্য থেকে ৫টি ছবি পুরস্কার পাবে। পুরস্কারের জন্য জুরি বোর্ডও গঠন করা হয়েছে যার পাঁচ জন সদস্যই ১৮ বছর বয়সের নিচে। ঢাকার উৎসবে এবার ক্ষুদে নির্মাতারা ছাড়াও ১২৫ জন শিশু প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছে। উৎসব পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম জানান, ‘তোমরা সকলেই যে বড় হয়ে চলচ্চিত্রকার হবে এমনটা আমরা আশা করি না। কিন্তু এখন তোমরা যে চলচ্চিত্র নির্মাণ করছ, এর মাধ্যমে তোমাদের চিন্তা শক্ত্ওি সৃজনশীলতা বিকশিত হবে। তবে শিশুরা সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছে ‘চলচ্চিত্রে গল্প বলা’ বিষয়ক দিনব্যাপী সেমিনারে। এই কর্মশালাটি পরিচালনা করেন কানাডিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা ন্যান্সি ট্রিটস বটকিন এবং তাকে সহায়তা করেন মার্ক শেকটার। সারাদেশে উৎসব হলেও মূল আকর্ষণস্থল ছিল কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরী চত্বর। সিনেমার প্রদর্শনী শিশুদের জন্য উন্মুক্ত। মতিঝিল সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উদয়ন, কিশলয় স্কুল ও ইটন স্কুলের শিক্ষার্থীরাসহ অনেক স্কুলের শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে দেখতে এসেছে এসব শিশুতোষ চলচ্চিত্র। শুধু ছোটরাই নয় বড়রা ও নিয়মিত ঢু মেরেছেন উৎসবে। নির্মাতা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী, শাহনেওয়াজ কাকলী, অভিনেতা প্রাণ রায়সহ অনেকেই ছোটদের অনুপ্রাণিত করতে এসেছিলেন উৎসবস্থলে। ইমরান হোসেন

No comments

Powered by Blogger.