যুদ্ধ চাই না, কেউ আঘাত করলে মোকাবেলা করবোঃ প্রধানমন্ত্রী by মাহবুবুর রহমান মুন্না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না। তবে কেউ আঘাত করলে মোকাবেলা করবো। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আধুনিক ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী গড়ে তুলবো,
যা যুদ্ধের সময় নিজ জলসীমার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা শিপইয়ার্ডে তৈরি নৌ-বাহিনীর নতুন যুদ্ধ জাহাজ ‘বিএনএস পদ্মা’র কমিশনিংকালে উদ্বোধনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ডিটারেন্ট ফোর্স হিসেবে গড়ে তুলতে শিগগিরই সব ঘাঁটিতে সাবমেরিন সংযোজন করার ঘোষণাও দেন প্রধানমন্ত্রী।

নৌ-বাহিনীর ঘাঁটি খালিশপুরের তিতুমীরে নৌ-বাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনিং করেন প্রধানমন্ত্রী।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই জাহাজ যুদ্ধের সময় নৌবহরে সমরাস্ত্র সক্ষমতায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নৌবাহিনীকে অধিকতর কার্যকর হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য বিদেশ থেকে ১১টি যুদ্ধজাহাজ ক্রয় ও খুলনা শিপইয়ার্ড থেকে পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ তৈরি করা হচ্ছে। যার প্রথমটি আজ কমিশনিং করা হলো।”

প্রধানমন্ত্রী আরও  বলেন, “মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধে যেভাবে আমরা জয়ী হয়েছি, সেভাবে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধেও জয়ী হবো ইনশাল্লাহ।”
‌উল্লেখ্য, এটিই বাংলাদেশে তৈরি প্রথম যুদ্ধ জাহাজ। ২০১১ সালের ৫ মার্চ খুলনা শিপইয়ার্ডে জাহাজটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১২ সালের ৮ অক্টোবর পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি জাহাজটি লাঞ্চিং করান।

খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ২০১১ সালে খুলনা শিপইয়ার্ড পাঁচটি যুদ্ধ জাহাজ তৈরির জন্য নৌ-বাহিনীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। দুই মাস জাহাজটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিএনএস পদ্মা’।

খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, বিএনএস পদ্মার গতিবেগ হবে ঘন্টায় ২৩ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৩৭ মাইল)। এটি ৫০ দশমিক ৪ মিটার লম্বা ও ৭ দশমিক ৫ মিটার চওড়া। পানির নিচে এর গভীরতা থাকবে ৪ দশমিক ১ মিটার।

যুদ্ধ জাহাজটিতে প্রতিবারে বিমান ও জাহাজ বিধবংসী ৩৭ মিলিমিটারের দু’টি কামান ও শুধু বিমান বিধ্বংসী ২৫ মিলিমিটারের আরও দু’টি কামান থাকবে। এর ওজন হবে প্রায় ৭৫০ টন।

কমিশনিং অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনীর প্রধান জহির উদ্দিন আহমেদ সহ নৌবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

প্রধানমন্ত্রী দুপুর ২টায় খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দানে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী খুলনা সার্কিট হাউস ময়দান থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে খুলনার ১২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ছেয়ে গেছে সিটি মেয়রসহ ক্ষমতাসীন দলের প্রথম সারির কয়েক নেতার বিলবোর্ড, প্যানাফ্ল্যাক্স এবং মহানগর ও জেলা আ’লীগের পোস্টারে।

দলীয় পদ নেই, ক্ষমতাসীন দলের এমন অনেক নেতাও প্রধামন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্যানাফ্ল্যাক্স কিংবা বিলবোর্ড করেছেন। তাদের মধ্যে বিতর্কিত অনেকেও রয়েছেন। এসব বিলবোর্ড ও পোস্টার উপজেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.