রূপপুরে পরমাণু প্লান্ট পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে

রূপপুর পরমাণু প্রকল্পে দু’টি প্লান্ট স্থাপনের জন্য রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের যে চুক্তি হয়েছে, তা আমাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিশেষ করে পরিবেশ ও মানুষের জন্য বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে এই প্লান্ট। অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন ও অন্যান্য ইস্যুতে বিকল্প ওয়েবজার্নাল কাউন্টারকারেন্ট মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়, রূপপুরে দু’টি পরমাণু বিদ্যুৎ প্লান্ট নির্মাণে রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক চুক্তি নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

২ নভেম্বর ১০০ মেগাওয়াটের দু’টি চুল্লি সরবরাহের ব্যাপারে রাশিয়া ও বাংলাদেশ বহু প্রতীক্ষিত চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরকালে ১০০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি (সাঁজোয়া যান, পরিবহন হেলিকপ্টার ও অন্যান্য অস্ত্র সরবরাহ) সম্পাদিত হয়।

রূপপুর চুক্তি এবং প্রতিরক্ষা চুক্তি উভয়টিতেই বিপুল সরকারি অর্থ জড়িত। ফলে বাংলাদেশের মতো একটি দেশের এসব খাতে এত অর্থ ব্যয় করার বিষয়টি যথার্থ কি না তা খতিয়ে দেখার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরমাণু এজেন্সিকে (আইএইএ) জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে যে দু’টি প্লান্ট আনা হবে তা ভিভিইআর-১০০ ডিজাইনের। এ ধরনের প্লান্ট পানি দিয়ে ঠাণ্ডা করা হয়। এ ধরনের প্লান্ট যাতে অতিরিক্ত গরম না হয়ে ওঠে, সে জন্য সার্বক্ষণিক পানি দিতে হয়। ব্যবহারের পর এই পানি আবার পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে প্লান্টটি চালুর পর রূপপুর তথা ঈশ্বরদী এলাকার পানি, মৎস্যসম্পদ এবং সার্বিকভাবে পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে।

রূপপুরের পরমাণু জ্বালানি রডগুলো ব্যবহারের পর কোথায় রাখা হবে সে প্রশ্নও তোলা হয় প্রতিবেদনটিতে। এগুলো মাটিতে পুঁতে রাখতে সমস্যার সমাধান হবে না। বরং মাটিতে রাখা হলে তা থেকে মারাত্মক তেজষ্ক্রিয়া ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে ঈশ্বরদীর মানুষ থাকবে মারাত্মক বিপদে। এই ঝুঁকি কিভাবে হ্রাস করা যায়, সে ব্যাপারে চুক্তিতে কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে এবং যেখানে নিয়মিত বন্যা হয়ে থাকে, সেখানে এ ধরনের পরমাণু প্লান্ট বসানো অত্যন্ত বিপজ্জনক।
       

No comments

Powered by Blogger.