নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা হবেঃ ড. কামাল

পেপার স্প্রে ও সমরাস্ত্র নিয়ে সংসদে আলোচনা করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বেইলি রোডে নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন একথা বলেন। তিনি বলেন, “হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত ঠিক না। এসব বিষয়ে সংসদে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “আগামী মার্চের শেষদিকে জাতীয় কনভেনশন করে বাহাত্তরের সংবিধানের ভিত্তিতে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রুপ, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, রুগ্ন রাজনীতি প্রতিরোধে গণজাগরণ গড়ে তোলা হবে। এখন গণসংযোগ করছি, এরপর গণআন্দোলন। তারপর নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন করা হবে।”

মার্চে জাতীয় কনভেনশনে সব রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানান তিনি।

ড. কামাল হোসেন আরও বলেন, “নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। এ সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ড. আকবর আলী খান যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা নিয়ে আলোচনায় বসলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।”

বর্তমান সরকারের মেয়াদ এখনও ১১ মাস বাকি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ সময়ের মধ্যে বিরাজমান সংকটগুলো সমাধান, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, ডেসটিনি, হলমার্ক কেলেঙ্কারির বিচার করা সম্ভব।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “৪২ বছর পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। সরকার নিরপক্ষ হলে জনগণ ও জাতীয় স্বার্থে আগামী ১১ মাসে এ সরকারের সময় ঘটা কেলেঙ্কারিগুলোর বিচার করা সম্ভব।”

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, “আপনারা আরও ১১ মাস ক্ষমতায় থাকবেন। এ সময়ের মধ্যে পুলিশ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখার জন্য একটি আইন করে নিরপক্ষে কমিশন করতে পারেন। তাহলে পুলিশ দলীয় প্রভাব মুক্ত থাকবে। যেকোন তদন্ত স্বচ্ছ হবে এবং তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা সম্ভব হবে।”

তিনি বলেন, “২০০৮ সালে চারদলীয় জোটের আগ্রাসন থেকে মুক্ত হতে জনগণ এ মহাজোট সরকারকে ভোট দেয়। আশা করেছিলাম শোষণমুক্ত সমাজ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে, বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়াবে। কিন্তু ঘটেছে উল্টো। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, অপহরণ, গুম, ধর্ষণ লেগেই আছে। সরকার এসব নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে।”

সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “এসব প্রতিষ্ঠানে চলছে সরকারি ছাত্রসংগঠনের আধিপত্য বিস্তারের মহড়া, শিক্ষককে মারধোরের ঘটনা। সরকার আইনে শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারলে এসব ঘটনা ঘটতো না।”

আইনের শাসন মানবতাবিরোধীদের জন্য প্রযোজ্য হলেও অন্যান্য আদালতে তা প্রয়োগ হচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরামে সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণফোরাম নেতা আলতাফ হোসেন, জগলুর হায়দার আফরীদ, আব্দুল আজিজ প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.