‘ছাত্র রাজনীতিতে পেশি শক্তির ব্যবহারের সীমা ছাড়িয়ে গেছে’

স্টাফ রিপোর্টার: ছাত্র রাজনীতিতে পেশি শক্তির ব্যবহার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এ কারণে বর্তমানে ছাত্র রাজনীতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ছাত্ররা এখন পড়ালেখার চেয়ে অর্থ উপার্জনে বেশি মনোযোগী।
এমনটিই মনে করেন সাবেক ছাত্রনেতা ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনি। শিক্ষাঙ্গনে চলমান অস্থিরতা নিয়ে মানবজমিন অনলাইনকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, বর্তমান সময়ের ছাত্র রাজনীতি এবং আমাদের সময়ের ছাত্র রাজনীতির মধ্যে বিরাট একটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। যুগের পরিবর্তনে এই পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের সময়ে ছাত্র রাজনীতিতে নৈতিকতাবোধ, আদর্শ এবং আত্মসম্মানবোধের উপস্থিতি দেখা যেত ব্যাপকভাবে। এমন কি বিরোধী দলের  সঙ্গেও সুসম্পর্ক এবং শ্রদ্ধাবোধের সম্পর্ক বজায় ছিল। কিন্তু বর্তমানে এটা ভাবা যাচ্ছে না। বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির মধ্যে চেইন অফ কমাণ্ড নেই। পেশি শক্তির ব্যবহার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। সেই সময়েও পেশি শক্তির ব্যাবহার ছিল কিন্তু সেটা প্রধান ছিল না। এতো বেশি ছিল না। কিন্তু এখন যার পেশিশক্তি যত বেশি, সে তত বড় নেতা। এটা ছাত্র রাজনীতির এই অস্থিরতার প্রধান কারণ। এছাড়া যারা ছাত্র রাজনীতি করে, তারা লেখাপড়ার চেয়ে ব্যাবসা বাণিজ্য টাকা পয়সা আয়রোজগারের দিকে বেশি মনযোগী হতে দেখা যাচ্ছে। এটাও তাদের মধ্যে অনৈক্যেও বীজ বুণে দিচ্ছে।
এই অবস্থার উত্তরণের উপায় কি-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দলের হাই কমান্ড, শিক্ষকবৃন্দ এবং জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যারা মূল দলের নেতা তাদেরই ভূমিকা নিতে হবে। তাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যে ব্যক্তিস্বার্থে ছাত্র রাজনীতির ব্যবহার যাতে না হয়। দ্বিতীয়ত, যারা অন্যায় করবে, তাদের বিরুদ্ধে সকল দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে ন্যায়বিচার করতে হবে। তৃতীয়ত, আমাদের দেশের ছাত্ররাজনীতির থিম এবং আদর্শ ঠিক করা প্রয়োজন। দলীয় লেজুড়বৃত্তি ছাত্ররাজনীতি হতে পারে না। স্বাধীনতার আগে আমাদের দেশের ছাত্র রাজনীতির একটা লক্ষ্য বা আদর্শ ছিল। তখন শিক্ষিতের হার কম ছিল। সচেতন মানুষ কম ছিল। তখন মানুষের মুক্তির জন্য ছাত্রদের এগিয়ে আসতে হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির কর্মসূচি ঠিক করা উচিত। ছাত্ররাজনীতির অসুস্থ অবস্থার পেছনে আরেকটি কারণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অভাব। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র সংসদ নেই। যদি ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতো তাহলে যারা নেতৃত্বে আসতো তাদেরকে গুণাবলীর একটা পরীক্ষা দিয়ে আসতে হতো। স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা থাকতো। ট্রান্সপারেন্সি বজায় রাখতে হতো। সেটা নেই বলেই এই অসুস্থ অবস্থা বিরাজ করছে। এ বিষয়ে শিক্ষকদের এগিয়ে আসা উচিত।

No comments

Powered by Blogger.