মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে বর্ডার গার্ড এ্যাক্ট অনুমোদন- মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৬ সদস্যের কমিটি

 বিদ্রোহ বা শত্রুপক্ষেকে সহায়তা উভয় ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে বর্ডার গার্ড এ্যক্ট ২০১০ নীতিগভাবে অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইনটির নীতিগত অনুমোদন দিয়ে যুগোপযোগী করার জন্য ছয় সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, গত বছর ২৫ ও ২৬ ফেব্রম্নয়ারি পিলখানার নারকীয় হত্যাযজ্ঞের আর যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে এ জন্য বর্ডার গার্ড আইনকে যুগোপযোগী করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, চুলচেরা বিশেস্নষণ করে আইনের খসড়াটি পরবর্তীতে উপস্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সংস্থাপন উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে ছয় সদস্যর একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ, স্বরাষ্ট্র, আইন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় স্বার্থে বিডিআরকে পুনর্গঠন এবং সক্রিয় করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাস্তবায়নে সময় উপযোগী একটি আইনের প্রয়োজন। ভবিষ্যতে আর যাতে এ ধরনের হত্যাকা- না ঘটে এ জন্য আইনকে যুগোপযোগী করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, প্রস্তবিত আইনের খসড়ায় বিদ্রোহ, অবাধ্যতা অথবা যুদ্ধাবস্থায় শত্রুপকে সহযোগিতার অপরাধে সর্বোচ্চ শাসত্মি নির্ধারণ করা হয়েছে মৃতু্যদ-। ঊর্ধতন কর্মকর্তার আইনসম্মত আদেশ অমান্য করলে সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদ-, কর্মকর্তাদের প্রতি বলপ্রয়োগ অথবা হুমকি প্রদর্শনের মতো ঘটনা ঘটলে যুদ্ধাবস্থায় সর্বোচ্চ ১৪ বছর এবং অন্য সময় সর্বোচ্চ ৭ বছর, বর্ডারগার্ডের জন্য কোন রকম মর্যাদাহানিকর আচরণের জন্য সর্বোচ্চ ১০ বছর সশ্রম কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। দায়িত্ব পালনকালে পালিয়ে গেলে বা অন্য কাউকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করলে সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদ- এবং সীমানত্মে কর্তব্যে অবহেলা অথবা উৎকোচ গ্রহণ বা প্রদান করলে একই মেয়াদের কারাভোগের বিধান রাখা হয়েছে। ছুটি ছাড়া কোন জওয়ান ৩০ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তাকে পলাতক হিসেবে গণ্য করার সুপারিশ করা হয়েছে। আাইনের খসড়াটি ১৬টি অধ্যায় ও ১৪৭টি ধারা অনত্মর্ভুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। প্রসত্মাবিত আইনের খসড়ায় চার ধরনের ্তুবর্ডার গার্ড্থ আদালত গঠন করার বিধান রাখা হয়েছে। আদালতগুলো হচ্ছে বর্ডার গার্ড আদালত, স্পেশাল সামারি আদালত, সামারি বর্ডার গার্ড আদালত, বর্ডারগার্ড আপীল ট্রাইবু্যনাল।
আইনের আলোকে মহাপরিচালক অথবা আঞ্চলিক কমান্ডারের আদেশে তিন অথবা পাঁচ সদস্য সমন্বয়ে স্পেশাল বিশেষ বর্ডার গার্ড আদালত গঠন করা যাবে। এ আদালত বাহিনীর যেকোনো সদস্যের বিচার করতে পারবে। যে কোন ধরনের শাসত্মি প্রদানের ৰমতাও থাকবে এ আদালতের। বর্তমানে বিচার প্রক্রিয়ায় আদালত গঠিত হলে তা মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে হওয়ার যে বিধান রয়েছে তা বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রসত্মাবিত আইনে মহাপরিচালক অথবা আঞ্চলিক কমান্ডার অথবা সেক্টর কমান্ডারের আদেশে গঠন করা হবে তিন সদস্যের বিশেষ সামারি বর্ডার গার্ড আদালত। এ আদালত বাহিনীর সহকারী পরিচালক ও তার নিচের পদবির যে কোন সদস্যকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যনত্ম সশ্রম কারাদ- দিতে পারবেন।
প্রসত্মাবিত আইনে ইউনিট অধিনায়ক এককভাবে গঠন করতে পারবেন সামারি বর্ডার গার্ড আদালত। ইউনিট অধিনায়কের সঙ্গে একজন কর্মকর্তা সদস্য হিসেবে আদালতে বিচারকার্য পরিচালনা করবেন। ইউনিট প্রধানের নেতৃত্বে গঠিত আদালত হাবিলদার অথবা এর নিম্ন পদমর্যাদার সদস্যদের সর্বোচ্চ এক বছর সশ্রম কারাদ-ে দ-িত করার ৰমতা প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.