মানুষের মৌলিক অধিকার যেন ক্ষুণœ না হয় সজাগ থাকুন- পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুলিশ বাহিনীর কর্মকাণ্ড অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে সমন্বয় করতে এই বাহিনীর জন্য একটি পৃথক বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার যেন লঙ্ঘিত না হয় সেদিকে সজাগ থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৩’ উপলক্ষে তাঁর কার্যালয়ে ঊর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণকালে বলেন, ‘আমি মনে করি পুলিশ বাহিনীর জন্য পৃথক একটি বিভাগের প্রয়োজন। এটি যুক্তিসঙ্গত যা আমাদের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। কিন্তু এ জন্য সময় প্রয়োজন।’ তিনি বিষয়টি আগামী বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, এতে আগামী বছর এ সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। খবর বাসসর।
‘দেশের সার্বিক উন্নয়নে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা সীমাহীন’-উল্লেখ করে শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ দমনে পুলিশের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও পুলিশ বাহিনী বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ দমনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে জনগণের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে অপরাধের ধরন ও কৌশল পাল্টাচ্ছে। অপরাধের সঙ্গে জড়িত মানুষের সংখ্যা বেশি নয়, তবে তাদের অপরাধের ধরন এমন যে তারা সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের শান্তি বিনষ্ট করতে পারে। তিনি বলেন, ‘বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় জামায়াত-শিবির চক্র যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে দেশব্যাপী এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। তারা পুলিশের ওপর বর্বর হামলা চালিয়েছে। কিন্তু তারা এই বিচার বন্ধ করতে পারবে না। কারণ এটা গণমানুষের দাবি। বিচারের রায় অবশ্যই কার্যকর হবে।’
জনগণের মৌলিক অধিকার যেন লঙ্ঘিত না হয়, সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ কথা মনে রাখতে হবে যে, আপনাদের ছোট ছোট ভুলের জন্য সরকারের ভাবমূর্তি যেন ক্ষুণœ না হয়।’ পুলিশ কর্মকর্তারা ত্যাগ ও সেবার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে এগিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, সরকার পুলিশ বাহিনীর জন্য তিন বছর মেয়াদী কৌশল পরিকল্পনা (২০১২-২০১৪) প্রণয়ন করেছে। এ ছাড়া অবকাঠামো উন্নয়ন ও যানবাহনের যোগানসহ ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। তাঁর সরকার পদোন্নতি ও বদলির ক্ষেত্রে মেধা, দক্ষতা, পেশাগত অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে- উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি এবং পুলিশ বাহিনীকে একটি আধুনিক, গতিশীল, সময়োপযোগী এবং জনসেবামুখী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
’স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর, একই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সি কিউ কে মোস্তাক আহমেদ, পুলিশ মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার এবং অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শহীদুল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব শেখ মোঃ ওয়াহিদ উজ জামান এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.