দিল্লিতে গণধর্ষণ-দ্রুত বিচার আদালতে শুনানি শুরু

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির বাসে গণধর্ষণ ঘটনার শুনানি গতকাল সোমবার দ্রুত বিচার আদালতে শুরু হয়েছে। শুনানিতে অভিযুক্তদের একজনকে নাবালক দাবি করেছেন তাঁর কেঁৗসুলি। ধর্ষিতার বাবা দোষিদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে মামলাটি দিল্লির বাইরে কোনো শহরে স্থানান্তরের আবেদন জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এ অনুরোধ বিবেচনার জন্য আজ মঙ্গলবার শুনানি করবেন। ফলে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে পারে_এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হয় ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণী। ঘটনার ১৩ দিন পর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, ডাকাতিসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে। ষষ্ঠজন নিজেকে নাবালক দাবি করায় তার বয়স শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া চলছে।
অতিরিক্ত দায়রা বিচারক যোগেশ খান্নার দ্রুত বিচার আদালতে গতকাল স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটা থেকে মামলাটির শুনানি শুরু হয়। প্রথম দিনই অভিযুক্ত বিনয় শর্মাকে নাবালক দাবি করে কিশোর আদালতে তার বিচার সম্পন্নের আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবী এ পি সিং। এ ব্যাপারে ২৪ জানুয়ারি সিদ্ধান্ত জানাবেন আদালত। পুলিশের নথিতে অবশ্য বিনয়ের বয়স ২০ বলে জানানো হয়েছে।
মেয়েটির বাবা দ্রুত বিচার চেয়ে বলেছেন, 'আমরা সদ্যই মেয়ের জন্য শোক পালনের ধর্মীয় বিধিবিধান পালন শেষ করেছি। তবে আদালত রায় না শোনানো পর্যন্ত এ শোক শেষ হবে না। দোষীদের শাস্তি হলে আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে। এত জঘন্য অপরাধ করে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার তাদের নেই।'
এদিকে মামলাটি দিল্লি থেকে সরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন অভিযুক্ত মুকেশ সিংয়ের আইনজীবী এমএল শর্মা। তিনি বলেন, দিল্লিতে মামলা চললে তার মক্কেলের পক্ষে ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি উত্তর প্রদেশ বা বিহারে মামলাটি স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন। আজ প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবিরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ আবেদনের শুনানি করবে। তবে শুনানি চলাকালে দ্রুত বিচার আদালতের কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে। এর আগে আদালত জানান, এই মামলা রুদ্ধদ্বার কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে এবং আদালতকে না জানিয়ে বিচার প্রক্রিয়ার কোনো কিছু প্রকাশ করা যাবে না।
বিবাদী পক্ষের কেঁৗসুলিরা এর আগে জানান, তারা তাদের মক্কেলদের নির্দোষ দাবি করবেন। তাদের অভিযোগ, পুলিশ নির্যাতন চালিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করেছে। এ ছাড়া সরকার পক্ষ ফরেনসিক প্রমাণাদিও জালিয়াতি করেছে বলে দাবি করেন তারা। তবে বাদী পক্ষের উকিলরা জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণে জড়িত থাকার ডিএনএ প্রমাণ রয়েছে। মেয়েটি মৃত্যুর আগে জবানবন্দি দিয়েছে। তা ছাড়া মেয়েটির সঙ্গীও অভিযুক্তদের শনাক্ত করেন।
পাঞ্জাবে নার্স গণধর্ষিত : রাজ্যে ২৬ বছর বয়সী এক নার্সকে অপহরণের পর গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোগা জেলায় গত রবিবার ওই তরুণীকে অপহরণ করা হয়। এর দুদিন পর অর্ধচেতন অবস্থায় একটি চলন্ত গাড়ি থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় তাকে। পাটিয়ালায় এক তরুণীর গণধর্ষণ ও আত্মহত্যার ঘটনাকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট রাজ্যে 'ধর্ষণ সংস্কৃতি' চলছে বলে মন্তব্য করার পর এ ঘটনা ঘটল। সূত্র : বিবিসি, এএফপি, জিনিউজ।

No comments

Powered by Blogger.