সার কারখানা স্থাপনে সহায়তা দেবে চীন- প্রধানমন্ত্রী বেজিং যাচ্ছেন ১৭ মার্চ

বাংলাদেশে একটি সার কারখানা স্থাপনে সহায়তা দেবে চীন। প্রসত্মাবিত এই সার কারখানাটির নাম হবে হযরত শাহজালাল (র) সার কারখানা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফরে এ ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে একটি ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট স্বারিত হবে।
এছাড়া ষষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের সহায়তা নিয়েও দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বারের কথা রয়েছে। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতে সহযোগিতা সংক্রানত্ম একাধিক চুক্তি ও এমওইউ স্বারের কথা রয়েছে। তিনদিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১৭ মার্চ চীন যাচ্ছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের এপ্রিলে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং জাইচির ঢাকা সফরের সময় সার কারখানা স্থাপনে বাংলাদেশকে সহায়তা দেয়ার কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরকে সামনে রেখে সম্প্রতি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে এ ব্যাপারে একটি সুনির্দিষ্ট প্রসত্মাব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে চীনা সরকারের সঙ্গে সার কারখানা স্থাপনে সহায়তা নিয়ে একটি ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট স্বারিত হবে।
সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, আর্থিক বিনিয়োগ ও সহযোগিতা, বিদু্যত উৎপাদন, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিনিময় নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়টিও প্রাধান্য পাবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকতর্া জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বারের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সফর নিয়ে আনত্মঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পরই সেগুলো চূড়ানত্ম করা হবে। তিনি জানান, সফরকালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ েেত্র সহযোগিতা বাড়ানো, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও শিল্পেেত্র সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে। তবে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ় করার সুযোগ হিসেবে আমরা এই সফরকে দেখছি। সূত্র জানায়, দুই দেশের বৈঠকে ঢাকার শেরেবাংলানগরে ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে আনত্মর্জাতিক মানের প্রদর্শনী কেন্দ্র স্থাপন ছাড়াও একটি সার কারখানা এবং বাংলাদেশ-চীন ষষ্ঠ মৈত্রী সেতু নির্মাণ নিয়ে আলোচনা হবে। চীন ইতোমধ্যে এসব স্থাপনা নির্মাণে বাংলাদেশকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। ১৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী চীনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেও পরদিন ১৮ মার্চ থেকে তাঁর আনুষ্ঠানিক সফর শুরম্ন হবে। সফরকালে তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট হু জিন তাও, প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সরকারী নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে দু'দিনের বৈঠকের পর তিনি বেসরকারী খাতের শীর্ষনেতৃবৃন্দের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। তিনি সেখানে চারদিন অবস্থান করবেন। চীনা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে ইয়াঙ্গুন হয়ে কুনমিং পর্যনত্ম ত্রিদেশীয় সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানাবেন।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন থেকে ত্রিদেশীয় সড়ক নির্মাণের কথা হলেও মিয়ানমারের কারণে উদ্যোগটি পিছিয়ে রয়েছে। মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি সড়ক সংযোগ স্থাপনে রাজি হলেও ত্রিদেশীয় সড়ক সংযোগে ততটা আগ্রহী নয়। ইয়াঙ্গুন-বেজিং কূটনৈতিক সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে ঢাকা-ইয়াঙ্গুন-কুনমিং ত্রিদেশীয় সড়ক সংযোগ স্থাপনে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য চীনের প্রতি অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ। এছাড়া বাংলাদেশে বিদু্যত উৎপাদন ও পরমাণু বিদু্যত কেন্দ্র স্থাপনে চীনের সহযোগিতা চাওয়া হবে। এর আগে পরমাণু শক্তির শানত্মিপূর্ণ ব্যবহারে সহযোগিতা দিতে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারকও স্বারিত হয়।
গত পাঁচ বছরে দুই দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কোন সফর হয়নি। ২০০৫ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাসে চীনা প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও ঢাকা সফর করেছিলেন। সে সময় দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক শক্তির শানত্মিপূর্ণ ব্যবহার, আর্থ-সামাজিক খাতে সহযোগিতা, বেসামরিক বিমান পরিবহন, ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ স্থাপন, পানি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর উন্নয়নসহ নয়টি েেত্র চীনের সঙ্গে চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও বিনিময়পত্র স্বারিত হয়।

No comments

Powered by Blogger.