চাঁপাইয়ে পালিয়ে থাকা দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার গুলিতে হত

 দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার হাফিজুর রহমান শাহীন (২৪) বুধবার গভীর রাতে পলাতক অবস্থায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিবির সহকমর্ীদের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে।
সে ছাত্রলীগ কমর্ী ফারম্নক হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। সোমবর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সশস্ত্র সঙ্গীদের নিয়ে নৃশংস তা-ব চালিয়ে ছাত্রলীগ কমর্ী ফারম্নক হোসেনকে খুন এবং একাধিক ছাত্রলীগ কমর্ীর হাত পায়ের রগ কেটে জখম করে। শিবির নেতা শাহীন গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে এসে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যপুর গ্রামের মফিজুল ইসলাম তানুর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সূত্র মতে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃশংসতার পর সশস্ত্র শিবির ক্যাডারদের একটি বড় অংশ (১৭/১৮ জন) অস্ত্রসহ জামায়াত শিবিরের অভয়াশ্রম হিসেবে চিহ্নিত জেলার একাধিক স্থানে আশ্রয় নেয়। এই দলের সঙ্গে আসা হাফিজুর রহমান শাহীন স্থানীয় জামায়াত নেতা মফিজুল ইসলাম তানুর বাড়িতে এসে আশ্রয় নিলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শুধু হাফিজুর রহমান শাহীন নয়, তার সঙ্গে আরও একাধিক সশস্ত্র শিবির ক্যাডার এই বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। জামায়াত নেতার বাড়িটি এলাকায় জামায়াত-শিবিরের গোপন ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ বুধবার গভীর রাতে মফিজুল ইসলাম তানুর বাড়ি ঘেরাও করে। পুলিশের অবস্থান বুঝতে পেরে সশস্ত্র শিবির ক্যাডাররা পালিয়ে যাবার চেষ্টা চালায়। এ সময় ঘেরাও করা বাড়ির মধ্যে এক রাউন্ড গুলির আওয়াজ হয়। গুলির শব্দ পেয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়ে পুলিশ বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শিবিড় ক্যাডার হাফিজুর রহমান শাহীনকে পড়ে থাকতে দেখে। পুলিশ সুপার জনকণ্ঠকে বলেন, শিবির ক্যাডার শাহীন পুলিশের হাতে ধরা পড়লে অনেক গোপন খবর ও অস্ত্রভা-ারের তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় অন্য সশস্ত্র শিবির ক্যাডাররা তাদের সঙ্গীকে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলি করে পালিয়ে যাওয়া সশস্ত্র শিবির ক্যাডারদের সংখ্যা ৩/৪ জন হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঘটনার পর পুলিশ বাড়ির মালিক জামায়াত নেতা মফিজুল ইসলাম তানু ও তার ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র শিবির নেতা মাহফুজকে গ্রেফতার করেছে।
মাহফুজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারী কলেজ ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি। পুলিশের ধারণা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃশংসতার ভয়াল রাতে সশস্ত্র শিবির ক্যাডারদের সঙ্গে মাহফুজও থাকতে পারে।
এদিকে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাথী শিবির ক্যাডারদের হাতে নিহত শাহীনের নেতৃত্বে শতাধিক বহিরাগত শিবির ক্যাডার সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশনের কাছে জড়ো হয়। পরে তার নেতৃত্বে একটি গ্রম্নপ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে পড়ে আবাসিক হলগুলোতে ভয়াবহ তা-ব চালায়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র সংঘর্ষে নেতৃত্ব দেয় শাহীন। নিহত শিবির নেতা শাহীনের বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচন্ডি গ্রামের পূর্ব পাড়ায়। তার পিতা আব্দুল মান্নান পলস্নী বিদু্যতের কর্মচারী। রাজশাহী সরকারী কলেজ শাখার শিবিরের সাবেক সভাপতি শাহীন। এ ছাড়াও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ২৬নং ওয়ার্ড ছাত্র শিবির সভাপতির দায়িত্বে থাকা অবস্থাও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তান্ডব চালিয়েছিল। নিহত শিবির ক্যাডার শাহীন।
শাহীনের লাশ জেলা সদর হাসপাতালে ময়নাতদনত্ম শেষে গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে পুলিশ জামায়াত নেতা মফিজুল ইসলাম তানু ও তার ছেলে শিবির ক্যাডার মাহফুজসহ চার জনের নামে মামলা করেছে শাহীণ হত্যাসহ একাধিক অভিযোগ এনে।

No comments

Powered by Blogger.