কক্সবাজারে থার্টিফার্স্ট নাইট- খালি নেই হোটেল-মোটেল কক্ষ by আব্দুল কুদ্দুস

৩১ ডিসেম্বর ২০১২। বছরের শেষ দিন উদ্যাপনে পর্যটেকরা এখন কক্সবাজারমুখী। দেশি-বিদেশি পর্যটকের পদভারে মুখর হয়ে উঠছে সমুদ্রসৈকত। ওই দিন হোটেলগুলোতে থাকছে নানা আয়োজন। ইতিমধ্যে অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউসের কক্ষ।
বছরের শেষ দিন ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশ থেকে লোকজন সৈকতে ছুটে আসেন। গত বছর ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ উদ্যাপনের জন্য এই সৈকতে প্রায় তিন লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটেছিল। এবারও তাই আশা করছেন হোটেল মালিকেরা। বিপুলসংখ্যক মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
পর্যটকদের বিনোদন সেবায় নিয়োজিত ট্যুরিজম প্রতিষ্ঠান বে অব বেঙ্গল গ্রুপের পরিচালক তোফায়েল আহমদ বলেন, কক্সবাজারে এখন দিনে ৫০ থেকে ৬০ হাজার পর্যটক অবস্থান করছেন। এখন দৈনিক পাঁচ হাজার পর্যটক জাহাজে করে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যাচ্ছেন। সেখানে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত সব হোটেলকক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার জানান, ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ অনুষ্ঠান হচ্ছে সৈকতের সবচেয়ে বড় উৎসব। শহরের চার শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস বাংলোর সব কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। এসব হোটেলে প্রতিদিন গড়ে ৮৮ হাজার মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
গত মঙ্গলবার বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, হাজার হাজার পর্যটকে ভরপুর সৈকত। শীত উপেক্ষা করে শান্ত সমুদ্রে নেমে পড়েছেন বহু পর্যটক। কেউ আবার বালুচরে দাঁড়িয়ে সাগরের গর্জন আর সূর্যাস্ত উপভোগ করছেন।
ঢাকার খিলগাঁও থেকে আসা পর্যটক জহিরুল ইসলাম (৩৮) বলেন, ‘পুরোনো বছরের শেষ সূর্যটাকে এই সৈকতে দাঁড়িয়ে বিদায় জানাব। আর নতুন ২০১৩ সালের প্রথম সূর্যকে বরণ করতে সপরিবারে কক্সবাজার ছুটে এসেছি। এর আগে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন দ্বীপ, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, টেকনাফের ঐতিহাসিক মাথিনেরকূপ ও ডুলাহাজারার সাফারি পার্কে যাব।’
সমুদ্রসৈকতের হোটেল-মোটেল জোন, কলাতলী, তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস, সি-গাল, লং-বিচ, সি-প্যালেস, আন্তর্জাতিক চেইন রেস্টুরেন্ট কেএফসিসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থার্টিফার্স্ট নাইটের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। রংবেরঙের আলোকসজ্জায় হোটেল-মোটেল জোন এলাকার চেহারা পাল্টে যাচ্ছে।
কেএফসি রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক মো. নাসির আহমদ বলেন, ‘থার্টিফার্স্ট নাইট উৎসব পালনের জন্য যাঁরা এখানে ভ্রমণে আসেন, তাঁদের উল্লেখযোগ্য অংশ কেএফসির সেবা নেন। এবার তাঁদের জন্য নানা খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি বিনোদনের আয়োজনও থাকবে।’
জানা যায়, তারকা মানের হোটেল ওশান প্যারাডাইস, সি-গাল, লং-বিচ, কক্স টুডে হোটেল কর্তৃপক্ষ দেশি-বিদেশি তারকাদের নিয়ে থার্টি ফার্স্ট নাইট কনসার্টের আয়োজন করছে। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে এসব অনুষ্ঠান। এ ছাড়া সমুদ্রসৈকতে বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আয়োজন করছে ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট বিচ কানসার্ট’। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল এই অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে। দেশের নামী ব্যান্ডদল কনসার্টে অংশ নেবে।
এ দিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ সুপার মো. আজাদ মিয়া বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উদ্যাপনসহ ভ্রমণে আসা পর্যটকের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশসহ একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সৈকতে লাখো মানুষের সমাগম সামাল দেওয়া হবে। প্রয়োজনে কয়েক দিন আগে থেকে শহরের প্রবেশদ্বার এবং সৈকতে নামার ফটকে পুলিশের বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.