মিরপুরে ঝড় তুললেন জিয়া

ব্রায়ান লারাও জিয়ার এই ইনিংসটি দেখলে সূক্ষ্ম ঈর্ষা অনুভব করতেন। চারদিনের ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে ১৫টি ছয়ের মার ! এও কী সম্ভব ! প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের রেকর্ডপত্র ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, ক্যারিবীয় বরপুত্র ব্রায়ান লারা প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৫০১ রানের যে ঐতিহাসিক ইনিংসটি খেলেছিলেন তাতে ৭২টি বাউন্ডারি থাকলেও, ছয়ের মার ছিল ১০টি।
বিসিএল এখনো আইসিসির কাছ থেকে প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা পায়নি। তবে বিসিবি আবেদন করলেই তা পেয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি ধরে নিলে জিয়ার এই ১৫টি ছয়ের মার অবশ্যই স্থান পেতে যাচ্ছে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের রেকর্ড বইয়ে।
জিয়ার এই অসাধারণ ইনিংসই প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চলকে বাঁচিয়ে দিয়েছে অল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জা থেকে। তাঁর ১১৮ বলে ১৫২ রানের দানবীয় এক ইনিংসের ওপর ভর করে বিসিএলে প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে তুলেছে ৩৪৩ রান। ১৯৮ রানে ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সাত নম্বরে ব্যাট করা জিয়া প্রথমে রুবেল হোসেন এবং পরে মুরাদ খানকে সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সংগ্রহকে নিয়ে যান সম্মানজনক জায়গায়। জিয়াউর রহমানের ইনিংসে ১৫টি ছয় ছাড়াও ছিল সাতটি চারের মার।
সকালে টসে জিতে দক্ষিণাঞ্চলকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল মধ্যাঞ্চল। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি দক্ষিণাঞ্চলের। দলীয় ১১ রানেই সৌম্য সরকার ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। ৪৭ রানে ফেরেন দারুণ ফর্মে থাকা এনামুল হক। অপর উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস আউট হন ৪২ রানে। মিথুন আলী ৩৭ ও তুষার ইমরান ৩৭ রান করে বিপর্যয় সামাল দিলেও তা দলের ‘স্বাস্থ্যকর’ সংগ্রহের জন্য যথেষ্ট ছিলনা। ফজলে মাহমুদ করেন ২৫ রান। দক্ষিণাঞ্চলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা যখন নিজেদের ইনিংসকে টেনে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন, ঠিক তখনই ব্যাট হাতে নেমে মিরপুরে ঝড় বইয়ে দেন জিয়া। তিনি সাত নম্বরে ব্যাট করে ১১৮ বলে ১৫২ রান করে অপরাজিত থাকেন। সপাটে ব্যাট চালিয়ে মধ্যাঞ্চলের বোলারদের তুলোধুনো করে তিনি স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ১৫২ রান। জিয়াকে মোটামুটি সঙ্গ দেন রুবেল হোসেন। তিনি ১৫ রান করেন। সোহাগ গাজীও করেন ১৫ রান। মুরাদ খান ২৫ বল খেলে ‘শূন্য’ রান করলেও তাঁর ইনিংসটি ছিল দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। মুরাদ এক দিক দিয়ে ঠেকা দিয়ে জিয়াকে ব্যাট ঘোরানোর স্বাধীনতা দেন। শেষের উইকেটে ৯৩ রান যোগ করে জিয়া আর মুরাদ দক্ষিণাঞ্চলের সংগ্রহকে নিয়ে যান সম্মানজনক স্তরে।
মধ্যাঞ্চলের বামহাতি স্পিনার মোশাররফ হোসেন ৫২ রানে তুলে নেন ৫ উইকেট। তিনি মিথুন আলী, তুষার ইমরান, ফজলে মাহমুদ, সোহাগ গাজী এবং রবিউল ইসলামের উইকেট। মোশাররফের পাশাপাশি শাহাদাত হোসেন ২টি এবং তালহা যুবায়ের, ইলিয়াস সানি ও মেহরাব হোসেন জুনিয়র তুলে নেন ১টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল ৩৪৩ (প্রথম ইনিংস,৭৩ ওভার)
জিয়াউর রহমান ১৫২*, ইমরুল কায়েস ৪২
মোশাররফ হোসেন ৫/৫২
শাহাদাত ২/৬৮, তালহা ১/৩১
মেহরাব হোসেন জুনিয়র ১/২৩
টস: ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল

No comments

Powered by Blogger.