দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে তদন্ত কমিশন গঠন

নয়াদিল্লিতে চলন্ত বাসে মেডিকেল ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল ভারত শান্ত হয়ে আসছে। ইন্ডিয়া গেট ও রাইসিনা হিল এলাকায় জারি করা ১৪৪ ধারা শিথিল করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ওই দুই এলাকায় যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক।
নয়টি ব্যস্ততম মেট্রো রেলস্টেশন গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ওই ছাত্রীর অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।
ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার এবং ভুক্তভোগী নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি প্যানেল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম গতকাল নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের জানান, মন্ত্রিপরিষদ একটি তদন্ত কমিশন অনুমোদন করেছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি উষা মেহরা কমিশনের নেতৃত্ব দেবেন। দিল্লি পুলিশের অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখবে কমিশন। এ ছাড়া ভুক্তভোগী নারীর নিরাপত্তায় কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, কমিশনকে সে ব্যাপারে একটি প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে কমিশন।
চিদাম্বরম বলেন, ‘অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির বিষয়টি আমরা সবচেয়ে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। কোনো ভুলের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে কি না, তা শনাক্ত করে করণীয় নির্ধারণেরও চেষ্টা চলছে। প্রয়োজনে বিদ্যমান আইনের সংশোধন করতে পারি আমরা।’
ভারতের অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, নারীদের নিরাপত্তায় আরও কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে সবার কাছ থেকে, বিশেষ করে নারীদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণে সরকার প্রস্তুত।
১৬ ডিসেম্বর রাতে দক্ষিণ দিল্লিতে চলন্ত বাসে উত্তরাখন্ডের ২৩ বছর বয়সী ওই ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হন। পরে দুর্বৃত্তরা ওই ছাত্রী ও তাঁর ছেলেবন্ধুকে মারধর করে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয়। দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মেয়েটির চিকিৎসা চলছে।
ধর্ষণের শিকার মেয়েটির অবস্থার অবনতি: ধর্ষণের শিকার মেয়েটির অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। তাঁর হূৎস্পন্দন কমে গেছে; কমেছে রক্তচাপও। ইতিমধ্যে তিনি একবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় এখনো তাঁকে কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। অবস্থা পর্যবেক্ষণে বেসরকারি হাসপাতালগুলো থেকে জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত সোমবার রাতে তাঁর নতুন করে রক্তক্ষরণ শুরু হলে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
পুলিশ-সদস্যের মৃত্যুতে তদন্তের ঘোষণা: ইন্ডিয়া গেটে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত পুলিশ-সদস্য সুভাষ টোমারের (৪৭) মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করার ঘোষণা দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীদের হামলায় সুভাষ আহত হন। পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের বক্তব্য, বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করতে গিয়ে ওই পুলিশ-সদস্য রাস্তায় হঠাৎ পড়ে যান। তাঁকে কেউ আঘাত করেনি কিংবা তিনি পদদলিতও হননি। বিবিসি ও পিটিআই।

No comments

Powered by Blogger.