অল্পস্বল্প ‘রুশ জিএমের প্রশংসা পেয়েছি’

দিল্লিতে সদ্য শেষ হওয়া এশিয়ান স্কুল দাবার অনূর্ধ্ব-৯ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফাহাদ রহমান। এটা তার জন্য ভবিষ্যতে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা।
দেশে ফিরে সেসব নিয়েই কথা হলো বাংলাদেশের এই খুদে দাবাড়ুর সঙ্গে
 তুমি তো খুব ভালো করেছ দিল্লিতে। টুর্নামেন্টটা নিয়ে কিছু বলো...
ফাহাদ রহমান: টুর্নামেন্টটা আমার খুব ভালো লেগেছে। আমি ভালো রেজাল্ট করেছি। তিনটি বিভাগে খেলা হয়েছে, আমি দুটিতে প্রথম, মানে সোনা জিতেছি। একটিতে ব্রোঞ্জ।
 তিনটি বিভাগে খেলা হয়েছে বললে, সেটা কেমন?
ফাহাদ: একটা হলো র‌্যাপিড খেলা, এটা ১৫ মিনিট হয়। স্ট্যান্ডার্ড বিভাগের খেলা দেড় ঘণ্টা, ব্লিচ বিভাগে ৩ মিনিট। আমি স্ট্যান্ডার্ড আর ব্লিচে গোল্ড পাই। এই তিনটি বিভাগ মিলিয়েই আমি আমার গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। স্ট্যান্ডার্ডে ৯ ম্যাচে সাড়ে সাত পয়েন্ট, ছয় রাউন্ডের ব্লিচে সাড়ে পাঁচ পয়েন্ট এবং র‌্যাপিডে ছয় রাউন্ডে পাঁচ পয়েন্ট পাই আমি।
 তাহলে তো টুর্নামেন্টে তোমার দিকে সবারই দৃষ্টি ছিল। এত ছোট তুমি, নার্ভাস লাগেনি?
ফাহাদ: না, এবার নার্ভাস লাগেনি। বরং আমার খুব ভালো কেটেছে সময়টা। সবচেয়ে বড় কথা, আমি একজন রাশিয়ান জিএমকে হারিয়েছি। এ জন্যও অনেক আনন্দ পেয়েছি।
 কোন রুশ জিএমকে হারিয়েছ? তার সঙ্গে খেলার সুযোগ পেলে কীভাবে?
ফাহাদ: রুশ জিএম আলেক্সান্দার ফামিনি দিল্লিতে এসেছিলেন প্রশিক্ষণের কাজে। তিনি কিছু খেলোয়াড়কে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। মজা করতে করতে খেলোয়াড়দের ডেকে বলতেন, যে আমাকে হারাবে তাকে আমি কফি খাওয়াব। ৩৫ জনকে তিনি হারান, ৩৬তম হিসেবে আমি তাঁকে হারিয়ে দিই। তিনি আমাকে কফি খাওয়াননি। বলেছেন পরে খাওয়াবেন। তবে আমার অনেক প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, ঠিকভাবে খেলে গেলে আমি একদিন গ্র্যান্ডমাস্টার হতে পারব।
 কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কায় এশিয়ান যুব দাবার অনূর্ধ্ব-১০ বিভাগে খেলে তুমি ১৫তম হয়েছিলে। ওই টুর্নামেন্টটা খারাপ হয়েছিল কেন?
ফাহাদ: ওইবারই আমি প্রথম বিদেশ যাই। একটু নার্ভাস ছিলাম। তাই ভালো করতে পারিনি। প্রথম প্রথম বিদেশ গেলে এই রকম হয় শুনেছি।
 দিল্লিতে তো তোমার বয়সী অনেক দাবাড়ু এসেছে। কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছে?
ফাহাদ: সেভাবে কারও সঙ্গে হয়নি। আমি আমার খেলা নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতাম। তা ছাড়া কারও সঙ্গে যে বন্ধুত্ব করব, ভাষা তো বুঝতাম না। অনূর্ধ্ব-৯ বিভাগে নয় দেশের ৫৬ জন এসেছে। আমি খেলেছি চীন, উজবেকিস্তান, মিসর, দুবাই, ভারত, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কার দাবাড়ুদের সঙ্গে।
 সামনে তোমার লক্ষ্য কী?
ফাহাদ: সামনে এশিয়ান যুব অনূর্ধ্ব-১০ বিভাগে খেলব। খেলাটা দুবাইতে হবে শুনছি। কবে হবে জানি না। যেদিনই হয়, আমি চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সেটাই এখন আমার বড় টার্গেট। এ জন্য একটা আইপ্যাড দরকার আমার।
 তোমার এখন আইপ্যাড নেই?
ফাহাদ: না, নেই। দিল্লিতে দেখলাম সবাই আইপ্যাড ব্যবহার করে। এখন তো ল্যাপটপ সব সময় বহন করা যায় না। সমস্যা হয়। তার জন্য আইপ্যাড হলে খুব ভালো হবে আমার জন্য। আর একটা ইচ্ছা আছে আমার, আমি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই। উনি আমাকে একটু সহযোগিতা করলে ভবিষ্যতে আমি আরও ভালো করব।

No comments

Powered by Blogger.