কোচিংয়ের দায়ে ১৬ শিক্ষকের সাজা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোচিং-বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকদের শাস্তি দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। সবার আগে রাজধানীর শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৬ জন শিক্ষক সাজা পেলেন। তাঁদের চলতি বছরের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'পরিচালনা পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোচিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৬ জন শিক্ষকের বার্ষিক বেতন বাড়ানোর কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। সব প্রতিষ্ঠানেই কোচিংবাজ শিক্ষক রয়েছেন। তবে কেউ এখন পর্যন্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের প্রতিষ্ঠানই একসঙ্গে এতজন শিক্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করেছে।' কোচিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের যেসব শিক্ষক শাস্তি পেয়েছেন তাঁরা হলেন- নিজাম উদ্দিন কালাম, আবুল কালাম আজাদ, সুভাষ চন্দ্র পোদ্দার, কলিম মোর্শেদ, মোফাজ্জল হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন, রফিকুল ইসলাম, আবদুর রশীদ, দেলোয়ার হোসেন, গোলাম মোস্তফা, নুরুল আমীন (২), মাসুদ হাসান, আলী মূর্তাজা, আজিজুর রহমান, রুকনুজ্জামান রতন ও হাসান মালিক। এর মধ্যে কলিম মোর্শেদ, মোয়াজ্জেম হোসেন প্রতিষ্ঠানটির বনশ্রী শাখার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। বাকি সবাই মতিঝিল শাখায় কর্মরত।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রায় দুই মাস আগে কোচিং ব্যবসায় যেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। তদন্তে এসব শিক্ষকসহ মোট ২৮ জনকে কোচিংবাজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে মতিঝিল আইডিয়ালের ১৬ জন শাস্তি পেলেন।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম দুলু কালের কণ্ঠকে বলেন, কোচিংয়ে জড়িত থাকার জন্য ১৬ শিক্ষকের বেতন বাড়ানো বন্ধ করা হয়েছে- এটা একটা মেসেজ। তবে এভাবে কোচিং বন্ধ করা যাবে না। এর জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নোমান উর রশীদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কোচিংয়ের বিরুদ্ধে একটি নীতিমালা রয়েছে। সে অনুযায়ী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোচিংবাজ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। এটা শুভ লক্ষণ।'
এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোচিংয়ের বিরুদ্ধে নীতিমালা জারি করে। সেই নীতিমালায় বলা হয়, কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং করাতে পারবেন। আর অন্য প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ১০ জন শিক্ষার্থীকে পড়ানো যাবে। কিন্তু এ নিয়ম শিক্ষকরা মানেননি। এর পরেই মাউশি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে। তদন্তে সত্যতা পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিঠি দিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।

No comments

Powered by Blogger.