মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার- আযাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনলেন সাক্ষী

জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সদস্য (রুকন) পলাতক আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের আরও দুজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁদের একজন বলেছেন, একাত্তরে আযাদসহ চার-পাঁচজন তাঁর দুই ভাইয়ের স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছিলেন।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ গতকাল রাষ্ট্রপক্ষের ১৩তম সাক্ষী এক নারী ও চতুর্দশ সাক্ষী বিনোদ চন্দ্র বিশ্বাস সাক্ষ্য দেন। নিরাপত্তার স্বার্থে ১৩তম সাক্ষীর ‘ক্যামেরা ট্রায়ালে’ সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এ সময় এজলাসে বিচারক, দুই পক্ষের নির্দিষ্টসংখ্যক আইনজীবী, আসামি ও ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তা ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
এরপর ১৪তম সাক্ষী জবানবন্দিতে বলেন, তাঁর বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার নতিবদিয়া গ্রামে। একাত্তরে তাঁর বয়স ছিল ২২ বছর। একাত্তরের এপ্রিলের শেষ দিকে পাকিস্তানি সেনারা ফরিদপুরে ঢোকার সময় জগবন্ধু আশ্রমে আটজন সাধুকে গুলি করে হত্যা করে। একাত্তরের ৬ জুন (পরে বলেন ৮ জুন) বাচ্চু রাজাকার (আবুল কালাম আযাদ) ৮-১০ জনকে নিয়ে গুলি করতে করতে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় বাড়ির সব পুরুষ পাশের পাটখেতে লুকিয়ে পড়েন। বাচ্চু রাজাকার ও তাঁর সঙ্গীরা বাড়ির সব নারীকে ঘিরে ফেলেন। বাচ্চু রাজাকারসহ চার-পাঁচজন তাঁর দুই বৌদিকে (ভাইয়ের স্ত্রী) ধর্ষণ করেন। পরে বাচ্চু সঙ্গীদের নিয়ে বাড়ি লুট করে নিয়ে যায়।
সাক্ষী বলেন, ওই ঘটনার পর তাঁর ওই দুই বৌদি আরও ২০টি পরিবারের সঙ্গে ভারতে চলে যান।
এই মামলার কার্যক্রম আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।
সাঈদীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন আজ শেষ করার নির্দেশ: জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগের বিষয়ে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলামকে এ নির্দেশ দেন।
দিনের কার্যক্রম শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে বলেন, তাঁদের আরও তিনটি অভিযোগ, রাজাকার বাহিনী ও কয়েকটি নথির বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন বাকি আছে। ট্রাইব্যুনাল বলেন, এসব বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন বৃহস্পতিবারের মধ্যে শেষ করতে হবে। সাঈদী এ সময় আসামির কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.