শীতে কাঁপছে দেশ- ০ আরও পাঁচজনের মৃত্যু- ০ শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে- ০ বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্তঅব্যাহত শৈত্যপ্রবাহের কারণে কাঁপছে সারাদেশ। অসহনীয় শীতের কবলে পড়ে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। নিম্নআয়ের ও দরিদ্র মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা হয়ে পড়ছে বিপর্যস্ত। মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুও চরম কষ্টের শিকার হচ্ছে। তীব্র শীতের কারণে এ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ছে। হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। অনেক এলাকায় কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে আলুতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। খড়কুটো জ্বালিয়ে মানুষকে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে। শীতজনিত রোগে সারাদেশে নতুন করে ৫ জনের মৃতুর খবর পাওয়া গেছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বর্তমানে সারাদেশের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। তা আগামী আর ক’দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবে কত দিন পর্যন্ত এ শৈত্যপ্রবাহ চলতে পারে এমন এক প্রশ্নের জবাবে এক কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, প্রথম শৈত্যপ্রবাহ শেষ হওয়ার পর আবার শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে তা মাঝারি অথবা তীব্র হতে পারে। তবে এখনও এ ব্যাপারে নিশ্চিত কিছু বলা সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। শৈত্যপ্রবাহ মৃদু হলে শীত এত বেশি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দিনের বেলা সূর্যতাপ না থাকায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। সাধারণত দিনের বেলা সূর্যের তাপের কারণে তাপমাত্রা ২০ থেকে ২২ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠার কথা। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রীর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। এ কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। বর্তমানে বেশি শীত অনুভূত হলেও তা স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে বলে তিনি জানান। ঢাকা আবহাওয়া অধিদফতরের ঘূর্ণিঝড় সতর্কী কেন্দ্রের উপপরিচালক শাহ আলম জনকণ্ঠকে বলেন, এবারের শৈত্যপ্রবাহ ৮ ডিগ্রী তাপমাত্রার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। তবে শৈত্যপ্রবাহ ওঠানামার কারণে কখনও তা মৃদু থেকে মাঝারি পর্যায়ে নেমে আসে। তিনি বলেন, ওঠানামার কারণে শৈত্যপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করলে তা বেশি দিন স্থায়ী হবে না বলে উল্লেখ করেন। স্টাফ রিপোর্টার দিনাজপুর থেকে জানান, অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহ ও অসহনীয় শীতের কবলে পড়ে হিমালয়ের পাদদেশের দিনাজপুরের মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ৮ শতাধিক শিশু ও বয়স্করা শীতজনিত রোগের শিকার হয়েছে। নিম্ন ও অসহায় মানুষের ভোগান্তি চরমে। হিমালয়ের কোলঘেঁষা এ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়েছে। শিশু ও বয়স্করা শীতজনিত নানা রোগে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। নিম্নআয়ের মানুষ ও গরিব অসহায় মানুষ বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। সূর্যের মুখ দেখা যায় না। জীবনযাত্রা থমকে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টি পড়ায় শীতের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে। জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। রবিবার এ তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রী। ঘন কুয়াশার কারণে রাতে এবং সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাস্তায় তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না। দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। গত ৩ দিনে জেলার ১৩টি উপজেলায় প্রায় ৩শ’ শিশু এবং বয়স্ক পুরুষ ও মহিলারা শীতজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগে ভর্তির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। কুড়িগ্রাম থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, টানা শৈত্যপ্রবাহে জেলার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠা-া ও হিমেল হাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়েছে জেলার হতদরিদ্র ১০ লাখ মানুষ। বৃষ্টির মতো টপ টপ করে কুয়াশা ঝরছে। মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুগুলোও চরম কষ্টে পড়েছে। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আইরীন (দেড় মাস), মুক্তা (১ দিন) ও তাহমিন (১ দিন) নামের তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২০ জনে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৪ জন। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তীব্র শীতের কারণে এ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে। নীলফামারী থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, প্রচ- শৈত্যপ্রবাহ নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলের আট জেলায় আছন্ন হয়ে পড়ছে। মঙ্গলবার দিনব্যাপী এ শৈত্যপ্রবাহ তীব্র থেকে আরও তীব্রতর হয়েছে। ফলে তীব্র শীতে থর থর করে কাঁপছে এই জনপদ। লেপ কম্বল চাপিয়েও শীত নিবারণ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। শীতের কারণে মানুষজন ঘর ছেড়ে বাইরে বেরুতে পারছে না। রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে গেছে। কৃষি জমিতে কাজ করতে পারছেন না কৃষকরা। শ্রমজীবী মানুষেরা শীতের কারণে কাজ করতে না পেরে অর্ধাহারে দিনযাপন করছেন। জীবন বাঁচাতে এসব মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। রাজধানীসহ রাজশাহী, খুলনার মধ্যে চলাচলকৃত দূরপাল্লার বাস ও আন্তঃনগর ট্রেনের সিডিউল ভেঙ্গে পড়েছে। নির্ধারিত সময়ের ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা দেরিতে ট্রেন ও বাস চলাচল করছে। শীতের কারণে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শীতবস্ত্রের অভাবে চরম কষ্টে আছে দরিদ্ররা। নতুন করে শৈত্যপ্রবাহ বিস্তৃতি লাভ করায় কুঁকড়ে গেছে মানুষ ও গবাদিপশু। অনেক এলাকায় কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে আলুতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। নিজস্ব সংবাদদাতা লালমনিরহাট থেকে জানান, জেলায় শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ে জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। ক’দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাসে যবুথবু অবস্থা। গত ২৪ ঘণ্টায় শীতজনিত রোগে দু’শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শৈত্যপ্রবাহের কারণে দিনমজুর শ্রেণীর মানুষ কাজে যেতে পারছে না। মঙ্গলবার জেলায় সবচেয়ে কম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। শীতজনিত রোগে হাসপাতালগুলোতে শ্বাসকষ্টে, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে। নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, জেলায় হিমশীতল শৈত্যপ্রবাহের মাত্রা বেড়েছে। কনকনে শীতে জনপ্রাণী কাহিল হয়ে পড়েছে। আকাশে সূর্য দেখা গেলেও রোদের কোন তাপ নেই। নিজস্ব সংবাদদাতা মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা থেকে জানান, তীব্র শীতে এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ছিন্নমূল মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। বেড়ে গেছে শীতজনিত রোগ-ব্যাধি। গত ২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সূর্যের আলোর দেখা মেলেনি। দিনভর ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ার চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে। শীতের তীব্রতার কারণে কৃষি কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকদের বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। এদিকে শীতের তীব্রতার কারণে হাওড়ের জেলেরা মাছ না ধরার কারণে বাজারে মাছের দাম বেড়েই চলছে। তাছাড়া শীতে কাজ না করায় হাওড় এলাকার নিম্নআয়ের মানুষদের উপার্জন কমে গেছে।

অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহের কারণে কাঁপছে সারাদেশ। অসহনীয় শীতের কবলে পড়ে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। নিম্নআয়ের ও দরিদ্র মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা হয়ে পড়ছে বিপর্যস্ত।
মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুও চরম কষ্টের শিকার হচ্ছে। তীব্র শীতের কারণে এ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ছে। হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। অনেক এলাকায় কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে আলুতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। খড়কুটো জ্বালিয়ে মানুষকে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে। শীতজনিত রোগে সারাদেশে নতুন করে ৫ জনের মৃতুর খবর পাওয়া গেছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বর্তমানে সারাদেশের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। তা আগামী আর ক’দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবে কত দিন পর্যন্ত এ শৈত্যপ্রবাহ চলতে পারে এমন এক প্রশ্নের জবাবে এক কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, প্রথম শৈত্যপ্রবাহ শেষ হওয়ার পর আবার শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে তা মাঝারি অথবা তীব্র হতে পারে। তবে এখনও এ ব্যাপারে নিশ্চিত কিছু বলা সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। শৈত্যপ্রবাহ মৃদু হলে শীত এত বেশি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দিনের বেলা সূর্যতাপ না থাকায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। সাধারণত দিনের বেলা সূর্যের তাপের কারণে তাপমাত্রা ২০ থেকে ২২ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠার কথা। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রীর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। এ কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। বর্তমানে বেশি শীত অনুভূত হলেও তা স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে বলে তিনি জানান।
ঢাকা আবহাওয়া অধিদফতরের ঘূর্ণিঝড় সতর্কী কেন্দ্রের উপপরিচালক শাহ আলম জনকণ্ঠকে বলেন, এবারের শৈত্যপ্রবাহ ৮ ডিগ্রী তাপমাত্রার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। তবে শৈত্যপ্রবাহ ওঠানামার কারণে কখনও তা মৃদু থেকে মাঝারি পর্যায়ে নেমে আসে। তিনি বলেন, ওঠানামার কারণে শৈত্যপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করলে তা বেশি দিন স্থায়ী হবে না বলে উল্লেখ করেন।
স্টাফ রিপোর্টার দিনাজপুর থেকে জানান, অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহ ও অসহনীয় শীতের কবলে পড়ে হিমালয়ের পাদদেশের দিনাজপুরের মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ৮ শতাধিক শিশু ও বয়স্করা শীতজনিত রোগের শিকার হয়েছে। নিম্ন ও অসহায় মানুষের ভোগান্তি চরমে। হিমালয়ের কোলঘেঁষা এ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়েছে। শিশু ও বয়স্করা শীতজনিত নানা রোগে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। নিম্নআয়ের মানুষ ও গরিব অসহায় মানুষ বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। সূর্যের মুখ দেখা যায় না। জীবনযাত্রা থমকে দাঁড়িয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টি পড়ায় শীতের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে। জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। রবিবার এ তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রী। ঘন কুয়াশার কারণে রাতে এবং সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাস্তায় তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না। দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। গত ৩ দিনে জেলার ১৩টি উপজেলায় প্রায় ৩শ’ শিশু এবং বয়স্ক পুরুষ ও মহিলারা শীতজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগে ভর্তির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।
কুড়িগ্রাম থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, টানা শৈত্যপ্রবাহে জেলার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠা-া ও হিমেল হাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়েছে জেলার হতদরিদ্র ১০ লাখ মানুষ। বৃষ্টির মতো টপ টপ করে কুয়াশা ঝরছে। মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুগুলোও চরম কষ্টে পড়েছে। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আইরীন (দেড় মাস), মুক্তা (১ দিন) ও তাহমিন (১ দিন) নামের তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২০ জনে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৪ জন। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তীব্র শীতের কারণে এ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে।
নীলফামারী থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, প্রচ- শৈত্যপ্রবাহ নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলের আট জেলায় আছন্ন হয়ে পড়ছে। মঙ্গলবার দিনব্যাপী এ শৈত্যপ্রবাহ তীব্র থেকে আরও তীব্রতর হয়েছে। ফলে তীব্র শীতে থর থর করে কাঁপছে এই জনপদ। লেপ কম্বল চাপিয়েও শীত নিবারণ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। শীতের কারণে মানুষজন ঘর ছেড়ে বাইরে বেরুতে পারছে না। রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে গেছে। কৃষি জমিতে কাজ করতে পারছেন না কৃষকরা। শ্রমজীবী মানুষেরা শীতের কারণে কাজ করতে না পেরে অর্ধাহারে দিনযাপন করছেন। জীবন বাঁচাতে এসব মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। রাজধানীসহ রাজশাহী, খুলনার মধ্যে চলাচলকৃত দূরপাল্লার বাস ও আন্তঃনগর ট্রেনের সিডিউল ভেঙ্গে পড়েছে। নির্ধারিত সময়ের ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা দেরিতে ট্রেন ও বাস চলাচল করছে। শীতের কারণে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শীতবস্ত্রের অভাবে চরম কষ্টে আছে দরিদ্ররা। নতুন করে শৈত্যপ্রবাহ বিস্তৃতি লাভ করায় কুঁকড়ে গেছে মানুষ ও গবাদিপশু। অনেক এলাকায় কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে আলুতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে।
নিজস্ব সংবাদদাতা লালমনিরহাট থেকে জানান, জেলায় শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ে জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। ক’দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাসে যবুথবু অবস্থা। গত ২৪ ঘণ্টায় শীতজনিত রোগে দু’শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শৈত্যপ্রবাহের কারণে দিনমজুর শ্রেণীর মানুষ কাজে যেতে পারছে না। মঙ্গলবার জেলায় সবচেয়ে কম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। শীতজনিত রোগে হাসপাতালগুলোতে শ্বাসকষ্টে, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে।
নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, জেলায় হিমশীতল শৈত্যপ্রবাহের মাত্রা বেড়েছে। কনকনে শীতে জনপ্রাণী কাহিল হয়ে পড়েছে। আকাশে সূর্য দেখা গেলেও রোদের কোন তাপ নেই।
নিজস্ব সংবাদদাতা মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা থেকে জানান, তীব্র শীতে এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ছিন্নমূল মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। বেড়ে গেছে শীতজনিত রোগ-ব্যাধি। গত ২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সূর্যের আলোর দেখা মেলেনি। দিনভর ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ার চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে। শীতের তীব্রতার কারণে কৃষি কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকদের বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। এদিকে শীতের তীব্রতার কারণে হাওড়ের জেলেরা মাছ না ধরার কারণে বাজারে মাছের দাম বেড়েই চলছে। তাছাড়া শীতে কাজ না করায় হাওড় এলাকার নিম্নআয়ের মানুষদের উপার্জন কমে গেছে।

No comments

Powered by Blogger.