দেড় বছর পার হলেও শেষ হয়নি পুনর্নির্মাণ

২০০৭ সালের বন্যায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা-বড়খাতা সড়কে চিলাখালের ওপর নির্মিত সেতুটি দেবে যায়। পরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
দেড় বছর আগে সেতুটির পুনর্নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এখনো নির্মাণকাজ শেষ করেননি।
দেবে যাওয়া ওই সেতু দিয়েই বিভিন্ন যানবাহনে করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হাতীবান্ধা উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষ।
এলজিইডির হাতীবান্ধা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২০০৭ সালের বন্যায় সেতুটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন সেতুর একটি অংশ দেবে যায়। এরপর এলজিইডি কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ভারী যান চলাচল বন্ধ করে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। পরে ২০১০ সালে সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এক কোটি ৯৫ লাখ ১৫ হাজার ৯২২ টাকা ব্যয়ের ওই সেতুটির নির্মাণকাজ পায় কুড়িগ্রামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১১ সালের ৮ জুলাই সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু মেয়াদের দেড় বছর পার হলেও নির্মাণকাজের সিংহভাগই এখনো পর্যন্ত হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর পাশে দুটি পিলার নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুর উত্তর পাশে প্রায় ১০০ গজ দূরে একটি টিনের চালা পড়ে রয়েছে। স্থানীয় লোকজন জানান, ঠিকাদারের লোকজনের থাকার জন্য ঘরটি তৈরি করা হয়। এখন তাদের কেউই নেই। ছয়-সাত মাস ধরে সেতুর নির্মাণকাজও বন্ধ রয়েছে। তাঁরা অভিযোগ করেন, ঠিকাদারের উদাসীনতা আর এলজিইডির তদারকির অভাবে নির্মাণকাজে কোনো অগ্রগতি নেই।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সরেজমিনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীর সঙ্গেও একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁর মুঠোফোনের সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতি সপ্তাহে শনি ও বুধবার বসে হাতীবান্ধা উপজেলা হাট। হাটবারগুলোতে বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্য নিয়ে ব্যবসায়ীরা ঝুঁকিপূর্ণ ওই সেতু পার হয়ে হাটে যান। সেই সঙ্গে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মানুষ তাদের কৃষি পণ্য বিক্রি করতে ওই হাটে যান। তা ছাড়া সেতুর ওপর দিয়ে প্রায় ১০টি গ্রামের লোকজন বিভিন্ন কাজে হাতীবান্ধা উপজেলা সদরে যেতে হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল আলীম জানান, হাতীবান্ধা হাট হচ্ছে উপজেলার অন্যতম প্রধান হাট। তিন বছর আগে হাটসংলগ্ন এই সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সব ধরনের ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তাই বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী সরাসরি ট্রাকে করে হাটে আনা-নেওয়া করা যাচ্ছে না। সেতু থেকে এক কিলোমিটার দূরে ট্রাক থেকে পণ্যসামগ্রী খালাস করার পর তা অন্য ছোট যানবাহনে করে হাটে নিতে হয়। ফলে ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে এলজিইডির হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকৌশলী মিজানুর রহমান সরদার বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণে প্রয়োজনী অর্থ বরাদ্দ না থাকায় অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। তার পরও আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অসমাপ্ত কাজ শুরুর ব্যাপারে যোগাযোগ করে যাচ্ছি।’

No comments

Powered by Blogger.