সব প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করুন- হতাহত পোশাকশ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ

গত ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনস নামের পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে যেসব শ্রমিক নিহত ও আহত হয়েছেন, এক মাস পরেও তাঁদের সবাই ক্ষতিপূরণ পাননি বলে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা দুঃখজনক। কোনো কারণেই এত বিলম্ব বাঞ্ছিত নয়।
১১১ জন নিহত শ্রমিকের মধ্যে ১৪ জনের কোনো আত্মীয়স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে। নিহত ৪৫ জন শ্রমিকের স্বজনেরা ক্ষতিপূরণের জন্য দাবি করেছেন, কিন্তু তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা এখনো সম্পন্ন না হওয়ায় তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাননি। ৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪৩ জন নিহত শ্রমিকের স্বজনদের ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রদান করার পর আরও কয়েকজনের স্বজনদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু এ পর্যন্ত মোট কতজন নিহত শ্রমিকের স্বজনেরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য বিজিএমইএ জানাতে পারেনি বলে মঙ্গলবারের প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আর সেই অগ্নিকাণ্ডে মোট কতজন শ্রমিক আহত হয়েছেন, সেই তথ্য কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ৪৭ জন আহত শ্রমিককে এক লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। আরও ২৭ জনকে দু-এক দিনের মধ্যেই দেওয়া হবে। যাঁদের এখনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি, তাঁরা আসেননি বলেই দেওয়া হয়নি—এমন কথা বলা হয়েছে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে। আহত শ্রমিকেরা এক মাসেও ক্ষতিপূরণ নিতে আসেননি—এমন কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
ক্ষতিপূরণ প্রদানের পুরো প্রক্রিয়াটি অগোছালো ও আন্তরিকতাহীন বলে মনে হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে যেসব পরিবার স্বজন হারিয়েছে, তাদের মানসিক অবস্থা উপলব্ধি করে অতি দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। সে জন্য পরিচয় নিশ্চিত করাসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া অত্যন্ত দ্রুত সম্পন্ন করতে বাড়তি তৎপরতার প্রয়োজন ছিল। যদিও স্বজন হারিয়ে তারা যে ক্ষতির শিকার হয়েছে, তা সত্যিকার অর্থে পূরণ হওয়ার নয়, তবু স্বজনহারা মানুষদের দুঃখ লাঘবে কথায় সমবেদনা প্রকাশের থেকে বেশি কার্যকর হতো, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁদের হাতে ক্ষতিপূরণের অর্থ তুলে দেওয়া।
আর বিলম্ব না করে দ্রুত ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন করাসহ সব প্রক্রিয়া শেষ করে সবার ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়া হোক।

No comments

Powered by Blogger.