সিরাজগঞ্জে নদীভাঙনে ৫০০ বসতভিটা বিলীন, বাঁধে ধস

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার যমুনা নদীর পশ্চিম তীরের বাহুকা এলাকা থেকে পাঁচঠাকুরী গ্রাম পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে এসব এলাকার ৫০০ বসতভিটা বিলীন ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৩০০ মিটার ধসে পড়েছে।
ভাঙন অব্যাহত থাকায় নদীর বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৩০ মিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক শ পরিবার আশ্রয় নেওয়ার জায়গা না পেয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, বরাদ্দ না থাকায় বর্তমানে ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিকল্প বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে স্থায়ীভাবে তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু করার জন্যও ঠিকাদারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাউবো সিরাজগঞ্জ কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নদীভাঙনে ৩০০ মিটার ধসে পড়ায় বাঁধের ওপর দিয়ে মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ভাঙনে গৃহহারা মানুষ বাঁধের এক প্রান্তে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকেই এলাকা ছেড়ে গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাঁধে আশ্রয় নেওয়া লোকজন অভিযোগ করেন, পাউবোর নিয়ন্ত্রণাধীন বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে অনেক জায়গা পড়ে থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সেখানে ঘর তুলতে দিচ্ছেন না। তাঁরা ঘরপ্রতি ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে দাবি করছেন। এ কারণে তাঁরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সিরাজগঞ্জ স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক জহুরুল হক বলেন, ‘যাঁরা বাঁধে ঘর তুলতে টাকা দাবি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছি।’
পাউবোর সিরাজগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল চন্দ্র শীল জানান, ধসে যাওয়া বাঁধের পশ্চিমে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ দশমিক ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিকল্প বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ বছরেই কাজ শুরু করা হবে। বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে অসহায় পরিবারের সদস্যদের ঘর তুলতে বাধা দেওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ঘর তোলার জন্য টাকা দাবি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.