আইবিএ আন্তবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক- যুক্তি তর্কে সেরা by রাকিব মোজাহিদ

চলছে বিতর্ক। তা-ও আবার ‘সংসদ’ বসিয়ে। তর্কে উপস্থিত আছেন প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সরকারদলীয় সাংসদ, বিরোধীদলীয় নেতা ও সাংসদেরা। পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে চলেছেন সরকারি দল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেডিং সোসাইটি (ডিইউডিএস) এবং বিরোধী দল ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
এক জম্পেশ লড়াইয়ের পর চ্যাম্পিয়ন হয় ডিইউডিএস।
আইবিএ কমিউনিকেশন ক্লাবের আয়োজনে ১ থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোট ৩৯টি দল অংশ নেয় এই প্রতিযোগিতায়। এই উৎসবের সহযোগিতায় ছিল প্রথম আলো।
আয়োজনের চূড়ান্ত পর্বে বিতর্কের বিষয় ছিল ‘কঠোর আইন-ই পারে ইন্টারনেট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর যথেচ্ছ ব্যবহার রোধ করতে’। পুরস্কার বিতরণ শেষে বিতর্কে জয়ী দল ডিইউডিএসের তিন বিতার্কিক বেরিয়ে আসছেন। আলাপচারিতায় উঠে এল তিন বিতার্কিক গাজী মূয়ীদুর রহমান, জিহাদ আল মেহেদী ও ওমর ফারুক ফাহিমের বিতর্ক-জীবনের আদ্যোপান্ত। দীপ্তিমান এই তিন মুখের মধ্যে বেশি আলো ছড়াচ্ছেন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী গাজী মূয়ীদুর রহমান।
‘ডিইউডিএসের হয়ে এটি প্রথম শিরোপা আমার।’ এ কথা বলতে বলতে হাতের ট্রফিটা উঁচিয়ে দেখাচ্ছিলেন গাজী মূয়ীদুর রহমান। আলাপে যুক্ত হলেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক ফাহিম। ‘আমার এ নিয়ে দলীয় অর্জন চার। আর ব্যক্তিগত...’ বলতে গিয়ে চোখ ফেরালেন আরেক সঙ্গী জিহাদ আল মেহেদীর দিকে। শুরু করলেন আবার, ‘নিজের ছোট ঢাকটা পেটানোর আগে অন্যের ঢাকটা একটু পিটিয়ে নিই। মেহেদী ব্যক্তিগতভাবে বারোয়ারি বিতর্কেই ট্রফি পেয়েছে ১৩টি। আর আমার মাত্র ছয়টি। দলীয় অর্জন বেশি মেহেদীর।’ আমাদের সবার চোখ তখন মেহেদীর দিকে, এতগুলো ব্যক্তিগত অর্জনের কারণ জানার আশায়। তিনি বলেন, ‘আমি বড় হয়েছি বাগেরহাটে। সেখানে বিতর্কের পরিসর এত বিস্তৃত নয়। তাই ইচ্ছে থাকলেও খুব বেশি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারতাম না। ঢাকায় প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখানে প্রচুর বিতর্কের আয়োজন করা হয়। ফলে অংশ নেওয়ার সুযোগও বেশি। তাই অর্জনও একটু বেশি।’ এ কথায় সায় দিলেন ওমর ফারুক ফাহিম। বললেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা, ‘হ্যাঁ, সুযোগটা আমাদেরও কম ছিল। আমাদের হাতেই তো চাঁদপুর ডিবেটিং মুভমেন্টের সূচনা। শুরুতে আমি ছিলাম এর সাধারণ সম্পাদক।’
‘আমার চিত্রটা একটু ভিন্ন। আমার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। বিতর্ক করার সুযোগ অনেক পেয়েছি। কিন্তু আমার বাবা ছিলেন সংগীতশিল্পী। তাই গানের প্রতিও ঝোঁক ছিল। এখন হলে থেকে আর গানের চর্চা করা যায় না। তাই বিতর্কটাই করি।’ যুক্ত করলেন গাজী মূয়ীদুর রহমান।
হাঁটতে হাঁটতে শুনছিলাম তাঁদের বিতর্ক-জীবনের কথা। মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে আইবিএ ভবন পেরোতে পেরোতে এসব কথা হচ্ছিল বিতার্কিকদের সঙ্গে।
আইবিএ গেট দিয়ে বেরোতেই শীত বেশ বড়সড় একটা ঝাঁকুনি দিল আমাদের। তখন ঘড়িতে রাত নয়টা। সময় অনেক পেরিয়ে গেছে ইতিমধ্যে। তখন যে যার গন্তব্যে ফেরার তাড়া।

No comments

Powered by Blogger.