সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারই অপরাধমুক্তির উপায়- কুষ্টিয়ায় তিন খুন

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম দুই সঙ্গীসহ মঙ্গলবার নিহত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্বশত্রুতার জের ধরে চরমপন্থীরা তাঁদের হত্যা করেছে। যেকোনো হত্যাই উদ্বেগজনক। কিন্তু এখানে বড় হয়ে উঠেছে হত্যার ধরন।


প্রকাশ্যে নৌকার ওপর শতযাত্রীর মাঝখানে গুলি করেই ঘাতকেরা ক্ষান্ত হয়নি, নিহতদের গলা কেটে মাথা নিয়ে গেছে।
পুলিশের ভাষ্যমতে, সাবেক গণবাহিনীর সদস্য এই ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে এলাকার চরমপন্থীদের বিরোধের কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। গত ৫ জানুয়ারি র‌্যাবের ক্রসফায়ারে কুঠিপাড়াচরে মোতালেব নামের একজন নিহত হয়। চেয়ারম্যানকে হত্যা সে ঘটনার প্রতিশোধ বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কারও বিরোধ থাকতেই পারে। তাই বলে এভাবে প্রকাশ্যে দুই সহযোগীসহ তাঁকে হত্যা করার দুঃসাহস কীভাবে পেল ঘাতকেরা? দেশে কি আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছু নেই? চরমপন্থীদের দৌরাত্ম্যের কারণে সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলও জোরদার থাকার কথা। একসময় এলাকাটি সন্ত্রাসী ও চরমপন্থীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল। আবারও সেই ভয়ংকর অবস্থা ফিরে আসুক, তা কারও কাম্য হতে পারে না।
যেকোনো মূল্যে ঘাতকদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। চরমপন্থী বা যে অপরাধ চক্রের সদস্যই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব সরকারেরই। বিভিন্ন নামে পরিচালিত এসব চরমপন্থীর কোনো রাজনৈতিক দর্শন নেই। গ্রামে গ্রামে ডাকাতি এবং মানুষকে জিম্মি করে অর্থ আদায়ই তাদের কাজ। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থে কেউ যাতে চরমপন্থীদের ব্যবহার করতে না পারে, সে ব্যাপারেও এলাকাবাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সজাগ থাকা প্রয়োজন।
আমবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং তাঁর দুই সহযোগী হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত হোক, অপরাধীদের বিচার হোক—এটাই আমাদের দাবি। ক্রসফায়ার বা বিচারবহির্ভূত হত্যা যে অপরাধ দমনের পথ নয়, সেই সত্যও সরকারকে বুঝতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.