কুড়িগ্রামে দুধকুমোর নদে ব্যাপক ভাঙন

কুড়িগ্রামে দুধকুমোর নদের দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কারণে গত দুই সপ্তাহে এলাকার ৫০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে।ভাঙনের মুখে পড়েছে রসুলপুরে অবস্থিত বন্যার্তদের আশ্রয়কেন্দ্র। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


আতঙ্কে এলাকার অনেক মানুষ ঘড়বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়রে রসুলপুর ভাঙন-কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। নদের পারে বসে ছিলেন মাজেম আলী (৮১)। কিছুক্ষণ পরপর নদের পার ভেঙে বিকট শব্দ করছে। মাজেম আলী শিউরে উঠছেন। পার থেকে তাঁর বাড়ি মাত্র ২০ হাত দূরে।
কাছে গিয়ে বসে থাকার কারণ জানতে চইিলে বলেন, ‘নদীটা হামার জীবন তছনছ করি দিলো।’ তিনি জানান, ১০ বছর আগে বাড়ি ছিল নদীর ওই পারে। জমি ছিল, ছিল গোয়ালভরা গরু। কিন্তু ভাঙনে সব শেষ হওয়ার পর এ পাড়ে আসেন। এখন এখানেও ভাঙন চলছে। ভাঙনের হুমকিতে থাকা আশ্রয়কেন্দ্রের অবস্থান নেওয়া আবদুর রশিদ (৩২) জানান, ১৫ দিন আগে বাড়ি ভেঙে যাওয়ার পর এখানে আশ্রয় নেন। নদ দ্রুত এগিয়ে আসছে। দু-এক দিনের মধ্যে সরে যেতে হবে। কোথায় যাবেন যানতে চাইলে বলেন, ‘ওপারে প্রথম আলো চরে যেতে হবে। নিজের কোনো জমিজমা নেই। অন্যের কাছে জমি নিয়ে বাড়ি উঠাব।’
মোন্নাফ আলী পেশায় দিনমজুর। এক সপ্তাহ আগে বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ফ্লাড সেন্টারটি ভাঙনের মুখে পড়ায় আমরা বিপদে পড়েছি। এখন কোথায় যাব ঠিক করিনি।’ স্থানীয় ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য তহিদুল ইসলাম বলেন, নদীভাঙা মানুষগুলো খুব কষ্টে আছে। তাঁরা সামান্য কিছু সহযোগিতা করেছেন।
চেয়ারম্যান আবদুল মালেক বলেন, বিষয়টি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন। কুড়িগ্রাম সদরের ইউএনও মো. কাজী আবেদ হোসেন জানান, ভাঙন এলাকা দেখে এসে বিষয়টি তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছেন। ভাঙনরোধে তারা ব্যবস্থা নেবে।

No comments

Powered by Blogger.