আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে

বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে।বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার আয়োজিত আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন।


রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি।
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, বিকল্প কোনো পন্থায় নির্বাচন হবে না। সংসদ থাকবে, সাংসদেরা থাকবেন, মন্ত্রীরা থাকবেন—এমন কোনো অবস্থায় নির্বাচন হবে না। সেই নির্বাচন হলে বিএনপি তাতে অংশ নেবে না। নির্বাচন হতে দেবে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যতই বলুক, তাদের অধীনে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।
স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল ১৯ আগস্ট। কিন্তু ঈদের কারণে বিলম্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করেছে সংগঠনটি। গতকালের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান। আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যে ভাষায় কথা বলবে, আমরা সেই ভাষায় জবাব দেব।’ তিনি সেভাবে প্রস্তুতি নিতে সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে। তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। ভারতসহ সব দেশের সঙ্গে বিএনপি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায়। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করে নয়, নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে দাবি আদায়ের মাধ্যমে জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। জনগণের ভোটে ক্ষমতায় যেতে পারবে না বলেই সংবিধান সংশোধন করে দলীয় সরকারের অধীনে সংসদে থেকেই পুনরায় নির্বাচন দিতে চায় আওয়ামী লীগ। এটা কীভাবে সম্ভব?’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি চোখ বন্ধ করে রাখেন, নাকি উটপাখির মতো চোখ বন্ধ করে ঘুমান।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি কর্মসূচি দিয়েছে। অনেকে বলছেন, এ কেমন কর্মসূচি। আমি বলব, আমরা আওয়ামী লীগের মতো লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ পিটিয়ে হত্যা করে ক্ষমতায় যেতে চাই না।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করেছিল, বিএনপি কঠোর কর্মসূচি দেবে। আর সরকারি দল রাস্তায় মারামারি করে বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেবে। এটা হবে না।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে। সবখানে দলীয়করণ। মেধার কোনো গুরুত্ব নেই। সরকারি দলের কর্মী-সমর্থকেরাই কেবল চাকরি-ব্যবসার সুযোগ পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা দুর্নীতি করছেন।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এলডিপির সভাপতি অলি আহমদ, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল বারী প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.