বিএনপির আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়েছে ॥ হানিফ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, জনগণের স্বার্থ না থাকায় বিএনপির আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিএনপির আন্দোলনে জনগণের কোন সাড়া নেই বলেই তাঁরা আন্দোলন থেকে পিছু হটছেন।


বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহালের দাবিকে ‘মামার বাড়ির আবদার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনির্বাচিত কোন ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে না। উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে জাতীয় সংসদে অসাংবিধানিক ব্যবস্থা (তত্ত্বাবধায়ক) বাতিল করা হয়েছে, তা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।
রবিবার বিকেলে রাজধানীর শিশু একাডেমী মিলনায়তনে শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
‘আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচন করবে’ মর্মে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ একতরফা কোন নির্বাচন করতে চায় না। সকল দলের অংশগ্রহণে জনগণের রায় নিয়েই ক্ষমতায় যেতে চায় আওয়ামী লীগ। কোন ষড়যন্ত্রে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না। ষড়যন্ত্র আর বন্দুকের নলে ক্ষমতায় যাওয়ার ইতিহাস বিএনপির রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানই প্রথম বন্দুকের নলে ক্ষমতা দখল করেছিলেন এবং তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়াই ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন।
‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় পরিকল্পিতভাবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের জড়ানো হচ্ছে’ মর্মে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলামের দেয়া বক্তব্যের জবাবে হানিফ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যখন জাতির পিতাকে হত্যা করা হয় তখন আমরা বলেছিলাম এ হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তখন তারা মিথ্যা বলে অভিহিত করলেও পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুুনী রশিদ, কনেল ফারুকের স্বীকারোক্তিতে পরিষ্কার হয়েছে, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেই পরিকল্পিতভাবেই এ হত্যাকা- ঘটানো হয়েছিল।
তিনি বলেন, ঠিক তেমনি একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলাও বিএনপি সরকার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ঘটিয়েছে, যা ইতোমধ্যেই মুফতি হান্নান ও সে সময়ের গোয়েন্দাবাহিনীর প্রধানের কথায় প্রমাণিত হয়েছে। গ্রেনেড হামলা নিয়ে বিএনপি নির্লজ্জ মিথ্যাচার করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, মিথ্যাচার করে কোনভাবেই এর দায় থেকে মুক্তি পাবেন না। যত বড় নেতাই হোন দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন ছাড় দেয়া হবে না।
গাজীপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিমিন হোসেন রিমির মনোনয়ন দেয়া প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, গাজীপুরের মানুষ এখনও তাজউদ্দীন সাহেবের পরিবারের প্রতি আস্থাশীল। জনগণ তাঁর পরিবারের সদস্যদের চায়। তিনি বলেন, সিমিন হোসেন রিমি এই বাংলার সাধারণ কোন ব্যক্তি নন। স্বাধীনতার কারিগর তাজউদ্দীনের মেয়ে। তিনি জš§লগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ পরিবারের। জš§ থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত।
আইন প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আন্দোলন করার মতো সাংগঠনিক শক্তি ও মনোবল কিছুই নেই। তারা তত্ত্বাধায়কের কথা বলে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে চায়। এ জন্য তারা মরণ কামড় দিবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ব্যবস্থা যখন একটি পরিণতির দিকে এগোচ্ছে তখন তারা এ বিচার ব্যবস্থাকে নস্যাত করার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্রই সফল হবে না। বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই।
ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক এম এ এইচ আবিদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি একেএম এনামুল হক শামীম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপি, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, বর্তমান সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম।

No comments

Powered by Blogger.