টেলিফোনে নাগরিক মন্তব্য-দুদককে সরকারের প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। দন্তহীন বাঘ, সরকারের পকেট কমিশন কিংবা দুর্নীতি দমনে মন্থর দুদকইত্যাদি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মতামত জানিয়েছেন পাঠকরা। সেখানে দুদকের কাজের ধরন নিয়ে তারা কথা বলেছেন, পরিস্থিতি
উত্তরণের পরামর্শ দিয়েছেন। গ্রন্থনা মাহফুজুর রহমান মানিক

নাজিম উদ্দিন শোভন
শিক্ষক, টাঙ্গাইল
দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তার সাংবিধানিক আইনে চলতে দেওয়া উচিত। এখানে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কেউ দুর্নীতি করলে দুদকের নিজস্ব আইনেই তার বিচার হবে।
জিয়া
ব্যবসায়ী, ঢাকা
দুর্নীতি বাংলাদেশে একটি বড় সমস্যা। দুদকে যারা থাকে তারা সরকারের নিয়োগকৃত লোক। সরকারের নিয়োগকৃত লোকেরা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না এটাই স্বাভাবিক। দুদকের প্রত্যেক কর্মকর্তা, বিশেষ করে দুদক প্রধানকে অবশ্যই একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি হতে হবে।
শুকলাল দেবনাথ
ব্যবসায়ী, নরসিংদী
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য গঠন করা হয়েছে দুদক। অথচ যারা এ কমিশন চালাচ্ছে তারা কতটা দুর্নীতিমুক্ত তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তারা যদি স্বচ্ছ না হয় কীভাবে দুর্নীতিমুক্ত করবে। দুদক সরকারের পকেটের কমিশন হয়ে গেছে।
ওমর ফারুক
চাকরিজীবী, ঢাকা
দুর্নীতি দমন কমিশন সরকারের একটি অংশ। আমরা দেখে আসছি সরকার দুর্নীতি করলেও দুদক নিশ্চুপ। সরকারের সাত খুন মাপ; অন্যদের বেলায় কেবল দুদক সরব। এভাবে দুর্নীতি দমন করা সম্ভব নয়।
সুমন
শিক্ষার্থী, নারায়ণগঞ্জ
দুর্নীতি দমন কমিশন যেখানে সরকারের অঙ্গ সংস্থা সেখানে সরকারের দুর্নীতি প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে প্রকাশ করবে?
মির্জা হুমায়ুন কবির
সাংবাদিক, মাদারগঞ্জ, জামালপুর
দুদকে যদি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে এর মাধ্যমে দুর্নীতি দমন সম্ভব হবে কীভাবে?
মহসীন জমদ্দার
শিক্ষার্থী, কাঁঠালিয়া, ঝালকাঠি, বরিশাল
দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। কমিশনে সৎ ও যোগ্য লোক দেখে নিয়োগ দিতে হবে।
শেখ মোহাম্মদ আলী
ব্যবসায়ী, তালতলা বাজার, মুন্সীগঞ্জ
দুর্নীতি দমন কমিশন তার কাজ সঠিকভাবে করতে পারছে না। এটি পদ্মা সেতুর দুর্নীতি সঠিক চিত্র দেখাতে পারেনি।
সাইমুন আল আমিন
ছাত্র, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম
দুদক ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে কাজ করছে। দুর্নীতি দমন করছে বলে মনে হয় না।
মো. শরিফুল ইসলাম খান
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
গণমাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়, সুরঞ্জিত, পদ্মা সেতু, সড়ক বিভাগ প্রভৃতির দুর্নীতির তদন্ত দুদক শুরু করেছে। কিন্তু এর শেষ খবর কী, তদন্তে কী এলো তা জানা যায় না। তদন্তের কথা শুনে আমরা একটু খুশি হই কিন্তু শেষ না দেখে হতাশ হই। তাহলে দুদকের তদন্ত কি কেবলই আইওয়াশ।
মো. আরিফ হোসেন
ব্যবসায়ী, নারায়ণগঞ্জ
আমাদের এখানে ভূমি অফিসসহ অন্য অফিসগুলো একেবারে দুর্নীতিগ্রস্ত। এখানে কাজ করাতে গেলে শত শত টাকা ঘুষ লাগে। দুদকের এগুলো দেখা উচিত।
ইঞ্জিনিয়ার মো. আবুল হাশেম
সরকারি কর্মকর্তা, কুমিল্লা
দুদক সম্পূর্ণ ব্যর্থ সংস্থা। সরকারের মধ্যে বেশি দুর্নীতি হয় সিভিল প্রশাসনে। অথচ এখানকার দুর্নীতির কোনো তদন্ত হয় না।
শাহ আলম
রাজনীতিবিদ, সিরাজগঞ্জ
দুদক যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে তার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। সরকারেরও দুদককে আরও ক্ষমতা দিতে হবে।
মোহাম্মদ সামি
শিক্ষার্থী, ঢাকা
দুদক দুর্নীতি দমনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এটি নামসর্বস্ব একটি কমিশন। এটি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যারা স্পষ্ট দুর্নীতিবাজ তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়নি।
মো. বজলুল হক সরকার
ব্যবসায়ী, উত্তরা, ঢাকা
দুর্নীতি দমনে দুদক যা করছে, তা ঠিক আছে।
মোহাম্মদ আলী
চাকরিজীবী, হাজারীবাগ রোড, ঢাকা
পদ্মা সেতুর ব্যাপারে দুদক আবুল হোসেনের কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি। অথচ তিনি দুর্নীতির কারণেই পদত্যাগ করলেন।
বেলাল
চাকরিজীবী, সিরাজগঞ্জ
দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদক কী ব্যবস্থা নেবে, যারা দুর্নীতি করে তারাই তো দুদকের চেয়ে শক্তিশালী। দুদককে শক্তিশালী করতে হবে এবং একে রাজনীতিমুক্ত রাখতে হবে।
কাজী আবুল আলী
অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী, মানিকগঞ্জ
বিদ্যুৎ দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ অফিস আমাদের কাছ থেকে টাকা খেয়ে বসে আছে, অথচ বিদ্যুৎ দেয়নি। দুদক কি এসবের তদন্ত করতে পারে না?
ওয়াহিদ মুরাদ
কবি, স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর
দুদক সবসময় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকুক। কোনোক্রমেই যেন দুদক কারও ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষা বা ক্ষমতার তোয়াজ না করে। সঠিক-যথাযথ নিরপেক্ষ অনুসন্ধান চালিয়ে প্রতিবেদন প্রদান করুক। অপরাধ যার যতটুকু তার দায়দায়িত্ব ঠিক ততটুকুই হোক।
ফেরদৌস জামান
কৃষক, বরুড়া, কুমিল্লা
দলিল করার জন্য রেজিস্ট্রি অফিসে কয়েক হাজার টাকা দিয়েছি, কিন্তু দলিল হয়নি। দুদক যদি স্থানীয় পর্যায়ে দুর্নীতির খবর রাখত।
রাজু মিয়া
চাকরিজীবী, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল
দুর্নীতি দমনে দুদক পুরোপুরি ব্যর্থ। লোক দেখানোর জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে তাদের কার্যক্রম দেখা যায়। জেলা বা থানা পর্যায়ে এর কোনো কার্যক্রম নেই।
মো. রমজান কলি
কণ্ঠশিল্পী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
দুর্নীতি দমন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন, পর্যাপ্ত লোকবল ও স্বাধীন প্রশাসনিক ক্ষমতা এবং সরকারের লেজুড়ভিত্তি হতে মুক্ত করতে হবে। সরকারের হস্তক্ষেপমুক্ত হলেই দুদক স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে।
এমএ লতিফ মজুমদার
অ্যাডভোকেট, সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকা
দুদক আসলে কাজের নয়। মামলা হয় আইওয়াশ। সরকার যা বলে তাই করে। শেয়ার কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু এ রকম কত কিছু হলো, দুর্নীতির দায়ে কাউকে ধরেনি।
ফারুক হোসেন
সাংবাদিক, ঢাকা
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে দুদককে অবশ্যই তার কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হবে।
তাপস হালদার
শিক্ষার্থী, উত্তরা, ঢাকা
দুদক মন্থরগতিতে চলছে। এভাবে চললে দুর্নীতিবাজরা আরও সোচ্চার হয়ে উঠবে। দুদককে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়নি।
মো. আতিকুর রহমান রনি
শিক্ষার্থী, তিতুমীর কলেজ
সরকারের এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুদক কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
মো. আলম নূর হেলালী
ব্যবসায়ী, কক্সবাজার
দেশের তিন বাহিনী_ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যেমন গোয়েন্দা লাগানো হয়, তেমনি দুদকের বিরুদ্ধেও যেন গোয়েন্দা লাগানো হয়।
মো. জহিরুল ইসলাম রায়হান
দুদককে দুর্নীতিমুক্ত হয়ে অভিযান করতে হবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে যেন দুদক কোনো কাজ না করে।
ফরিদ আহমেদ
ব্যবসায়ী, খুলনা
দুদক সরকারের কর্মচারী দ্বারা পরিচালিত হয় বলে সরকারের পক্ষেই কাজ করে। সবচেয়ে ভালো হয় কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা বিচারপতিদের মাধ্যমে যদি দুই বছরের জন্য দুদকের ক্ষমতা দেওয়া হয়।
জীবন চৌধুরী
ব্যবসায়ী, সিলেট
দুর্নীতি দমনে দুদক আসলে কোনো কাজই করছে না। দুর্নীতি বেড়েই চলেছে। দুদককে একটু সক্রিয় হয়ে এর তদন্ত চালাতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.