জাহাঙ্গীরনগর, বুয়েট ও মরণ কামড়ের পথ by স্বদেশ রায়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক ছাত্রের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তাদের বক্তব্য হলো, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন শুরু হয়েছিল জুবায়ের হত্যাকে কেন্দ্র করে। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের দাবি ছিল জুবায়ের হত্যার সঠিক তদন্ত ও সেটা বিচার বিভাগের আওতায় আনা। তাদের সে দাবি পূরণের পর সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ঘরে ফিরে গেছে।


এর পরে যে আন্দোলন হচ্ছে এর সঙ্গে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কোন সম্পর্ক নেই। কারণ, সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা চায় না কোন মতেই তাদের ক্লাস বন্ধ হোক। তাদের পড়াশোনা বিঘিœত হোক। দীর্ঘায়িত হোক তাদের শিক্ষা জীবন। এমনকি তাদের বক্তব্য হলো, এ বিষয়গুলো আমাদের থেকে আমাদের শিক্ষকদের বেশি বোঝা উচিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের মুষ্টিমেয় কয়েক শিক্ষক সেটা বুঝছে না। যার ফলে আমরা আমাদের শিক্ষা জীবন নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছি।
সমসাময়িক ছাত্রদের একের সঙ্গে আরেকের যোগ থাকে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রদের আরো বক্তব্য হলো, আমাদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ও বুয়েটে যা ঘটছে তার সঠিক তথ্য প্রচার হওয়া উচিত। মিডিয়া যা প্রচার করছে সেটা পুরো পুরো সঠিক নয়। কারণ জাহাঙ্গীরনগরে এখন কোন ছাত্র আন্দোলন চায় না। আন্দোলন করছে মুষ্টিমেয় কয়েক শিক্ষক। আর বুয়েটের অধিকাংশ ছাত্র আন্দোলন চায় না। তারা চায় তাদের নির্বিঘœ শিক্ষা জীবন। কিন্তু এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্ররা কতিপয় শিক্ষকের হাতে জিম্মি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবে আন্দোলন করছে ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষক। তাদের সঙ্গে সাধারণ ছাত্র ও শিক্ষকদের কোন যোগ নেই। বরং একটি বড় অংশ ছাত্র এই আন্দোলন পছন্দ করছে না। তাদের মতে কেন এ আন্দোলন হবে। কারণ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি যাকে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি সারাদেশে সম্মানীয় একজন ব্যক্তি। তাছাড়া তিনি নিজে যেমন মুক্তিযোদ্ধা, তার গোটা পরিবার মুক্তিযোদ্ধা। এ ধরনের এক ব্যক্তিকে ভিসি হিসেবে পাবার পরে সাধারণ ছাত্ররা সত্যিই গর্বিত। অন্যদিকে তিনি যে কতটা সৎ এবং গণতান্ত্রিক তার প্রমাণ তিনি ইতোমধ্যে রেখেছেন। তিনি দায়িত্ব নেবার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ভিসি প্যানেল নির্বাচন ঘোষণা করেছেন এবং এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট যে, আজীবন শিক্ষকদের দাবি দাওয়ার পক্ষে, দেশের গণতন্ত্রের পক্ষে, অনির্বাচিত ব্যক্তিদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হবার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। অতএব নিজে ক্ষমতা পেয়ে কখনই অনির্বাচিত হিসেবে থাকতে পারব না। নির্বাচন দেব। যদি বিজয়ী হই তাহলে ভিসি থাকব আর যদি বিজয়ী হতে না পারি চলে আসব। তবু নীতির বাইরে যাব না। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এই যে গণতান্ত্রিক আচরণ করছেন গত তিন বছরে বাংলাদেশের কোন ভাইস চ্যাঞ্চেলর সেটা করেননি। তাই স্বাভাবিকই ড. আনোয়ার হোসেনের এ সিদ্ধান্ত নেবার পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীর গর্বিত ও আনন্দিত হবার কথা ছিল এই ভেবে যে, তারা এমন একজন ভিসি পেয়েছেন যার ক্ষমতার প্রতি কোন মোহ নেই। ক্ষমতার প্রতি যাদের এমন বিন্দু মাত্র কোন মোহ থাকে না কেবল তারাই কিন্তু পারে সঠিক এবং বড় কাজ করতে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকগণ সেই সঠিক ও বড় কাজ করার মতোই ভিসি পেয়েছেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো মাত্র ২০-২৫ জন শিক্ষক তথাকথিত আন্দোলনের নামে তাকে সে কাজ করতে দিচ্ছেন না। এই বিশ পঁচিশ জন শিক্ষক যে কারা সে বিষয়ে যাবার আগে একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়। মাত্র কয়েকদিন আগে দৈনিক জনকণ্ঠে একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে আন্দোলনরত একজন শিক্ষক কিভাবে ভিসির মুখের ওপর আঙ্গুল তুলে কথা বলছেন। তিনি কি কথা বলেছিলেন সেটা ভাষার মাধ্যমে পত্রিকায় প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলেই রিপোর্টার লেখেননি। উপাচার্যের মুখের ওপর আঙ্গুল তুলে বিশ্রী ভাষায় গালি গালাজ করতে গেলে সে ব্যক্তিকে কোন পর্যায় থেকে আসতে হয় সেটা আর উল্লেখ করার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য হলো এরা আমাদের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তথাকথিত দলীয় রাজনীতির নামে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক করা হয়েছে। আর এই তথাকথিত রাজনীতির সুযোগ নিয়ে তারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঠিকই কিন্তু নিজের আসল চরিত্রটি ফেলে রেখে আসতে পারেননি। ওটা তাদের সঙ্গে থেকে গেছে। আর তারই বহির্প্রকাশ ঘটিয়েছে প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেনের মতো একজন মার্জিত, সম্মানিত ভদ্রলোকের সামনে। তথাকথিত আন্দোলনের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়কে যে শিক্ষকরা এতটা নিচে নামিয়ে আনছেন, সাধারণ ছাত্র ও সম্মানিত শিক্ষকদের মনে হয় এখন সময় এসেছে তাদেরকে বয়কট করা। তাছাড়া এই যে ২০ থেকে পঁচিশ জন শিক্ষক আন্দোলন করছেন এদের উদ্দেশ্যও অতি পরিষ্কার। এবং সেটা ইতোমধ্যে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এই বিশ পঁচিশজন শিক্ষকের ভিতর কয়েকজন বিএনপি, কয়েকজন ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগার ও কয়েকজন জামায়াতে ইসলামী। যারা বিএনপি তাদের আন্দোলনের কারণ অতি সহজ। তারা খুব সহজে হিসাব করে নিয়েছে তারা যদি এখন আন্দোলন করে, এই সরকারকে শিক্ষা খাতে সফল হতে না দেন তাহলে পরবর্তীতে তাদের দল ক্ষমতায় এলে অবশ্যই তাদেরকে পুরস্কৃত করবে। কারণ, তাদের নিজেদের দল সম্পর্কে তাদের খুব ভাল ধারণা আছে। তারা জানে তাদের দল ও নেত্রী বেগম জিয়া তাদেরকেই পুরস্কৃত করবেন যারা বিরোধিতার নামে দেশ ও জাতির ক্ষতি করেছিলেন। তাছাড়া বেগম জিয়ার পারিবারিক কালচার বলে, তিনি কখনই পড়াশোনাকে কোন গুরুত্ব দেন না। একাডেমিক শিক্ষা ছাড়াও এ দেশে অনেকে বিভিন্ন পেশায় অনেক বড় হয়েছেন। কিন্তু তাদের ব্যক্তি উদ্যোগে পড়াশোনা ছিল দৃষ্টান্তস্বরূপ। বেগম জিয়ার নিজের জীবনে সেটা দেখা যায় না। অন্যদিকে দুই সন্তানকে তিনি পড়াশোনা শেখানোর জন্য কিছুই করেননি। অথচ জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর থেকে বেগম জিয়ার দুই সন্তানের লেখা পড়া শেখানোর জন্য এরশাদ বিপুল অঙ্কের অর্থ সব সময়ই তাদের দিয়েছেন। কিন্তু বেগম জিয়া তাদের সাধারণ শিক্ষা বা উচ্চ শিক্ষা কোনটাই দেবার চেষ্টা করেননি। তাই যে সকল শিক্ষক তথাকথিত আন্দোলনের নামে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবন ধ্বংস করছেন তারা বেগম জিয়ার চোখে কোন অপরাধ করছেন না বরং বেগম জিয়া ক্ষমতায় গেল তারা পুরস্কৃত হবেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের যে সকল শিক্ষক আন্দোলন করছেন তাঁরা ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগার। তাদের মূল বক্তব্য হলো, বিএনপি আমলে আমরা আন্দোলন করেছি অতএব এখন আমরা সকল ক্ষমতা ভোগ করব। কেউ কেউ মনে করেন তাঁর ভিসি হওয়া উচিত। রবীন্দ্রনাথ তাঁর মায়ারা খেলার নৃত্য নাটে, রাজকন্যাকে ঘিরে সখীদেরকে দিয়ে গাইয়েছেন, সখী তোমার প্রেমে কাঁটা আছে। বাস্তবে আওয়ামী লীগের এই যে শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন তারা একটু নীরব হয়ে নিজের চারপাশে তাকালে দেখতে পাবেন অদৃশ্য সখীরা একই গান গেয়ে যাচ্ছেন, সখী তোমার প্রেমে কাঁটা আছে। কারণ চরিত্রের দিক থেকে তাদের সঙ্গে বিএনপির ওই শিক্ষকদের কোন পার্থক্য নেই। বিএনপির ওই শিক্ষকরা যেমন ভবিষ্যতে কিছু পাবার আসায় এখন আন্দোলন করছেন, আওয়ামী লীগের এই শিক্ষকদেরও মনের ভিতর সেই লোভের চাকাটি অবিরাম ঘোরে। এছাড়া আছে কিছু চৈনিক বাম ও জামায়াতে ইসলামী। চৈনিক বাম ও জামায়াতে ইসলামীদের ভিতর আসলে খুব একটা পার্থক্য নেই। অধিকাংশ চৈনিক বাম ও জামায়াতে ইসলামী শেষ বিচারে একই অবস্থানে গিয়ে দাঁড়ায়। জামায়াত ও বিএনপির দিকে তাকালে তার স্পষ্ট উদাহরণ পাওয়া যায়। এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু লেখার নেই।
সাধারণ ছাত্রদের, সাধারণ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু শিক্ষক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আন্দোলন করছেন এই আন্দোলনকে প্রশ্রয় দেবার কোন সুযোগ নেই। কারণ তারা আন্দোলন করছে মূলত কয়েক হাজার ছাত্রের শিক্ষাজীবনকে পুঁজি করে। অন্য দিকে তারা আন্দোলন করছেন ঠিক শিক্ষকদের ভাষায় নয়, শ্রমিকদের ভাষায়। সেটা লজ্জাকর। এ কারণে অবিলম্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক সমাজ ও ছাত্রদের একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, তারা কি কতিপয় শিক্ষকের ব্যক্তিস্বার্থের বলি হবে না উন্নত শিক্ষা জীবনের স্বার্থে এদেরকে প্রতিহত করবেন।
জাহাঙ্গীরনগরের পাশাপাশি এখন রাজধানীতে বুয়েটকে অচল করার একটি পাঁয়তারা চলছে। বুয়েটে কারা এ বিষয়ে আন্দোলন করছে তার বিস্তারিত রিপোর্ট বিভিন্ন সময়ে জনকণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে। ওই সব রিপোর্ট থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার যে, বুয়েটে যে শিক্ষকরা আন্দোলন করছে তাদের একটি বড় অংশ হিযবুত তাহরীর সঙ্গে জড়িত, বাকি অংশ জামায়াতে ইসলামী করে। এবং এই হিযবুত তাহরীর নেতা শিক্ষকদের অনুসারী রয়েছে কিছু ছাত্র যারা হিযবুত তাহরীরর সদস্য। ইতোপূর্বে হিযবুত তাহরীরের মূল নেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া এটা পরিষ্কার যে বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষক রয়েছে যারা হিযবুত তাহরীর করে। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় যে, দেশের প্রায় প্রতিটি সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন হিযবুত তাহরীর তাদের গোপন শাখা খুলেছে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্র এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। তারা সংখ্যায় খুবই কম। তবে তারা তাদের নেতাদের নির্দেশে আত্মাহুতি দিতেই প্রস্তুত। এবং এ সব তথ্য যে সত্য তার প্রমাণ ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার দেশের মানুষ দেখেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা হিযবুত তাহরীর নামে রাজপথে মিছিল করেছে। লিফলেট বিলি করেছে। এই রাজপথে লিফলেট বিলি করতে গিয়ে বুয়েটের কয়েক শিক্ষার্থী পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল, এদেরকে সেদিন যারা মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনে বুয়েটের সেই শিক্ষকরাই কিন্তু এখন আন্দোলন করছে। এছাড়া বুয়েটের আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে দেখা গেছে সেখানে জামায়াতে ইসলামীর এক নেতার মেয়ে যিনি বুয়েটের শিক্ষক তার মাধ্যমে রাতের বেলা ৮শ’ প্যাকেট উন্নত মানের খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।
তাই আজ বুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষকরা যাই বলুন না কেন, তাদের একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, এই আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি হিযবুত তাহরীর ও জামায়াত। এই হিযবুত তাহরীর ও জামায়াতের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু বর্তমানে কোন মতেই কোন বিশ্ববিদ্যালয় নয়। বুয়েটে তারা বিজয়ী হতে পারলে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা আন্দোলন শুরু করবে। তার গ্রাউন্ড ওয়ার্কও তারা ইতোমধ্যে শেষ করেছে। ডাকসু নির্বাচন দাবি, অনির্বাচিত ভিসির পদত্যাগ দাবি এ ধরনের কোন যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে তারা আন্দোলন শুরু করবে। শুধু যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা এ আন্দোলন ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা করবে তা নয়, সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানান প্রতিষ্ঠানে তারা নানান ধরনের আন্দোলন করবে। কারণ, এ দেশের প্রগতিশীল মানুষকে মনে রাখতে হবে, সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধী বিচার ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটার গোলাম আরিফ টিপু এক সেমিনারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, আগামী ডিসেম্বরের ভিতর কম পক্ষে চার যুদ্ধাপরাধীর বিচার শেষ হবে। গোলাম আরিফ টিপু যেমন বিষয়টি বুঝতে পারছেন তেমনি যুদ্ধাপরাধী পক্ষও বিষয়টি বুঝতে পারছে। তাই আগামী নবেম্বর অবধি তাদের মরণ কামড় দেবার সময়। এই মরণ কামড় দেবার জন্য বেগম জিয়ার নেতৃত্বে ইতোমধ্যে রোড মার্চ হয়েছে। তাতে সাড়া মেলেনি। রোডমার্চ শেষে সামরিক অভ্যুত্থান করার চেষ্টা করেছিল যে অভ্যুত্থানকে অনেকটা পরোক্ষভাবে জনসভায় দাঁড়িয়ে বেগম জিয়া সমর্থন করেছিলেন। সেটাও ব্যর্থ হয়েছে। এর পরে বিএনপির এক নেতার রহস্যজনক গুমের পর এ নিয়ে তারা রাজপথে আন্দোলন করার চেষ্টা করে সেটাতেও ব্যর্থ হয়েছে। তাই এখন তারা বাধ্য হয়ে মরণ কামড় দিতে নেমেছে। তাই বুয়েটের আন্দোলনকে সাধারণ কোন আন্দোলন হিসেবে দেখার কোন সুযোগ নেই। কারণ সেখানকার এক হিযবুত তাহরীর নেতা যিনি শিক্ষকও তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে লিখিতভাবে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তাছাড়া এই হিযবুত তাহরীর বিডিআর বিদ্রোহ হবার পর পরই দেশকে অস্থিতিশীল করতে নানান লিফলেট ছাড়ে। তাই যেখানে হিযবুত তাহরীর এবং জামায়াতে ইসলামী জড়িত সেটা যদি দেশের সচেতন মানুষ, দেশের মিডিয়া ও সরকার সহজভাবে দেখে তাহলে ভুল হবে। বরং মনে রাখা দরকার আগামী নবেম্বর অবধি তারা যে পথে এগুবে বুয়েট তার একটি সূচনা।

swadeshroy@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.