ভ্রূণের লিঙ্গ-পরিচয় পরীক্ষার দায়ে ভারতে ১২ চিকিৎসক বরখাস্ত

জন্মের আগে শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণী পরীক্ষা চালানোর অভিযোগে ভারতে ১২ জন চিকিৎসককে বরখাস্ত করা হয়েছে। রাজস্থান রাজ্যে এ ঘটনা ঘটে। মেয়ে শিশুর ভ্রূণ হত্যা ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের প্রবণতা বন্ধ করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের পরীক্ষা ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে গত সোমবার ওই চিকিৎসকদের বরখাস্ত করা হয়।


১৯৯৪ সালে প্রবর্তিত এ আইনে ভারতে জন্মের আগে শিশুর ভ্রূণের লিঙ্গ পরীক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মেয়ে শিশুর ভ্রূণ হত্যা রোধ করার লক্ষ্যেই আইনটি চালু হয়। ভারতে মেয়েদের বিয়ের সময় বিপুল পরিমাণ যৌতুক দিতে হয়। তাই কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজে মেয়ে শিশুকে পরিবারের বোঝা ও ছেলে শিশুকে ভবিষ্যৎ উপার্জনকারী হিসেবে দেখা হয়।
ভারতে ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, প্রতি এক হাজার ছেলে শিশুর বিপরীতে ৯১৪টি মেয়ে শিশু আছে। রাজস্থানে এই অনুপাতের পার্থক্য আরো বেশি। সেখানে ছয় বছরের নিচের প্রতি হাজার ছেলে শিশুর বিপরীতে মাত্র ৮৮৩টি মেয়ে শিশু আছে।
চিকিৎসকদের ওপর নজরদারিমূলক প্রতিষ্ঠান রাজস্থান মেডিক্যাল কাউন্সিলের সদস্য অর্চনা জোহরি জানান, আদালতের নির্দেশে ১২ চিকিৎসককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিষিদ্ধ সত্ত্বেও ভ্রূণের লিঙ্গ পরীক্ষার অভিযোগে পাঁচ চিকিৎসককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। গর্ভ ও প্রসবপূর্ব রোগ নির্ণয় পদ্ধতিসংক্রান্ত আইনের অন্যান্য ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে বাকি সাত চিকিৎসক দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। বরখাস্ত হওয়া চিকিৎসকদের ১১ জনই শ্রীগঙ্গানগর জেলার। রাজস্থানের সরকারি কর্মকর্তারা জানান, তাঁরা চিকিৎসক ও আলট্রাাসাউন্ড ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালের আইন লঙ্ঘনের ৩০৮টি অভিযোগ পেয়েছেন। এসব অভিযোগে এখন পর্যন্ত ২১ জন চিকিৎসককে বরখাস্ত করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালে প্রবর্তিত আরেকটি আইনে শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য আলট্রাসাউন্ড তরঙ্গের ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.