দেশের জনসংখ্যা

রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান সোমবার ২০১১ সালের আদমশুমারি ও গৃহগণনার চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। তিনি বঙ্গভবন থেকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ওয়েবসাইটে ক্লিক করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশকালে ঘোষণা করেন, গতকাল সোমবার দেশের প্রাক্কলিত (প্রজেক্টেড) জনসংখ্যা ১৫ কোটি ২৫ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন।


ইতোপূর্বে প্রায় এক বছর অগে আদমশুমারির প্রাথমিক ফল প্রকাশ করা হয়েছিল। তখন থেকেই আদমশুমারির ফলাফলের যথার্থতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। অথচ যে কোন দেশের উন্নয়নের জন্য সঠিক আদমশুমারি ও গৃহগণনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ উন্নত দেশে আদমশুমারির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে যাবতীয় দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু এবার অজ্ঞাত কারণে অনেকেই আদমশুমারির প্রক্রিয়ার বাইরে ছিলেন; অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন, তারা গণনার বাইরে ছিলেন। একটি দেশের আদমশুমারির মতো বিষয়ে এমন কর্মকা- নিঃসন্দেহে অনাকাক্সিক্ষত। এর ফলে দেশ ও জাতির উন্নয়নের মূল লক্ষ্য অর্জন সম্ভব কি? চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বিআইডিএস’ দেশের ‘শুমারি পরবর্তী যাচাই’ (পোস্ট এমিউনারেশন চেক) বিষয়ক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল, গণনা থেকে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ বাদ পড়েছে। যাই হোক, বাদ পড়া জনসংখ্যা সমন্বয় করে এবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০১১-এর চূড়ান্ত এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করল।
সবশেষে আদিমশুমারির যে চূড়ান্ত ফলাফল পাওয়া গেল, তার ওপর ভিত্তি করে দেশের সমকালীন বাস্তবতা আমাদের সামনে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গমাইলের একটি ছোট্ট দেশ বাংলাদেশ; এখানে নদী, হাওড়, বিল ও জলাশয়ের সংখ্যা অনেক। সেই দেশটিতে বাস করে ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ। এখানে প্রতিবছরই মানুষ বাড়ছে প্রায় ২০ লাখ। একই সঙ্গে আবাসন ও উন্নয়নের জন্য প্রতিবছরই কয়েক হাজার হেক্টর উর্বর কৃষি জমি বিনষ্ট হচ্ছে। এই অবস্থা যদি অব্যাহত থাকে, তবে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে কৃষিজমি ও বনভূমি অবশিষ্ট আর থাকবে কি?
ভবিষ্যতের কথা ভেবে সুনির্দিষ্ট পরিমাণ কৃষি জমি ও বনভূমি সংরক্ষণের লক্ষ্যে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিতে হবে; একই সঙ্গে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.