গ্রামটিকে গিলছে যমুনেশ্বরী

কাঠ ও বাঁশের পাইলিং দিয়ে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় যমুনেশ্বরী নদীর ভাঙনরোধের চেষ্টা ভেস্তে গেছে। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে নদীভাঙনে ঊচা গ্রামের শতাধিক পরিবারের বসতভিটাসহ আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় ইউপির চেয়ারম্যান ময়নুল হক জানান, অনেক চেষ্টা করা হয়েছে।


কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো বাজেট না থাকায় কাজ করা যায়নি। ফলে পুরো গ্রামটিই এবার নদীগর্ভে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের খয়রাবাড়ি থেকে হাছিয়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় যমুনেশ্বরী নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙন ঠেকাতে গত বছর বর্ষার আগে ঊচা বালুয়া গ্রামে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে পাইলিং করা হয়। নদীভাঙনে পাইলিংয়ের পুরোটাই এ বছর ভেঙে গেছে। ফলে ওই এলাকায় আবাদি জমি ভাঙছে, ভাঙছে বসতভিটা। শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরাতে হয়েছে। ৮০-১০০ একর আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে বলে গ্রামবাসী জানিয়েছেন।
গত রোববার সরেজমিনে কথা হয় ঊচা গ্রামের কৃষক মজনু মিয়ার সঙ্গে। তাঁর চার একর আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘গেল বর্ষাত এই এলাকা নদীর ভাঙন ঠেকা গেইলেও এবার তা আর আটকানো গেল না।’
আজাহার হোসেনের দুই একর জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সরকারি উদ্যোগ নিলে হয়তো ভাঙন ঠেকা গেল হয়।’ বসতভিটাসহ তিন একর আবাদি জমি নদীতে বিলীন হওয়ার পর একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন আবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই এলাকাত গত চার বছর থাকি একনা একনা করি নদী ভাঙতে ভাঙতে এবার হামার থাকার জায়গাও ভাঙি নিয়া গেল।’ এমনি করে ওই গ্রামের আরও অনেকের জমি এ বছরের ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়েছে।
বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মকিম মণ্ডল বলেন, ‘ঊচা গ্রামটা এবার মনে হয় আর থাকিল না। উপজেলা অফিসোত কত দেন-দনবার করছি, কিন্তু কিছু হয় নাই।’
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙনরোধে এ বছর একটি পরিকল্পনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।’

No comments

Powered by Blogger.