রোজ বিকেলের আড্ডা by হেলাল মাহমুদ

সার্কিট হাউসের উঁচু চূড়াটা রোজ বিকেলে মুখরিত হয়ে ওঠে একঝাঁক বন্ধুর প্রাণচাঞ্চল্যে। বিকেলবেলার কোমল রোদটা যখন ধীরে ধীরে মুছে যেতে শুরু করে, বন্ধুরা তখন আড্ডামুখী হয়। পাঁচটা নাগাদ চেয়ারম্যানপাড়া থেকে লম্বা লম্বা পায়ে হেঁটে আসে তানভীর।


ট্রাফিক মোড় থেকে শিমুল ও লিমন দুই ‘মানিকজোড়’ কাঁধে হাত রেখে কথা বলতে বলতে এগোয়। রাজু ভাইয়ের মোটরবাইকে চড়ে আসে আরও দুজন, শুভ আর মাহি। তারা তিনজন মিলে ‘তিনরত্ন’ হিসেবে পরিচিত। বাবু আসে একা। এ কারণেই বোধ হয় তার নাম এতিম ভাই।
নাদিম, ইমরান, টিপু, পলাশ, তামিম, পায়েল—এরা আমাদের আড্ডায় অতিথি পাখি। মাঝেমধ্যে ঋতু বুঝে আসে।
সবাই একত্র হতে হতেই কোনো একজনের মুঠোফোনে একটা খুদে বার্তা আসে, ‘তোমরা কি এসেছ?’
উত্তর পৌঁছালে ধীরে ধীরে উঠে আসেন বিশুদ্ধ আড্ডাধারী খলিল ভাই। তিনি আইনজীবী মানুষ, মুখে কথার ফুলঝুড়ি। এই মানুষটা রোজ বিকেলের আড্ডাবাজদের কীভাবে জানি আনন্দ উচ্ছলতার তুঙ্গে তুলে দেন। আমাদের প্রথম প্রকাশনা ফেব্রুয়ারির চিঠিতে লেখার আমন্ত্রণ জানাতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। তিনি আমাদের উদ্যোগের কথা শুনে চোখ কপালে তুলে বলেছিলেন, ‘ইন্টারেস্টিং তো!’ সেই থেকে শুরু। আমাদের সভার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে গেলেন তিনি। এতিম ভাইয়ের (বাবু) গানের গলা ভালো। সে মাঝেমধ্যেই দুয়েকটা গান গেয়ে শোনায়। আমরা তার সঙ্গে গলা মেলানোর চেষ্টা করি।
প্রতিটি আড্ডা থেকে ভালো-মন্দ কিছু বেরিয়ে আসে। আমরা বোধ হয় বিশুদ্ধ আড্ডাই দিই, যে কারণে ইতিমধ্যে কিছু কাজ আমরা করেছি, যেগুলোকে ভালো কাজই বলতে হবে।
সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান, বৃক্ষরোপণ, ইন্টারনেট উৎসব, কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা, বই পড়া আর সাহিত্য আড্ডা তো আছেই।
আরও কিছু কাজ আমরা অতি সম্প্রতি করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের ছোট বন্ধুগুলোর জন্য আফসোস!! তারা কাজের সময় থাকে অথচ আড্ডায় শামিল হতে পারে না। ‘বড়দের আড্ডায় ছোটরা থাকতে নেই’ পারিবারিক সূত্রটা মানতে গিয়ে তারা আর আসে না!
‘রোজ বিকেলের আড্ডা’ টিকে থাকুক দীর্ঘ দিবস-দীর্ঘ বিকেল। এমন অজস্র বিকেল ফিরে ফিরে আসুক সারা দেশের সব বন্ধুর মাঝে।
 বান্দরবান বন্ধুসভা
helalvai@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.