দরপত্র নিয়ে চালিয়াতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিন-তিন পয়সায় ঘি-মাখন!

প্রথম আলোর গত শুক্রবারের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রতি কেজি গাওয়া ঘিয়ের দাম যেখানে ৬০০ টাকা, সেখানে দরপত্রে ধরা হয়েছে তিন পয়সা। মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের পথ্য সরবরাহের দরপত্রে ঘি-মাখন ছাড়াও পটোল, ফুলকপি,


বাঁধাকপিসহ ১১ ধরনের সবজির দাম ধরা হয়েছে প্রতি কেজি এক থেকে তিন পয়সা। চাল, ডাল, মাছ ও মাংসের মতো যেসব খাদ্যদ্রব্য বেশি পরিমাণে ও নিয়মিত সরবরাহ করতে হয়, সেগুলো বাদে অন্য সব খাদ্যপণ্যের দাম অবিশ্বাস্যভাবে কম দেখানো হয়েছে। এখানে যে বড় ধরনের চালিয়াতি আছে, তা স্পষ্ট।
তবু এমন কর্মকাণ্ডই ঘটে চলেছে বছরের পর বছর ধরে। দরপত্র-প্রক্রিয়ার দুর্বলতা কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এভাবে পণ্য সরবরাহের আদেশ বাগিয়ে নেওয়া যায়। চলতি বাজারদরের সঙ্গে দরপত্রে উল্লিখিত মূল্যতালিকার এত পার্থক্য হয় কী করে? শিবচরের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাষ্যে উঠে এসেছে, যেসব খাদ্যপণ্যের দাম অত্যন্ত কম দেখানো হয়েছে সেগুলো কখনোই সরবরাহ করা হয় না। আর চাল, ডাল, মাছ ও মাংসের দাম বাজার অনুযায়ী ধরায় সরবরাহকারী তাঁর লাভ নিশ্চিত করতে পারেন। চলতি বাজারদরের সঙ্গে দরপত্রে উল্লিখিত দামের বিস্ময়কর পার্থক্যকে দরপত্র-প্রক্রিয়ায় আমলে না নিয়ে কর্তৃপক্ষ সর্বনিম্ন দরদাতাকেই কার্যাদেশ দিয়ে থাকে। এতে ক্ষতি যা হওয়ার তা হয় রোগীর।
হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদার কথা বিবেচনা করে খাদ্য সরবরাহের তালিকা প্রণীত হয়েছে। নিম্নমানের খাবার পরিবেশন কিংবা তালিকা অনুযায়ী খাদ্য সরবরাহ না করা কাম্য নয়। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের দেখার কথা খাবারের মান ঠিক আছে কি না, তালিকায় উল্লিখিত খাবার ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে কি না। এ ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতির সুযোগ নেই। এমন অবিশ্বাস্য দাম উল্লেখ করে কেউ যেন খাদ্যপণ্য সরবরাহের কাজ না পায়, তা নিশ্চিত করার জন্য দরপত্র-প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হতে হবে। সেই সঙ্গে দরপত্র-প্রক্রিয়ার সংস্কারও জরুরি বলে মনে করি।

No comments

Powered by Blogger.