স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে দলীয়করণ-স্বাস্থ্য উপদেষ্টার অভিনব ব্যবস্থাপত্র

কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে যে সাড়ে ১৩ হাজার কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে, তাঁরা সবাই হবেন আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত কর্মী। এর বাইরে কাউকে চাকরি দেওয়া হবে না। যদি অন্য কেউ চাকরি পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হন, তাহলেও চলবে না,


তিনি অবধারিতভাবে বাদ যাবেন—নিয়োগের একমাত্র যোগ্যতা হবে দলীয় পরিচয় অর্থাত্ আওয়ামী লীগের কর্মী কি না, তা নিশ্চিত করা। গোপালগঞ্জ হাসপাতালের সম্মেলনকক্ষে অ্যানথ্রাক্স নিয়ে বিশেষ আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা মোদাচ্ছের আলী এই ‘নিয়োগবিধি’ ঘোষণা করেছেন। এই ‘বিধি’ প্রয়োগ করা হলে কমিউনিটি হেলথ সার্ভিসের পুরো ব্যবস্থাটি ‘রাজনৈতিক অ্যানথ্রাক্সে’ আক্রান্ত হয়ে অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাজ প্রধানমন্ত্রীকে স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া। তিনি তাঁর নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে চাকরির নিয়োগবিধিতে হাত দিচ্ছেন কেন, সেটাই প্রশ্ন। দলের পরীক্ষিত কর্মীরা দলে পরীক্ষা দিয়ে নেতা হবেন, সেটা দলের ব্যাপার। আর যাঁরা চাকরি করবেন, তাঁদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে যথানিয়মে নিয়োগ লাভ করতে হবে। সরকারি নিয়োগবিধির প্রতিষ্ঠিত এই নিয়ম উল্টে দেওয়ার অধিকার উপদেষ্টাকে কে দিয়েছে? দলীয় লোকদের নিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য তিনি নাকি এরই মধ্যে একটি ‘সিস্টেম’ তৈরি করেছেন। অর্থাত্ উপদেষ্টা মহাশয় কমিউনিটি হেলথ সার্ভিসে দলীয়করণের একটি পাকাপাকি ব্যবস্থা করে ফেলেছেন!
কিন্তু উপদেষ্টা এসব করার কে? তিনি কোন অধিকারে দলীয় লোকজনকে ঢালাও নিয়োগের নীতি ঘোষণা করেন? এটা সেবা খাত ও প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য প্রত্যক্ষ উসকানি ছাড়া আর কিছুই নয়। এরই মধ্যে পাবনা, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়ে সরকারি চাকরির পরীক্ষা বানচাল করতে শুরু করেছেন। ক্ষমতাসীন দলের লোক ছাড়া অন্য কাউকে চাকরি দেওয়া যাবে না! স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কথিত ‘সিস্টেম’ কাজ শুরু করে দিয়েছে!

No comments

Powered by Blogger.