বিশ্বমানের শিক্ষাদান আমাদের লক্ষ্য by ফাহিমা আজিজ

ড. ফাহিমা আজিজ সম্প্রতি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইমেনের (এইউডব্লিউ) উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন। অর্থনীতির অধ্যাপক ফাহিমা পিএইচডি করেছেন ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা থেকে। তিনি আমেরিকান কাউন্সিল ফর এডুকেশন (ওয়াশিংটন ডিসি) থেকে সম্মানজনক ফেলোশিপ পেয়েছেন।


দীর্ঘ ১৭ বছর অধ্যাপনা করেছেন হ্যামলাইন বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৩ জুন প্রথম আলো কার্যালয় পরিদর্শনে এলে তাঁর সাক্ষাৎকার নেন ফিরোজ জামান চৌধুরী

এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্য কী?
—এ কথা আমরা সবাই জানি, এশিয়ার নারীরা তুলনামূলক বিচারে পিছিয়ে আছে। নারীর ক্ষমতায়নের মূলেই রয়েছে শিক্ষা। তাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য এ অঞ্চলের মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে সমাজের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করা। শিক্ষার্থীরা যেন তাদের মেধার সঠিক বিকাশ ঘটাতে পারে, সে জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। আমরা স্বপ্ন দেখি, এশিয়ার আগামী দিনের নেতৃত্ব দেবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী।
ভর্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা কোনো বিশেষ সুযোগ পেয়ে থাকে কি?
—বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যূনতম ২৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত আছে। তবে বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে, এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখানে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।
বিদেশ থেকে যারা এখানে পড়তে আসছে, তারা সবাই কি উচ্চবিত্ত, নাকি অনগ্রসর পরিবারের মেয়েরা আসছে?
—বিদেশি শিক্ষার্থীরা বেশির ভাগই অনগ্রসর পরিবারের, মধ্যবিত্তও আছে কেউ কেউ।
বাংলাদেশের অনগ্রসর/দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের এখানে পড়াশোনার জন্য কী ধরনের সুবিধা রয়েছে?
—বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ৭০ শতাংশ এখানে বিনা বেতনে শতভাগ বৃত্তি নিয়ে লেখাপড়া করছে। বাকি শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত।
লেখাপড়ার বাইরে আপনারা কোন কোন বিষয়ে জোর দিয়ে থাকেন?
—আমরা প্রত্যেক মেয়েকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রথম বছর ক্যারাতে শিখতে হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল, ভলিবল, সাঁতার, ক্রিকেট কিংবা ফুটবল—এর একটি বিষয় বেছে নিতে হয়। এ ছাড়া সংগীতচর্চা, আবৃত্তি, বিতর্কচর্চা—এসব বিষয়েও শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা হয়।
আপনি উপাচার্য হিসেবে নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন, অগ্রাধিকার তালিকায় আপনি কোন কোন দিকে দৃষ্টি দিতে চান?
—আমার প্রথম কাজ হবে শিক্ষার উচ্চমান নিশ্চিতকরণ। এ জন্য আমি প্রথমেই শিক্ষা কার্যক্রম রিভিউ করব। সিলেবাসের কোনো পরিবর্তন প্রয়োজন কি না, নতুন বিষয় চালু করা দরকার কি না, নতুন শিক্ষক প্রয়োজন কি না—এসব বিষয়ে আমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দৃষ্টি দিতে চাই। এ জন্য আমি ডিন, অধ্যাপক ও সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। আমি আগামী পাঁচ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করতে চাই।
সার্বিকভাবে আপনি আপনার শিক্ষার্থীদের কোথায় পৌঁছে দিতে চান?
—আমি চাই, আমার শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। আমি তাদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তনের বীজ বুনে দিতে চাই। তাদের উন্নত জীবনের জন্য যোগ্য করে গড়ে তোলা আমাদের দায়িত্ব। আমি চাই, পরিবারে তারা উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হিসেবে গড়ে উঠুক, যার মাধ্যমে পরিবারে ও সমাজে তাদের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে।

No comments

Powered by Blogger.