আমিই আকরাম খাঁন by আলীম আজিজ

আকরাম খাঁন বাঙালি মা-বাবার সন্তান। মায়ের হাত ধরে সাত বছর বয়সে লোকনৃত্য শুরু করেছিলেন, পরে মা তাকে নিয়ে যান বিখ্যাত কত্থক নাচের গুরু শ্রী প্রতাপ পাওয়ারের কাছে। আজ আকরাম খাঁনের জয়জয়কার শুধু ইংল্যান্ডেই নয়, সারা বিশ্বে, কোরিওগ্রাফার হিসেবে তিনি এখন খ্যাতির তুঙ্গে। একের পর এক জুটছে কীর্তির স্বীকৃতি।


বাংলাদেশের ৪০ বছর পূর্তির প্রাক্কালে তাঁর একক নৃত্য পরিবেশনা দেশ—আমাদের এই বাংলাদেশ নিয়েই। যা ইতিমধ্যে জিতে নিয়েছে লরেন্স অলিভিয়ের পুরস্কার

শরীরে তাঁর বাঙালি রক্ত বইছে। মা-বাবা সিলেট থেকে ইংল্যান্ডে গিয়ে নতুন বসতি গড়ে তুলেছিলেন কোনো কালে; কিন্তু দেশকে ভুলতে পারেননি। তাই ছোটবেলাতেই ছেলেমেয়েকে উপমহাদেশের সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁদের ছেলে আকরাম খান এখন শুধু ইংল্যান্ড নয়, নৃত্যশিল্পী হিসেবে তাঁর খ্যাতি এখন দুনিয়াজোড়া। সম্প্রতি সম্মানিত হয়েছেন লরেন্স অলিভার পুরস্কারে। তাঁর সর্বশেষ পরিবেশনা ‘দেশ’ নৃত্যাখ্যানের জন্য। আসছে অলিম্পিকের কোরিওগ্রাফারও আকরাম খান। কিন্তু এই বিশ্বজয়ী বঙ্গসন্তানের ‘খান’ হয়ে ওঠা মোটেও সহজতর ছিল না। শোনা যাক সেই আখ্যান।
খানের জন্ম দক্ষিণ লন্ডনের উইম্বলডনে। সেখানেই বাবার রেস্টুরেন্টের ওপর ছোট এক অ্যাপার্টমেন্টে তাঁর বেড়ে ওঠা। একেবারে শৈশবেই বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী প্রতাপ পাওয়ারের কাছে তাঁকে পাঠানো হয় ধ্রুপদি নাচের তালিম নিতে। ‘তিন বছর বয়সে আমার নাচ শেখা শুরু, আর সেটা আমার মায়ের কাছে। তরুণী বয়সে আমার মায়ের নৃত্যশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন ছিল, কিন্তু আমার নানা ছিলেন বাংলাদেশের (স্বাধীন হওয়ার আগে) নামকরা একজন গণিতবিদ। তিনি চাননি, তাঁর মেয়ে নর্তকী হোক, সে সময় সমাজে এটাকে যথেষ্ট ঘৃণার চোখে দেখা হতো। তাই আমার মা নাচের চর্চা করেছেন গোপনে। তাঁর সাত ভাইয়ের টিফিন বক্সে খাবার ভরে দেওয়ার পরিবর্তে নাচের ঝুমুর লুকিয়ে নিয়ে যেতেন। ভাইয়েরাই টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে মাকে পায়ের ঝুমুর কিনে দিয়েছিলেন।’ মা আনোয়ারার কাছেই আকরাম খান শিখেছেন বাংলাদেশের লোকনৃত্য, উপজাতীয় নাচ—মা তাঁর সবটা উজাড় করে দিয়ে শিখিয়েছেন।
সাত বছরে পা দেওয়ার পর তাঁর মা বুঝতে পারেন, এবার ছেলেকে কোনো পেশাদার নৃত্যগুরুর কাছে পাঠাতে হবে। তখনই ছেলেকে কত্থকে তালিম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মা আনোয়ারা। কত্থক হচ্ছে ভারতীয় আট ধরনের ধ্রুপদি নাচের একটি, যার মূল উদ্দেশ্য হলো হাতের নানা মুদ্রায়, মুখের অভিব্যক্তিতে গল্প বলা।
‘ছেলেবেলায় আমি ছিলাম মোটামুটি একটা ত্রাস, আমাকে বশে রাখে কার সাধ্যি! কাজেই আমার নাচের গুরু শ্রী প্রতাপ দ্রুতই বুঝে নিলেন যে শারীরিক পরিশ্রম হয় এমন কিছু দিয়ে আমার শেখা শুরু করতে হবে, যাতে আমি খানিকটা ক্লান্ত হয়ে পড়ি। এতে ধারণা ছিল, আমি শান্ত হয়ে বসে মনোযোগী ছাত্রের মতো তাঁর কথা শুনব। গুরুর পরিকল্পনা কাজে দিয়েছিল। নাচের ক্লাস শুরুর আগে তাই প্রতিদিন নিয়ম করে আমাকে প্রথমেই ২০ বার দ্রুতগতির ঘূর্ণি সেরে নিতে হতো, এতে কিছু সময়ের জন্য হলেও সত্যিই আমি ক্লান্ত বোধ করতাম। একটা মাত্র ক্লাস গুরুর, আর এই ক্লাসে ছাত্রছাত্রীর বেশির ভাগ ছিল ১৮ থেকে ৪০ বছরের ওপরে, শুধু আমি আট আর আমার বোন চার বছর বয়সী।’
গুরু বলে যাঁকে প্রতিবার সশ্রদ্ধভাবে স্মরণ করেন খান, তাঁর সঙ্গে এখনো তিনি দেখা করেন, নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন। ‘গুরুর আমাকে নিয়ে অনেক গর্ব, কিন্তু আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে,’ জানান খান। ‘পাশ্চাত্যজগতে এখন আর বিচক্ষণতা ও বয়সের মূল্যায়ন হয় না, বিশেষ করে আমার প্রজন্ম ও এ সময়ের তরুণদের কাছে। ভাবনার ক্ষেত্রে আমরা, তরুণেরা এমন উত্তুঙ্গ অবস্থায় পৌঁছে গেছি যে আমরা মনে করি তরুণেরা সব, তারা বিশেষ কিছু। কিন্তু আমার কাছে এখনো প্রবীণেরাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাঁদের আছে অভিজ্ঞতা আর জ্ঞান। আমার গুরুর মধ্যে বিশেষ এক প্রাজ্ঞতার স্ফুরণ আমি দেখেছি। কিছু ক্ষেত্রে তিনি সারা জীবন আমার চেয়ে বিচক্ষণ ও জ্ঞানী। এ বিষয়টি আপনাকে আসলে আরও গভীর চোখ দিয়ে দেখতে হবে, উপলব্ধি করতে হবে।
‘আমি যখন তরুণ ছিলাম, গতির প্রতি আমার ছিল দুর্বার আকর্ষণ, তা এখনো আছে। তবে এখন এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও গভীরতা ও আধ্যাত্মিকতা। আমি নাচকে অনেক বেশি আধ্যাত্মিকভাবে উপলব্ধি করি। কত্থকের সৌন্দর্য হচ্ছে এর মধ্যে যেমন আছে গভীরতা, তেমনি আছে আধ্যাত্মিকতা। আর আমি যতটা আধ্যাত্মিকতায় অনুরক্ত, ততটাই ধর্মনিষ্ঠায়ও। আমার কাছে মঞ্চ হলো প্রার্থনাঘর। পবিত্র জায়গা। আমরা মঞ্চে জুতা পরে ঢুকি না, যদি সেটা অঙ্গসজ্জার অংশ হয়।’
১০ বছর বয়সে আকরাম খান প্রথম মঞ্চে আবির্ভূত হয়েছিলেন, রুডিয়ার্ড কিপলিংয়ের জাঙ্গল বুকের মুগলি চরিত্রে। নাচের কারণে বরাবর স্কুলে সহপাঠীদের হাস্যরসের শিকার ছিলেন আকরাম খান। কারণ, তাঁর সহপাঠীরা মনে করত, নাচ হলো মেয়েদের বিষয়। তবে পরে যখন একের পর এক পুরস্কার জিততে শুরু করেন আকরাম খান, তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হতে শুরু করে। মাইকেল জ্যাকসন ডিসকো নাচ প্রতিযোগিতার পুরস্কারও ছিল বন্ধুদের কাছে সবচেয়ে বড় অর্জন।
গোড়া থেকেই নাচের অনুশীলন করা ছিল তাঁর কাছে নেশার মতো, বাবার গাড়ির গ্যারেজকে নাচের স্টুডিও বানিয়ে নিয়েছিলেন: অসমান মেঝে ঢাকতে বসানো হয়েছিল প্লাইউড, আয়না বসানোর উপায় ছিল না; শীতে একমাত্র ভরসা ছিল তাঁর নিজের ছোট একটা হিটার। ‘তার পরও দিনে প্রায় আট ঘণ্টা করে প্র্যাকটিস করতাম। একটা সময় গেছে, যখন এই নাচের নেশায় দিনের পর দিন স্কুল পালিয়েছি। পাগল বনে গিয়েছিলাম আর কি! তখন আমার বয়স ১৭। পুরো এক বছর আমি উন্মাদের মতো প্র্যাকটিস করে গেছি। তখন ওটা আমার কাছে প্রতিদিনের অবশ্যপালনীয় একটা কাজের মতোই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।’
একটা সময় পেরিয়ে এসে আকরাম খানের মন ধ্রুপদি নাচের কঠোর নিয়মে আর বন্দী থাকতে চাইল না। মন বিদ্রোহী হয়ে উঠল, ধ্রুপদি নাচের কঠোর নিয়মের অর্গল ভাঙার জন্য সমকালীন নাচে নাম লেখালেন খান। ওই প্রচেষ্টায় লিস্টারের ডি মনফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পারফর্মিং আর্টে গ্র্যাজুয়েশনও করে ফেললেন। মা-বাবার পরামর্শে পড়াশোনা চলতে থাকল, লিডসের নর্দার্ন স্কুলে কন্টেম্পোরারি ড্যান্সে। এ পর্যায়ে এসেই আকরাম খান সিদ্ধান্ত নেন, নাচই হবে তাঁর নেশা ও পেশা। এর আগে পর্যন্ত তাঁর মা-বাবা সব কাজে অকুণ্ঠ সমর্থন জুগিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের মতে, একান্ত শখের বিষয় যখন জীবনের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়াল, তাঁরা আঁতকে উঠলেন। ‘নৃত্যশিল্পী হওয়ার সিদ্ধান্তটা আমি নিয়েছিলাম অনেক দেরিতে। এর আগে আমার প্রবল আগ্রহ ছিল পারকাশনে। ভেবেছি, পারকাশন শিল্পী হব। একপর্যায়ে ভাবলাম, তবলার বাদক হব। কিন্তু শেষে সব বাদ দিয়ে যখন পেশাদার নৃত্যশিল্পী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম, মা-বাবা দুজনই সত্যি সত্যি চিন্তিত হয়ে পড়লেন আমাকে নিয়ে। ইংল্যান্ডে বাঙালি কমিউনিটির বেশির ভাগ ছেলেমেয়ের লক্ষ্য থাকে হোটেল ব্যবসায় হাত পাকানো আর নয়তো চিকিৎসক বা অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়া। কিন্তু ওসব বাদ দিয়ে হতে চাইছি নৃত্যশিল্পী। শেষমেশ আমার প্রবল আগ্রহকে উপেক্ষা করতে পারলেন না বাবা-মা। আমরা একটা সমঝোতায় পৌঁছালাম। তাঁদের শর্ত: পড়াশোনাটা আমাকে শেষ করতে হবে।’
পেছন ফিরে তাকালে আকরাম খান স্পষ্টত বোঝেন, অন্য আর দশজন ছাত্রের মতো তিনি মেধাবী ছিলেন না। এটা বিনয় না, এর সপক্ষে তিনি একটা ঘটনাও উল্লেখ করেন: লিডসে কনটেম্পোরারি ড্যান্সের শেষ ভাগে চলে এসেছেন আকরাম খান, কিছু দিন পরেই পেশাদার নাচের জগতে তাঁদের পদচারণ শুরু হবে। এ সময় এক অতিথি কোরিওগ্রাফার আমন্ত্রিত শিক্ষক হিসেবে এলেন। তিনি আকরাম খানকে দেখেশুনে বললেন, ‘নাচে ইস্তফা দিয়ে যেন সত্বর অন্য কোনো পেশা বেছে নেয় সে, তাকে দিয়ে নাচ সম্ভব নয়।’
‘আমি মেধাবী ছিলাম না; বরং আমার চারপাশের লোকজন, আমার নিজের দলের অন্যরা আমার চেয়ে অনেক বেশি প্রতিভাবান ছিল। আমার সম্বল ছিল শুধু আমার অধ্যবসায়। আজ বুঝি, আমি যদি শিক্ষক হতাম তাহলে আমিও আমাকে নজরই করতাম না। আমার চেয়ে বরং আমার বোন অনেক প্রতিভাবান ছিল, ও ছিল দারুণ রকম ক্ষিপ্র আর সাবলীল। কিন্তু আমার মেধা না থাকলেও, আমার ছিল একগুঁয়ে জেদ। ফলে ওই জেদ, হার না-মানার পণই ছিল আমার মেধা, আমার শক্তি। অন্যদের সাবলীলতা, মাপা পদচারণ দেখে আমাকে সফল হতে আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, জেদি করে তুলত।
‘আমি যখন সমকালীন নাচ শিখতে শুরু করলাম, তখনো আমার শিক্ষক আমাকে বলেছিলেন: এ নাচের উপযোগী শরীর আমার নয়, আমার শরীর যথেষ্ট নমনীয় হয় না। কিন্তু এই অনমনীয়তাই আমার জন্য পরে হলো শক্তি। আমি এ ঘাটতি কাটাতে গতিকে আশ্রয় করে নিলাম। কারণ, ১৮০ ডিগ্রির ওপরে আমার পা তোলার উপায় নেই, কিন্তু গতি দিয়ে আমি তা ঢেকে দিলাম।’
আকরাম খান যদি ওই অতিথি শিক্ষকের উপদেশ মেনে নিতেন, তাহলে আজকের আকরাম খানকে এই বিশ্ব পেত না। সেদিনের ঘটনার স্মৃতিচারণায় আকরাম খান বলেন: ‘ওই শিক্ষককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল শ্রেণীকক্ষের বাইরে পেশাদার নাচের জগৎ কেমন, সে সম্বন্ধে আমাদের মোটামুটি ধারণা দেওয়ার জন্য। কিন্তু তাঁর পাঠদানের শেষ পর্যায়ে এসে আমিসহ আরও চারজনকে দল থেকে আলাদা করে নিয়ে তিনি জানালেন: আমাদের দিয়ে নাচ হবে না, কাজেই যত দ্রুত সম্ভব আমরা যেন পেশা বদলে ফেলি। ভাবুন একবার, আপনার পড়াশোনা যখন একেবারে শেষ পর্যায়ে, অচিরেই আপনি পেশাদার নৃত্যশিল্পী হিসেবে জীবন শুরু করতে যাচ্ছেন আর তখনই শুনলেন, নৃত্যজগতের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব আপনার দিকে আঙুল তুলে বলছেন, আপনাকে দিয়ে নাচ হবে না, আপনি ভুল পেশায় চলে এসেছেন। আমি খুব ভেঙে পড়েছিলাম, কিন্তু পরে সেই জেদই আমাকে বাঁচিয়ে দিল। এরপর আমার ব্রত হয়ে দাঁড়াল, জীবন দিয়ে হলেও আমিও যে পারি, সেটা প্রমাণ করে দেওয়া।’
পরে এই কোরিওগ্রাফারের উপস্থিতিতে আকরাম খান তাঁর দল নিয়ে নেচেছেন। ‘আজকের বিখ্যাত আকরাম খানকে তিনি এখন ভালোই চেনেন, কিন্তু আমার মনে হয় না তাঁর মনে আছে যে তিনি আমাকে নাচ ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। অনেকেই আমাকে ওই শিক্ষককে ঘটনাটা স্মরণ করিয়ে দিতে বলেছিলেন, কিন্তু আমি বলিনি। কারণ, পেছনে ফিরে তাকালে দেখি, এ রকম ঘটনা আমার সারা জীবনের, শুধু একবার তো নয়। আমার চারপাশে সব সময়ই প্রতিভাবান লোকের ভিড় ছিল, কিন্তু পরে বুঝেছি প্রতিভা থাকে একটা সময় পর্যন্ত, তারপর কাজই আসল। কঠোর পরিশ্রম আর নিয়মানুবর্তিতা দিয়েই আমি সব প্রতিভাকে অতিক্রম করে এসেছি।
আকরাম নাচে যেমন এনেছেন নতুনত্ব, তেমনি তাঁর চেহারা ও প্রতিটি মুদ্রায় এনেছেন স্বকীয়তা। ‘নাচতে গিয়ে এই প্রশ্নটা বরাবর আমাকে বিদ্ধ করেছে, এই শরীর নিয়ে আমি আর কী কী করতে পারি? যা হবে নতুন, আগে কেউ করেনি? এরপর আমি আমার গতিতে এমন কিছু নতুনত্ব নিয়ে এলাম, যা অন্য কেউ করে না। অন্যদের কারও শরীর ব্যালে নাচের, তাদের কাছে শরীরই সব। কিন্তু কত্থক নাচে আপনাকে সাবলীল মুদ্রাভঙ্গি জানতে হবে। ব্যালেতে শারীরিক সৌন্দর্যও একটা মুখ্য বিষয়, আপনাকে দেখতেও সুন্দর হতে হবে। কিন্তু আমি তো সুন্দর নই। তাহলে? মাথা ন্যাড়া করে আমার চেহারায় অভিনবত্ব নিয়ে এলাম, ভারতীয় নর্তকদের মধ্যে এটা কোনো দিন কল্পনাই করতে পারবেন না। তাঁদের অবশ্যই কৃষ্ণের মতো লম্বা কোঁকড়ানো চুল থাকতে হবে। অনেক নৃত্যশিল্পীকে আমি পরচুলা পরতে দেখেছি। আমি ও রকম হতে চাইনি।’
পড়াশোনা শেষে আকরাম খান বন্ধু এবং সাবেক নৃত্যশিল্পী চৌধুরীকে নিয়ে নিজেদের নাচের প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেন। দুজনে মিলে এখন আলাদা তিনটা কোম্পানি চালান। একটির কাজ হচ্ছে খানের কোরিওগ্রাফ করা বিভিন্ন দলগত পরিবেশনাগুলোর তদারকি করা, অন্যটি খানের একক ও অন্য বিখ্যাত কোনো শিল্পীর সঙ্গে যৌথ পরিবেশনার আয়োজন করা; তৃতীয় কোম্পানিটি মূলত সেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত: উঠতি নৃত্যশিল্পী ও চলচ্চিত্রনির্মাতাদের পেশা তৈরিতে সাহায্য করাই এ প্রতিষ্ঠানের কাজ।

No comments

Powered by Blogger.