ঘুষখোর ধরতে যৌথ অভিযান চলতি মাসেই

সিরাজুল ইসলাম: বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঘুষ গ্রহণকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধরতে র‌্যাব-পুলিশ ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একযোগে কাজ করবে। চলতি মাস থেকে অভিযান শুরু করা হবে। অন্যদিকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদককে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে রাজউক। গতকাল বুধবার পৃথক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দুদক কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় কমিশনের মহাপরিচালক কামরুল ইসলাম মোল্লা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এমএইচ সালাউদ্দিন, পরিচালক স্কোয়াড্রন লিডার মো. তাহীদুল ইসলাম, র‌্যাবের কয়েকজন অধিনায়ক এবং ডিএমপির ডেপুটি কমিশনার এবং দুদকের আঞ্চলিক ও প্রধান কার্যালয়ের পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার প্রথমে দুদক কর্মকর্তারা ঘুষ আদান-প্রদান ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। পাশাপশি গতানুগতিক পদ্ধতিতে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে ঘুষ প্রতিরোধে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধাগুলো উপস্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে র‌্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে সর্বাত্মক সহযোগিতা চাওয়া হয়। র‌্যাব কর্মকর্তা এবং পুলিশ কর্মকর্তারা সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। সভার আলোচনা অনুযায়ী থানা, কাস্টমস অফিস, ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস, বিমানবন্দর, সচিবালয়, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সব দপ্তর ও সিটি করপোরেশনসহ স্বায়ত্তশাসিত সব প্রতিষ্ঠান এ অভিযানের আওতায় থাকবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ঘুষ গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধেও এ ফাঁদ অভিযান পরিচালনা করার বিষয়েও আলোচনা হয়। এছাড়া পেশাদার ঘুষখোরদের ধরতে কিভাবে ফাঁদ তৈরি করা হবে- এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায় দুদক কর্মকর্তারা বলেন, কয়েকটি সফল অভিযান পরিচালনার পর ঘুষ গ্রহণকারীরা পারিবারিক এবং সামজিক সম্মান রক্ষার্থে ঘুষ নেয়া বন্ধ করে দেবে। তবে এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ। তারা বলেন, যদি র‌্যাব ও পুলিশ এ কাজে দুর্নীতি দমন কমিশনকে সহযোগিতা না করে তা হলে উদ্যোগ সফল না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। একই সঙ্গে ঘুষ চাওয়ার পর যে ব্যক্তি দুদককে জানাবে বা তথ্য দেবে, তার কাজের নিশ্চয়তার (যে কাজের জন্য ঘুষ চাওয়া হয়েছে) পাশাপাশি যেন ওই ব্যক্তিকে কোন প্রকার আইনি জটিলতা বা হয়রানির শিকার হতে না হয়, সে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ফাঁদ পাতা সংক্রান্ত নীতিমালায় রাখার সিদ্ধান্ত হয় আলোচনায়। চলতি মাসের মধ্যেই এ অভিযান শুরু করার বিষয়েও একমত হন র‌্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তারা। ওদিকে রাজউক কার্যালয়ে দুদকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে রাজউক কর্তৃপক্ষ। এ বৈঠকে রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নূরুল হুদাসহ ১৫-২০ জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। দুদক মহাপরিচালক খন্দকার আমিনুর রহমানসহ ৭ সদস্যের একটি টিম বিকাল ৩টায় রাজউক কার্যালয়ে উপস্থিত হন। এ টিমের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছে পরিচালক স্কোয়াড্রন লিডার তাহীদুল ইসলাম, উপপরিচালক প্রণব ভট্টাচার্য, নূরুল হক, সাহিদুর রহমান এবং মাহবুবুবর রহমান। ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক টিম রাজউকের কাছে যে ধরনের সহযোগিতা চাইবে তা দেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.