মেট্রোরেল প্রকল্পে বিনিয়োগ জাপানের বিবেচনায়-পদ্মা সেতুতে এককভাবে নয়

প্রস্তাবিত মেট্রোরেল প্রকল্পে বিনিয়োগ প্রস্তাব সক্রিয়ভাবে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে জাপান। তবে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে মতপার্থক্য নিরসনের আগে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নে অনীহা প্রকাশ করেছে তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকায় বাংলাদেশ-জাপান আনুষ্ঠানিক বৈঠকে দেশটির প্রতিনিধিদল এ কথা জানায়।


বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। জাপানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সফররত উপপ্রধানমন্ত্রী কাতসুয়া ওকাদা।
বৈঠক সূত্র জানায়, মেট্রোরেল প্রসঙ্গে জাপানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৩৩তম বৈদেশিক উন্নয়ন সহযোগিতার (ওডিএ) অর্থায়নের বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় আছে। অন্যদিকে পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে জাপানি প্রতিনিধিদল জানায়, তারা বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের প্রত্যাশা করছে। তারা আরো বলেছে, এত বড় একটি প্রকল্পে জাপান এককভাবে অর্থায়ন করতে পারে না।
বাংলাদেশি প্রতিনিধিদল বৈঠকে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের কথিত দুর্নীতির অভিযোগের ব্যাপারে ব্যাখ্যা দেয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ এখনো প্রমাণিত হয়নি। এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্প অনির্দিষ্টকাল দেরি হতে পারে না। তিনি আরো বলেন, 'আমরা অবশ্যই এ অচলাবস্থা দূর করব এবং বিকল্প অর্থায়ন খুঁজব।'
বৈঠকে জাপানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে পড়ছে। এরপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওই দুই খাতের উন্নয়নে জাপানের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করা হয়।
জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সহযোগিতা চাইলে জাপান তাতে ইতিবাচক সাড়া দেয়। বাংলাদেশে জাপানের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন সমস্যার কথা জাপানি প্রতিনিধিদল তুলে ধরলে বিনিয়োগ বোর্ড ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়গুলো দেখবে বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতা চাইলে জাপান তাকে স্বাগত জানিয়েছে।
বৈঠকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতেও আলোচনা হয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সংস্কার ইস্যুতে আলোচনায় উভয় দেশ সংস্কারের পক্ষে একমত পোষণ করে। উভয় দেশই মনে করে, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই ওই সংস্কার হওয়া উচিত।

No comments

Powered by Blogger.