এশীয় আঞ্চলিক সভা পথ দেখাক, জীবন বাঁচাক-প্রসূতি ও নবজাতকের জীবন রক্ষা

বিশ্বের মোট মাতৃমৃত্যুর চার ভাগের এক ভাগই ঘটে প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণে। গর্ভকালীন জটিলতা ও প্রসবকালীন ঝুঁকি লাখ লাখ মা ও শিশুর জীবনের ইতি টেনে চলেছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় শুরু হয়েছে প্রসূতিসেবা ও নবজাতকের জন্মবিষয়ক এশীয় আঞ্চলিক সভা।


শিশুর জন্ম সুন্দর ও নিরাপদ করে তুলতে বাংলাদেশেও আমাদের অনেক করণীয় আছে।
প্রসবকালে মা ও সন্তানের মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনায় বাংলাদেশের বিশেষ সাফল্য রয়েছে। ২০০১ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে দেশে মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে ৪০ শতাংশ। জাতিসংঘ এ সাফল্যের স্বীকৃতিও দিয়েছে। এ সাফল্য এসেছে বিশেষত তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির বিস্তারের মাধ্যমে। তবু এখনো গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপসহ খিঁচুনি বা একলামশিয়ার জন্য অনেক মায়ের জীবনই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এখনো মাতৃমৃত্যুর ৫০ শতাংশ ঘটছে খিঁচুনি এবং প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণে। প্রতিবছর বিশ্বের ১০ শতাংশ প্রসূতি এ সমস্যার শিকার হয়ে মারা যাচ্ছেন। পাশাপাশি জন্মের পরপরই নিঃশ্বাস নিতে না পেরে মারা যায় অনেক শিশু। প্রতিবছর বিশ্বে ১০ লাখ শিশু আলোর মুখ দেখার আগেই বিদায় নেয় এ জটিলতায়। এ হার কমিয়ে আনায় যেমন প্রয়োজন অধিকতর গবেষণা, তেমনি সব ঝুঁকিপূর্ণ প্রসবে উপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার মাধ্যমে এর প্রকোপ কমিয়ে আনাও সম্ভব। সে লক্ষ্যেই এ সভা বসেছে।
এতে এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের ৩০টি দেশের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞরা অংশ নিচ্ছেন। নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং বিশেষজ্ঞদের নিবিড় পর্যালোচনার মাধ্যমে এখান থেকে একটা কার্যকর পদক্ষেপ বেরিয়ে আসা প্রয়োজন।
ইতিমধ্যে সরকার কমিউনিটি পর্যায়ে দুটি ওষুধ বিতরণের মাধ্যমে মা ও শিশুর নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। তবে কর্মসূচিটি যেন নিষ্ঠার সঙ্গে, দুর্নীতিমুক্তভাবে সম্পন্ন হয়। এ দেশে অনেক জরুরি উদ্যোগও অযত্ন ও অসততার জন্য বিফলে যায়। এখানে যেহেতু মা ও শিশুর জীবন জড়িত, সেহেতু এ ক্ষেত্রে যাতে কোনো গাফিলতি না আসে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।

No comments

Powered by Blogger.