হজমেলাকে আরও অর্থবহ করতে হবে by মাওলানা আবু আম্মার আবদুল্লাহ

আমাদের দেশের হজযাত্রীদের অতীতের হজ অভিজ্ঞতা খুব সুখকর নয়। এক শ্রেণীর প্রতারক ও দুর্নীতিবাজ গ্রুপ লিডার বা মধ্যস্বত্বভোগী দালালের চক্রে পড়ে অনেক হজযাত্রীই শেষ পর্যন্ত হজে যেতে পারেন না। এ ধরনের ঘটনা প্রতিবছরই ঘটে।


তাই গণসচেতনতা বৃদ্ধি এবং হজযাত্রীদের সঙ্গে সরাসরি হজ এজেন্সিগুলোর যোগাযোগ বাড়াতে গতকাল ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী পঞ্চম হজ ও ওমরাহ মেলা। মেলার আয়োজক হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। মেলার মাধ্যমে হজ গমনেচ্ছুরা সরাসরি হজ এজেন্সিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারবেন। এ ছাড়া হজযাত্রীরা বিভিন্ন এজেন্সির প্রদেয় সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে অবহিত হয়ে চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। মেলায় হজের পালনীয় আহকাম-আরকান ও মাসায়িল সম্পর্কেও জানতে পারবেন। লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৪০২টি হজ এজেন্সির মধ্যে প্রায় ১০০টি হজ এজেন্সি এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে। মেলা আগামীকাল শেষ হবে। মেলার মিডিয়া পার্টনার দৈনিক সমকাল। হজ ব্যবস্থাপনা ও মেলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয় হজমেলায় ১৯-২০নং স্টল পাওয়া সালওয়া ওভারসিজ সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাওলানা আবু আম্মার আবদুল্লাহর সঙ্গে। তিনি দীর্ঘ ১৪ বছর যাবৎ হজযাত্রীদের সেবা করে আসছেন। তার দাবি হলো, হজমেলা যদি করতেই হয় তাহলে এটা আরও আগে করতে হবে। হজের দুই মাস পরে করলে বেশি ভালো হয়। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, যারা এবার হজের নিয়ত করেছেন, তারা কোথাও না কোথাও কথা বলে ফেলেছেন। সুতরাং মেলা থেকে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়াটাই স্বাভাবিক। হজ ব্যবস্থাপনাকে মধ্যস্বত্বভোগী গ্রুপ লিডারমুক্ত করার জন্য হজমেলার ও এজেন্সিগুলোর ব্যাপক প্রচারেরও তাগিদ দেন তিনি। তার মতে, হজের সফরে গ্রুপ লিডারদের সঙ্গে কথা বললে এজেন্সি কর্তৃক প্রদেয় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ সার্বিক বিষয় সম্পর্কে জানার সুযোগ কম থাকে বিধায় হজযাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়েন। মধ্যস্বত্ব ভোগীদের কারণে অনেক এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। তাই বেশি বেশি প্রচার হলে কেউ আর এভাবে ফাঁকি দিতে পারবে না। কোনো গ্রুপ লিডার কর্তৃক কম টাকায় হজ সম্পাদনের প্রলোভনে পা না দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। আবু আম্মার আবদুল্লাহ জানান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুয়ায়ী চলতি বছর এক লাখ ২০ হাজার হজযাত্রী হজে যেতে পারেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে হজে যাবেন ১০ হাজার, বাকিরা বেসরকারিভাবে। এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সর্বনিম্ন হজের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে জনপ্রতি ৩ লাখ ৩ হাজার ৪৪০ টাকা। তবে হজ এজেন্সিগুলো বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ নিজ নিজ প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে। কিন্তু এ প্যাকেজ কোনো অবস্থায়ই সরকার ঘোষিত প্যাকেজের নিচে হতে পারবে না। এবার সালওয়া ওভারসিজের হজ প্যাকেজ ২০১২ দুই ক্যাটাগরির। কাবা শরিফ থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বের বাসা, দিনে তিনবেলা ও মিনায় খাবারসহ প্রথম প্যাকেজের খরচ ৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। আর দ্বিতীয় প্যাকেজে সবকিছু ঠিক রেখে শুধু কাবা শরিফ থেকে এক হাজার ২০০ মিটার দূরত্বের বাসার ব্যবস্থায় খরচ পড়বে ৩ লাখ ৪ হাজার ৫০০ টাকা। আমরা হজ পালনের জন্য অভিজ্ঞ হজগাইড দিয়ে হজের যাবতীয় কাজ সম্পাদনের ব্যবস্থা করি। মেলার মাধ্যমে হজে গমনেচ্ছুদের প্রতি হজ এজেন্সিদের সঙ্গে সরাসরি একটি যোগসূত্র স্থাপিত হয় বিধায় মেলাকে আরও অর্থবহ করার ব্যবস্থা করতে হবে।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : শাহীন হাসনাত

No comments

Powered by Blogger.