প্রতিরোধ কমিটির অভিযোগ-মুসলমানদের ইমান ধ্বংসের চক্রান্তে লিপ্ত প্রথম আলো

প্রথম আলো সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে বসে ইমান, ইসলাম ও ইসলামী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে 'প্রথম আলোর ধর্মীয় আগ্রাসন প্রতিরোধ কমিটি'। গতকাল বৃহস্পতিবার পুরানা পল্টনে সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে 'দৈনিক প্রথম আলোর অব্যাহত ধর্মীয় আগ্রাসন ও ধর্মপরায়ণ মুসলমানদের করণীয়' নির্ধারণে আয়োজিত এক সভায় কমিটির নেতারা এ কথা বলেন।


নেতারা বলেন, 'বদলে যাও বদলে দাও' স্লোগানের মাধ্যমে প্রথম আলো পত্রিকাটি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা 'র' এবং ইহুদিদের গোয়েন্দা সংস্থা 'মোসাদের' পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশে ধর্মীয় আগ্রাসন পরিচালনা করছে। তাদের এই অপতৎপরতা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ইমান ধ্বংসের চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। এই চক্রান্ত বন্ধ করতে দেশের জনগণ প্রতিরোধ গড়তে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশে অদূর ভবিষ্যতে ইসলাম থাকবে কি না সন্দেহ রয়েছে।
শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ডা. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন, মাওলানা মোহাম্মদ আফজাল হুসাইন, মাওলানা ফখরুল ইসলাম যায়েদ, মাওলানা শরীফ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. রুহুল আমীন, মাহবুবুর রহমান, আবদুল হান্নান প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, সম্রাট আকবরের দ্বীন-ই ইলাহী প্রবর্তনের মাধ্যমে ইসলামের বিধান অবজ্ঞা করে মহিলাদের পর্দাকে নিষিদ্ধ ও শূকরের মাংস হালাল করা হয়েছিল। প্রকাশনার শুরু থেকেই প্রথম আলোর ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে এর সম্পাদক মতিউর রহমান সম্রাট আকবরের দ্বীন-ই ইলাহী বাংলাদেশে পুনঃপ্রবর্তনের এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
বক্তারা আরো বলেন, একটি সালিসি বৈঠকের সিদ্ধান্তকে ফতোয়াবাজি আখ্যা দিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি 'ফতোয়াবাজি অব্যাহত, পুলিশকে সংবেদনশীল হতে হবে' শিরোনামে প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, 'বিবাহিত নারীর সঙ্গে পরপুরুষের মেলামেশা সহজভাবে দেখা হয় না। এর মূলে রয়েছে কুসংস্কার, সামাজিক অনগ্রসরতা, অশিক্ষা এবং সর্বোপরি নারীর প্রতি পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চিরায়ত বিদ্বেষ।' এ ছাড়া গত ২১ এপ্রিল প্রথম আলোর ১৩ পৃষ্ঠার অষ্টম কলামে 'স্বাস্থ্যবটিকা' শিরোনামে প্রকাশিত স্বাস্থ্যবিষয়ক টিপসে 'কাঁচা নোনা শূকরের মাংস রক্তপাতের নাকের ভেতরে ঢুকিয়ে আটকে রাখুন' বলে পরামর্শ দেওয়া হয় এবং লেখার সঙ্গে একজন টুপি পরিহিত ব্যক্তির ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করা হয়েছে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, এর আগে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে প্রথম আলোর রম্য ম্যাগাজিন আলপিনে মহানবী (সা.)-কে অবমাননা করে কার্টুন প্রকাশ করা হয়। এ জন্য প্রথম আলো সম্পাদক জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিবের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছিলেন। কিন্তু বারবারই পত্রিকাটি ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর সব নিবন্ধ, কার্টুন প্রকাশ করেই যাচ্ছে। এ থেকে প্রমাণিত হয়, পত্রিকাটি ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই নেমেছে।
গতকালের সভায় 'প্রথম আলোর ধর্মীয় আগ্রাসন প্রতিরোধ কমিটি' নামে একটি কমিটি গঠনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ডা. সাখাওয়াত হোসেনকে কো-অর্ডিনেটর ও অন্যদের সদস্য করে সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করা হয়।
কমিটির পক্ষ থেকে আজ শুক্রবার থেকে ইমানি দায়িত্ব পালনে প্রথম আলোর ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে দেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রথম আলোর ধর্মীয় আগ্রাসন প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে জনমত সৃষ্টি এবং প্রথম আলো ক্রয়, বিক্রয়, বিজ্ঞাপন প্রদান থেকে বিরত থাকতে গণসংযোগ চালানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়।
'প্রথম আলোর ইসলামবিরোধী চক্রান্ত রুখতে হবে'
এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এ টি এম হেমায়েত উদ্দীন বলেছেন, প্রথম আলোর ইসলামবিরোধী চক্রান্ত রুখতে হবে। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার স্বাস্থ্য বটিকায় স্বাস্থ্য সম্পর্কে টিপসে হারাম প্রাণীর মাংস নাকের মধ্যে দেওয়ার পরামর্শ এবং এর সঙ্গে টুপি-দাড়িওয়ালা ব্যক্তির কার্টুন ব্যবহার ইসলামের বিরুদ্ধে দুরভিসন্ধি। প্রথম আলো ইসলামের বিরুদ্ধে অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ করল। প্রথম আলো আবারও প্রমাণ করল তারা আসলেই ইসলাম ও হুজুরবিদ্বেষী। দেশের ইসলামপ্রিয় জনতাকে নিয়ে অবিলম্বে তাদের এই চক্রান্ত রুখতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

No comments

Powered by Blogger.